|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বিরামপুরে যমজ তিন ভাইবোনকে শুভেচ্ছা জানালেন উপজেলা প্রশাসন
প্রকাশের তারিখঃ ৪ আগস্ট, ২০২৩
এস এম মাসুদ রানা বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি- এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের যমজ তিন ভাইবোনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত তাসনীম আওন।
বুধবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে এ আয়োজন করা হয়। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে তাদের মিস্টিমুখ ও ফুলেল শুভেচছা দেওয়া হয়। তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শুভকামনার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়।
তিন ভাইবোন হলো লাসার সৌরভ মুরমু, মেরি মৌমিতা মুরমু ও মারথা জেনিভা মুরমু। তারা জোহানেশ মুরমু ও মা সোহাগিনী হাঁসদার সন্তান। তাদের বাড়ি উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামে। তিন ভাইবোন বিরামপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছে।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জোহানেশ মুরমু বেসরকারি একটি বেসরকারি সংস্থায় স্বল্প বেতনে চাকরি করেন। মা সোহাগিনী গৃহিণী। পরিবারে অভাব-অনটন আছে। দুই বোন জেনিভা ও মেরি মৌমিতা চায় চিকিৎসক হতে। একমাত্র ভাই লাসার সৌরভের ইচ্ছা প্রকৌশলী হওয়ার।
বিরামপুর উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে লাসার সৌরভ বলে, ‘মাধ্যমিকে এ প্লাস পেয়েছি। এইচএসসিতে এ ফলাফল ধরে রাখার চেষ্টা করব। প্রকৌশলী হয়ে দেশের সেবা করব, বাবা-মায়ের পরিশ্রম সার্থক করব।’
দারিদ্র্যকে জয় করার আনন্দ দুই বোন মেরি মৌমিতা ও মারথা জেনিভার চোখেমুখেও। চিকিৎসক হয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের সেবা করতে চায় তারা। তবে বাবার উপার্জনে পড়ালেখা ও অন্যান্য খরচ চালানো কষ্টকর। মৌমিতা বলে, ‘একটু সহযোগিতা পেলে আমরাও ভালো কিছু করতে পারব। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।’
উপজেলা প্রশাসনের সাক্ষাৎ পেয়ে খুশি জোহানেশ ও সোহাগিনী দম্পতি। জোহানেশ বলেন, একসঙ্গে তিন ছেলেমেয়ে পেয়েছেন। ছেলেমেয়েরা প্রত্যেকেই মেধাবী। এ পর্যন্ত তাদের পড়ালেখা শেখাতে কষ্ট করে যাচ্ছেন। মাঝেমধ্যে দুশ্চিন্তা হয়, ছেলেমেয়েদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন তো! বাড়িতে বৃদ্ধ মা আছেন। মোট ছয়জনের সংসার। স্বল্প বেতনে কোনোমতে দিন কাটছে। ভিটামাটিটুকু ছাড়া আর কিছু নেই তাঁর। ছেলেমেয়েদের ভালোমন্দ খাওয়াতেও পারেন না।
গত রোববার জেলা প্রশাসক খুশি হয়ে সহযোগিতা করেছেন। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ বহন করতে চেয়েছেন।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, গত শুক্রবার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখে যমজ তিন ভাইবোনের সাফল্যের কথা জানতে পারেন। নিজের কার্যালয়ে ডেকে তাদের কথা শুনেছেন, শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের পেছনে রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। সবাইকে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.