|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
মহালয়া কি এবং এই মহালয়ার ইতিহাসটাই বা কি?
প্রকাশের তারিখঃ ১৪ অক্টোবর, ২০২৩
কাশফুলের বনে হাওয়া লেগে ঢেউ খেলে যাচ্ছে
চারিদিকে পুজাপুজা গন্ধ।নীল আকাশের মাঝে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ ভেষে যাচ্ছে।আর তোবেশি বাকি নেই পুজোর,তাইনা।মহালয়ার দিন থেকেই তো শুরু হয়ে যায় পুজোর আনন্দটা।একটা একটা করে দিন পার হয় পুজোর দিকে এগোনোর জন্য।
মহালয়ার দিন ভোরে মহিষাসুরমদ্দিনীর কাহিনী
সবাইকে একেবারে মুগ্ধ করেদেয়।ভোরে রেডিও তে সেই গলা, যা না শুনে বাঙালির পুজো শুরু হয়না বিরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র। ছোটবেলায় মহালয়ার দিন ভোর থেকেই রেডিওতে মহালায়া এবং একটু পরেই টিভিতে দেখা ছিল এক আলাদা আনন্দের বিষয়। তবে আজও একটি আলাদা আনন্দ বহন করে। দুর্গাপুজোর আভাস মেলে মহিষাসুরমর্দিনীর এই বেতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। তাছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই দিনে রীতি নিয়ম মেনে দেবী দুর্গার চোখ আঁকা হয়। মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে বাণীকুমার (বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য) মার্কেন্ডেয়- চণ্ডীর বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে একটি চম্পু (গদ্যপদ্যময় কাব্য) রচনা করেন। ১৯৩০ সালে। নাম দেন ‘বসন্তেশ্বরী’। ১৯৩০ সালে বাসন্তী পুজোর ষষ্ঠীতে আকাশবাণীতে প্রচারিত। সংগীত সংযােজনা পঙ্কজকুমার মল্লিক, ভাষ্য ও স্তোেত্র পাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।
১৯৩১ সালে ‘বসন্তেশ্বরী’ রূপান্তরিত হয় ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-তে। এবং বাসন্তী পুজোর সময় এটি সম্প্রচারিত না করে ১৯৩১ সালের শরৎকালে দুর্গাষষ্ঠীতে আকাশবাণীতে সম্প্রচারিত করা হয়। আবার ১৯৩২ সালে দুর্গাষষ্ঠী থেকে সরিয়ে কয়েকদিন আগে মহালয়ার ভোরে সম্প্রচার করা হয়। উল্লেখ্য, শিল্পীদের নিয়ে বীরেন্দ্রকুষ্ণ ভদ্র আকাশবাণীতে এক সময় সরাসরি (Live) অনুষ্ঠান করেছেন। ১৯৩২ সাল থেকে মহালয়ার ভোরে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত টানা চুয়াল্লিশ বছর টানা সম্প্রচার হয়। ১৯৭৬ সালের ২৩ সপ্টেম্বর, ধ্যানেশনারায়ণ চক্রবর্তী রচিত, উত্তমকুমার, বসন্ত চৌধুরী-পার্থ ঘােষ কর্তৃক ভাষ্যপাঠ, শ্যামল গুপ্ত রচিত গান— লতা, আশা, হেমন্ত, সন্ধ্যা, মান্না- সর্বভারতীয় শিল্পী সমন্বিত অনুষ্ঠান ‘দেবীং দূর্গতিহারিণীম মহালয়ার ভোরে সম্প্রচারিত।
পরে শ্রোতাদের বিক্ষোভ এবং পত্রপত্রিকায় পাঠক ও বিদ্বজ্জনেরা সমালােচনা করায় ‘দেবীং দুর্গতি হারিণীম’ বন্ধ করে দিতে হয়। ওপর দিকে এই দিনটিকে হিন্দু মতে পিতৃপক্ষ বলা হয়। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পিতৃপক্ষের শেষ দিন হল মহালায়া । তবে এই কাহিনীর কোন কোন জায়গায় ইন্দ্রের বদলে যমরাজ কে দেখা যায়। তাছাড়া হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী জীবিত কোন ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃ লোকে বাস করেন। আর এই পিতৃলোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করে।
আর এই লোকের শাসক হলেন ম্ৃত্যুর দেবতা যমরাজ। তিনি সদ্যমৃত ব্যক্তির আত্মাকে পিতৃলোক এ নিয়ে যান। তাছাড়া দেবালয় এ অসুরদের অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দেবী দুর্গার আবির্ভাব হয়েছিল। মহিষাসুরমর্দিনী কিভাবে মহিষাসুর বধ করেছিলেন সেই ঘটনা এই দিনে তুলে ধরা হয়।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.