|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বাংলাদেশের বিষয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না ভারত
প্রকাশের তারিখঃ ২০ অক্টোবর, ২০২৩
আ.লীগ বিএনপির দাবি মানতে রাজি না হওয়ায় দলটি নির্বাচন বয়কটের হুমকি দিয়েছিল।
সুজাতা সিং বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি করাতে ব্যর্থ হন।
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল বিএনপি।
তিনি তখন বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং জাতীয় পার্টির নেতা হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের কাছে যান। তিনি তাকে এই যুক্তি দেখান যে তার দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে, জামায়াত-ই-ইসলামির মতো মৌলবাদী দল ক্ষমতায় আসবে। যেখানে (আগের) নির্বাচনগুলোতে জামায়াত কদাচিৎ ৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল।
যুক্তিটি অদ্ভুত ছিল। কারণ, সুজাতার ঢাকা মিশনের মাত্র চার মাস আগেই বাংলাদেশের উচ্চ আদালত জামায়াতকে অবৈধ ঘোষণা করে বলেছিল যে দলটি দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যা (নির্বাচনী) প্রহসনে কিছু মর্যাদা যোগ করেছিল। প্রধান সব রাজনৈতিক দলের বয়কট করা ওই নির্বাচনে ১৫৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বী (৩০০ সদস্যের সংসদ) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি এবং অন্যান্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করেছিল। তবে, ২০১৪ সালের মতো, সেটিতেও ব্যাপকভাবে কারচুপি হয়েছিল।
পশ্চিমা শক্তিগুলো নির্বাচনী অনিয়ম ও সহিংসতাগুলো তদন্তের আহ্বান জানালেও, মোদি অবশ্য হাসিনাকে নির্বাচনে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানাতে টেলিফোন করেছিলেন। তাকে অভিনন্দন জানানো অন্য আরেকটি বড় দেশ ছিল চীন। পরপর আওয়ামী লীগ শাসনের প্রতি ভারতের সমর্থনের অন্তর্নিহিত কারণ নিরাপত্তা এবং কৌশলগত উদ্বেগ।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডোরের মাধ্যমে দেশের বাকি অংশের সাথে যুক্ত, যা কিনা ল্যান্ডলকড। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উক্ত অঞ্চলটিকে সমুদ্রে প্রবেশের সুযোগ দিতে পারে। উত্তর-পূর্ব অঞ্চল কয়েক দশক ধরেই বিদ্রোহ-বিপর্যস্ত এবং ভারত-বিরোধী বিদ্রোহী দলগুলো বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় বলে শোনা গেছে।
পরপর আওয়ামী লীগ সরকার বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতাদের ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে এবং ওই দলগুলো যাতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে কাজ করেছে। জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময়, রাজনৈতিকভাবে অস্থির এবং বিদ্রোহ-প্রবণ উত্তর-পূর্ব অঞ্চলকে শান্ত রাখার জন্য ভারতের জন্য তাই বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.