|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
গোদাগাড়ী বিদিরপুর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসৎ আচরণ;দুর্ব্যবহার ও হয়রানির অভিযোগ
প্রকাশের তারিখঃ ৩০ অক্টোবর, ২০২৩
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলীর বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অধস্তন শিক্ষকদের প্রকাশ্যে তিরস্কার এবং কটূক্তির অভিযোগও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছেন তিনি। প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী নিজস্ব ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান মনে করে থাকেন। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘ সময় থেকে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থার। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত ১২ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শিক্ষক এবং এলাকাবাসী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আশরাফ আলী প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি প্রকাশ্যে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের সামনে সহকারী শিক্ষকদের চরম অপমানজনক কথা বলেন। শিক্ষকদের সব সময় মানসিকভাবে খাটো করেন। শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং অপমানজনক কথা বলেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের এ রকম আচরণ ও কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন,
প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলীর ইচ্ছার বা বিরুদ্ধে গেলে শুনতে হয় কটাক্ষ ভাষা।
রুনা লাইলা নামের একজন শিক্ষকের ছেলে দুরারোগ্য জিবিএস রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১ অক্টোবর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাাতালে মারা যান। এ পরিস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষক রুনা লাইলাকে সহযোগিতা না করে তার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন। তাকে মানসিক যন্ত্রণা দেন। অন্য শিক্ষকরা রুনা লাইলার পাশে দাঁড়ালে তাদেরকে নানাভাবে কটূক্তি এবং অসম্মান করেন।
অভিভাবকরা আরও বলেন, তিন মাস আগে নূরজাহান খাতুন নামের একজন শিক্ষকের আট বছরের শিশুর চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। এ কারণে ওই শিক্ষক প্রত্যয়নের জন্য প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেন। পরে অনেক হয়রানির পর প্রত্যয়নপত্র দেন প্রধান শিক্ষক। অধীনস্ত শিক্ষকদের পাওনা নৈমত্তিক ছুটি দেওয়ার ক্ষেত্রেও নানাভাবে অসহযোগিতা করেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে হয়রানির শিকার শিক্ষক এবং অভিভাবকরা স্থানীয় মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানার কাছে গত ১০ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দেন।
এ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে পরিদর্শনে গেলে আমার সামনেই প্রধান শিক্ষক তার অধীনস্ত শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এমনকি তিনি আমার সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন। প্রধান শিক্ষক দম্ভোক্তি করে বলেন, ‘আমার আইনে স্কুল চলবে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী বলেন, শিক্ষক, অভিভাবক এবং চেয়ারম্যানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নৈমিত্তিক ছুটির ব্যাপারে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটিও সঠিক না। আমি শুধুমাত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করি। শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের জন্য যেটি দরকার, সেটিই আমি করছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইদুল ইসলাম গোদাগাড়ীর সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলী হাসানকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলী হাসান বলেন, তদন্তের সময়ে আমাকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য এবং অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জেলা শিক্ষা অফিসার সাইদুল ইসলাম বলেন, তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.