|| ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
জেলা প্রশাসকের তদারকিতে ১৫ দিন পর চলাচলের রাস্তা পেল অর্ধশত পরিবার
প্রকাশের তারিখঃ ১৪ আগস্ট, ২০২৩
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার হায়দারনগর গ্রাম। এই গ্রামে বসবাস করেন গাইবান্ধায় নদী ভাঙ্গনের শিকার অর্ধশত পরিবার। গ্রামটিতে চলাচলের জন্য ছিল একটি মাত্র পথ। কিন্তু দুই পরিবারের জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ১৫দিন ধরে বন্ধ ছিল রাস্তাটি। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছিল অর্ধশত পরিবার। বিষয়টি জানতে পেরে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ তাৎক্ষনিক পদক্ষেপের ফলে চলাচলের রাস্তাটি পুনরায় উন্মুক্ত হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদের নির্দেশে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহামুদুল হাসান চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে রাস্তাটি পুনরায় সচল করে দেন। এসময় ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইন চার্জ(ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ ও ৩নং সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ২০২০ সাল থেকে অদ্যাবধি গাইবান্ধার নদী ভাঙ্গনের শিকার অর্ধশত পরিবার ঘোড়াঘাট উপজেলার হায়দারনগরে জমে কিনে বাড়ী করে ভাঙ্গরীর ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। এই এলাকার তোজাম্মেল হক ও জুলফিকার আলীর কাছ থেকে তারা জমি কিনে নেন। জমি কেনার সময় তোজাম্মেল হক ও জুলফিকার আলী চলাচলের জন্য রাস্তার জমি ছেড়ে দেন। সম্প্রতি তোজাম্মেল হক ও জুলফিকার আলীর মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধের এক পর্যায়ে তোজাম্মেল হক গত ১৫ দিন পূর্বে অর্ধশত পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি সিমেন্টের খুঁটি, বাঁশ ও গাছের গুড়ি দিয়ে ব্যরিকেড দেয়। এতে অর্ধশত পরিবারের উপার্জনের মাধ্যমে ভ্যান নিয়ে বের হতে পারে নি। ১৫ দিন ধরে কর্মহীন হয়ে ছিলেন অর্ধশত পরিবার।
বিষয়টি জানতে পেরে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ তাৎক্ষনিক ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহামুদুল হাসানকে বিষয়টি সুরাহা করে চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন। রবিবার সন্ধ্যায় ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহামুদুল হাসান ওই গ্রামে গিয়ে উভয় পক্ষকে একসাথে বসিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে চলাচলের রাস্তাটি উন্মুক্ত করে দেন।
ভূক্তভোগী মরজিনা বেগম ও ভাংগাড়ী ব্যবসায়ী সিরাজুল বলেন, আমাদের চলাচলের জন্য এটিই এক মাত্র রাস্তা আর এই রাস্তা দিয়ে গত দুই সপ্তাহ যাবত আমরা চলাচল করতে পারিনি, অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। আমরা অনেকের কাছে গিয়েছি। সর্বশেষ জেলা প্রশাসনের লোকজন এবং আমাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাস্তা খুঁটি সরিয়ে দিয়ে গিয়েছে। এতে আমরা অনেক খুশি।
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী তোজাম্মেল বলেন, পাশ্ববর্তী আত্মীয়ের সাথে আমার জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে। তার জায়গার উপর থাকা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বাঁধা প্রদান করায় আমার জায়গার উপর থাকা রাস্তায় আমি খুঁটি পুতেছিলাম। প্রসাশনের লোকজন আমাদের উভয়ের সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন। তাই তাৎক্ষণিক আমি নিজেই রাস্তার উপর থেকে খুঁটি ও বাঁশ সরিয়ে নিয়েছি।
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা পাওয়ার পর তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় রাস্তাটি আবারো আগের মত চলাচল উপযোগী করেছি। তাদের মাঝে আরো কিছু ছোটখাটো ঝামেলা আছে নিজেদের জায়গা জমি নিয়ে। তা আগামী বুধবার সরকারী সার্ভেয়ারের দ্বারা মাপযোগের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করে দেয়া হবে।
এব্যাপারে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, অর্ধশত পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি ১৫দিন ধরে বন্ধ রয়েছে এমন খবর পাওয়ার পর আমি তাৎক্ষনিক ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশনা দিয়েছি। একই সাথে ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে বিষয়েও স্থায়ীভাবে সমাধান করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.