|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
পটুয়াখালীতে হত্যা মামলা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আসামিরা
প্রকাশের তারিখঃ ৯ জুলাই, ২০২৩
পটুয়াখালীতে সেই চাঞ্চল্যকর স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর কাছে মোবাইল কেনার টাকা চেয়ে ঝগড়ার পরেরদিন সকালেই স্ত্রী রুমা আক্তার (১৯) এর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। কিন্তু ঘটনা ঘটার পর থেকেই পলাতক হয়ে যান স্বামী আরাফাত ও ননদ আইমান। এতে থানা পুলিশ কোনও মামলা না নিলে আদালতে একটি মামলা এজাহার হয়ে থানায় আসলেও থানা পুলিশের অলৌকিক বলে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে আসামি স্বামী, ননদ সহ অন্যান্য আসামিরা। এতে ভুক্তভোগী পরিবার সহ এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত ৯ই জুন-২০২৩ ইং রোজ শুক্রবার সকালে পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের পল্লী বিদুৎ এলাকার বাবার বাসা থেকে এ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত স্ত্রী রুমা আক্তার উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের পাঠুখালী এলাকার আরাফাত মৃধার স্ত্রী এবং পল্লী বিদ্যূৎ এলাকার বাসিন্দা খোকন খাঁন এর মেয়ে।
এঘটনায় নিহত রুমা আক্তারের মা মরিয়ম বেগম বাদী হয়ে প্রথমে থানায় এজাহার করতে গেলে থানা পুলিশ সেই এজাহার নাকচ করে দেন। পরে তিনি বিজ্ঞ আদালতে ৮জন স্বাক্ষীর নাম উল্লেখ করে আসামি স্বামী আরাফাত মৃধা, ননদ আইমান আক্তার, শ্বশুর নিজাম মৃধা, শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেগম ও হাসিনা বেগমের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা এজাহার দায়ের করেন। যাহার মামলা এজাহার নং ২৬২/২০২৩, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ১১ (ক)/৩০ ধারা। সেই এজাহার থানায় আসলেও পুলিশ অলৌকিক কারণে আসামিদের গ্রেফতার করছেন না।
নিহত রুমার মা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ৮ই জুন রুমার এইচএসসি টেস্ট পরীক্ষা হবে তাই মঙ্গলবারই রুমা ও তার ননদ আইমান আমাদের বাড়িতে আসেন। পরে বুধবার আসেন জামাই আরাফাত মৃধা। আরাফাত আমাদের কাছে অনেক টাকা দাবি করে এবং ওই রাতে রুমার কাছে মোবাইল কেনার টাকা চেয়ে ঝগড়া করেন জামাই আরাফাত মৃধা। পরে রুমা আমাদের কাছে টাকার কথা জানালে আমাদের কাছে এখন টাকা নেই পরে দিবো বলে জানিয়ে দেয়। পরে ওই রাতে রুমাকে মারধর করে আরাফাত।
পরের দিন তাদের ৩জনকে বাসায় রেখে সকালে বাজারে যাই আমি। সকাল ১০টার দিকে জামাই আমার ফোনে কল দিয়ে বলে আমরা বাড়ি যাচ্ছি এবং আপনার মেয়ে আপনাদের বাড়িতেই আছে। তখন তাদের যেতে নিষেধ করি এবং বাসায় এসে দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে রুমা তাদের সাথে গেছে কিনা সেটা জিজ্ঞাসা করি। তখন জামাই বলে আপনার মেয়ে বাসায়ই আছে। পরে ঘরের দরজায় হাত দিলেই দরজা খুলে যায় ভেতরে প্রবেশ করলে রুমার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি বরং তাকে হত্যা করা হয়েছে। তাই থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিলে আদালতে মামলা এজাহার করেছি। কিন্তু সেই কাগজ থানায় আসলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেন না। তাই আমি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
নিহত রুমার বাবা খোকন খান বলেন, ওইদিন সকালে চা খেতে রাস্তায় যাই। পরে বাসায় এসে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। আমার মেয়ে আত্নহত্যা করেনি আমার মেয়েকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
ইউডি মামলার আইয়ূ এসআই বিপুল হালদার বলেন, আদালত থেকে একটা পিটিশন মামলা এজাহার করতে থানায় এসেছে তবে এখনো থানায় এজাহার রেকর্ড হয়নি। এজাহার হলেই আমরা আসামিদের গ্রেফতার করব।
পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, এব্যাপারে তদন্ত চলছে,সঠিক প্রমাণ পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.