|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
পাঁচবিবিতে মিলাদ কিয়ামের বিষয়ে ফলাফলের প্রতিবাদে বাহাসের সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশের তারিখঃ ১৫ নভেম্বর, ২০২৩
জয়পু্রহাটের পাঁচবিবিতে আজ ১৫ ই নভেম্বর বুধবার বিকেলে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া খাতুনে জান্নাত(রা:) কওমী মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে মিলাদ কিয়ামের বিষয়ে পক্ষে বিপক্ষে বাহাসের অমীমাংসিত ফলাফলের প্রতিবাদ জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বাহাসের আয়োজক কমিটির আহবায়ক মাওঃ মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,গত ১১ নভেম্বর-২৩ ইং তারিখে জয়পুরহাট সদরে বড় তাজপুর মন্ডলপাড়া জামে মসজিদে একটি বাহাস অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বাহাসে প্রচলিত মিলাদ কিয়াম শরীয়তে তথা কুরআন হাদিসে আছে কিনা তা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে উভয় পক্ষ দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপন করেন। এই মিলাদ কিয়ামে পক্ষে মাওলানা শাহ আলম এর নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মাসুদুর রহমান, মুফতি ইব্রাহিম, মাওলানা নুরে আলম ও মাওলানা ইমরান এবং বিপক্ষে ছিলেন মাওলানা মহিউদ্দিন এর নেতৃত্বে মুফতি হাবিবুর রহমান,মুফতি বায়েজিদ, মুফতি মাসুদুর রহমান ও মাওলানা তাওফিকে ইলাহী।
উক্ত বাস অনুষ্ঠানে বিচারক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জামিল মাদ্রাসার মুফতি ও মোহাদ্দেস শফি কাসেমী ও জয়পুরহাট সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসার মাওলানা আব্দুল মতিন।বাহাস আলোচনার শুরুতে বিচারক মুফতি শফী কাসেমি সাহেব পক্ষ বিপক্ষের মুনাজিরগণকে (আলোচক) উদ্দেশ্য করে বলেন, হাদীসের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী আলোচনা শুরু করা উচিৎ। আর হাদীসের আলোকে যারা দাবিদার তারা দলিল দিবেন। আর যারা বিরোধী তারা সে দলিল অস্বীকার করবেন। অর্থাৎ তাদের দায়িত্ব হবে দাবি প্রমাণে দলিল সঠিক থাকলে তা মেনে নেওয়া আর ভুল থাকলে তা প্রমাণ করা।সে হিসেবে যারা প্রচলিত মিলাদ কিয়াম শরীয়তে আছে বলে দাবি করেন, তারা কুরআন হাদিস থেকে মিলাদ কিয়ামের দলিল দিবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টার দীর্ঘ বাহাসটিতে প্রচলিত মিলাদ কিয়ামের দাবিদারদের পক্ষের মুনাজির কুরআন হাদিস থেকে তাদের দাবি প্রমাণে একটি দলিলও পেশ করেননি, বা করতে পারেননি। বরং উল্টো তারা দাবি করতে থাকেন, আপনারা যে বলেন শরীয়তে প্রচলিত মিলাদ-কিয়াম নাই তার প্রমাণ দেখান।
এক পর্যায়ে মিলাদ কিয়াম পক্ষের মুনাজির জনাব শাহ আলম সাহেব ইমদাদুল ফতওয়া ও তাসাউফ তত্ব দুটি বই থেকে দুই একজন আলেমের বক্তব্য পেশ করে বাহাসটিকে আরো জগাখিচুড়ী করে তোলেন। আর বলেন, আমি মুজতাহিদ নই। আমি আমার দাবির কোনো দলিল দেইনি। আপনাদের মুরুব্বিদের লেখা পড়ে শুনিয়েছি। প্রচলিত মিলাদ কিয়াম বিরোধীদের কেহ আবার বলতে থাকেন, আমাদের মুরুব্বিরা যে মিলাদকে সাপোর্ট করেছেন সেটা আপনাদের এই প্রচলিত বিদআতযুক্ত ছিলো না। দীর্ঘ আলোচনা শেষে বিচারক মুফতি শফী কাসেমি সাহেব উভয়পক্ষের মুনাজিরগণ ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা প্রচলিত মিলাদ কিয়াম করেন তাদের দাবি হচ্ছে, এটা একটি জায়েয কাজ, যা শুধু তারা বৈধ মনে করেন; এর কোনো সওয়াব আছে তাও তারা মনে করেন না।এমতাবস্থায় তাদের দাবি যদি মেনেও নেয়া হয় তাহলে যে ভাবে কাজ করা নিয়ে সমাজের মধ্যে দলাদলি, মারামারি, বিশৃঙ্খলা ও অশান্তির সৃষ্টি হয়, তা না করলে কী হয়?এরপর তিনি শরীয়তের মূলনীতি বর্ণনা করেন, যে কোনো কাজ যদি শরীয়তে এক দলিলে বুঝা যায় সুন্নাত বা ওয়াজিব আর অন্য দলিলে বুঝা যায় বিদআত তাহলে সে কাজটি ছেড়ে দিতে হয়। এখন আপনারাই সিদ্ধান্ত নেবেন এ কাজটি করতে হবে, নাকি ছাড়তে হবে? এরপর অবশ্য মিলাদের পক্ষের মাওলানা আব্দুল মতিন ও অন্যান্যরা মাইক নিয়ে চিল্লাচিল্লি করতে থাকে তারা জিতে গেছে।আর রায়ের পরের চিল্লাচিল্লিকে এখন তারা নিজেদের বিজয়ের ঘোষণা বলে প্রচার করছে। প্রকৃতপক্ষে মিলাদ কিয়ামের পক্ষে বিপক্ষের কোন পক্ষই বিজয় লাভ করেনি। আমি এই মিথ্যা,বানোয়াট বিজয় ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বগুড়া জামিল মাদ্রাসার মুফতি শফিক কাছমী মোহাদ্দেস,একই মাদ্রাসার নাজমুল হক মোহাদ্দেস,জয়পুরহাট পাকারমাথা মাদ্রাসার মাও:আসাদুল্লাহ মুহতামিম, জয়পুরহাট বাগিচাপাড়া মাদ্রাসার মাওঃ শাহিন মুহতামিম ও পাঁচবিবি জামিল উলুম মাদ্রাসার মাওঃ জোবাইর মুহতামিম প্রমুখ।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.