পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলায় পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের দেয়া গাইবী বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বিপাকে পড়ছেন গ্রাহকরা।
বিদ্যুৎ বিলের কাগজে উল্লেখিত মিটার রিডিংয়ের সাথে প্রকৃতভাবে ব্যবহার করা মিটার রিডিংয়ের কোন মিল নেই। ফলে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের। এ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফিরোজ গাজী বলেন, ০৭.০৬.২৩ইং তারিখ রোজ বুধবার সকালে আমার কাছে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ নিয়ে আসেন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সহকারী মাসুম। এ সময় অতিরিক্ত বিলের বিষয়টি আমার নজরে আসে। আমার ছোট একটা মাছের আড়ৎ আছে, সেটা মাসের অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকে। তাই বৈদ্যুতিক ফ্যান ও বাতি জ্বালানোর প্রয়োজন হয় না। বিলের কাগজ হাতে পেয়ে মিটার রিডিংয়ের সাথে বিলের কাগজের ৩০ ইউনিট ব্যবধান দেখতে পাই।
একই অভিযোগ ওই ওয়ার্ডের মুছা ব্যাপারীরও। তিনি বলেন, আমার বিদ্যুৎ বিলের কাগজে লেখা শুন্য ইউনিট। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৩৭৮ টাকা। এটা একটা অসাধু চক্রের কাজ হতে পারে বলে আমি মনে করি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরওয়াডল গ্রামের আল আমিন বেপারী, নিজাম চৌকিদার, মোসলেম সিকদার, জামাল বেপারী, সবুজ জোমাদ্দার ও খোকন ফরাজীসহ শতাধিক গ্রাহকের মিটার রিডিংয়ে গড়মিল রয়েছে।
তারা আক্ষেপ করে বলেন, আমরা ছোট একটি দ্বীপে খেটে খাওয়া গরীব মানুষ। লেখাপড়া জানিনা বিধায় আমাদেরকে ধোকা দিয়ে এভাবে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে যাবে এমনটা কখনো ভাবিনি। দিন এবং রাতের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকেনা। প্রচন্ড তাপমাত্রা সহ্য করে অন্ধকারেই কাটাই আমরা। তারপরও এত টাকা বিল আসে কিভাবে?
দক্ষিণ চরওয়াডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আহসান হাবীব বলেন, বিদ্যুৎ অফিসের এমন অনিয়মের কারণ অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে কয়েক’শ পরিবারের। তিনি আরো বলেন, যখন দ্বীপে বিদ্যুৎ ছিলনা তখন আমরা ভালোই ছিলাম। দিনের অধিকাংশ সময়ই-তো বিদ্যুৎ থাকেনা, এখন বিদ্যুতের কারণে অনেকেই ফ্রিজ ব্যবহার করছেন। লোডশেডিংতো ঠিকই হচ্ছে তাহলে এতো বিল কিভাবে আসছে।
অফিস সহকারী মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমার কাজ চন্দ্রদ্বীপ এরিয়াতে মিটার রিডিং নেয়া এবং বাউফল অফিস থেকে বিল কাগজ প্রস্তুত হলে সেগুলাকে এনে প্রতিটি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আমি মিটার রিডিং দেখে সঠিক তথ্য অফিসে জমা দেই, বাকিটা অফিসের কাজ।
বাউফল পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের এজিএম প্রকৌশলী গগণ সাহা বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অনেক মিটার শুন্য অবস্থায় থাকে সেক্ষেত্রে নতুন মিটার প্রয়োজন। আমাদের কাছে মিটার নেই, থাকলে পরিবর্তন করে দিতাম, আমাদের কাছে কোনো মিটার নেই, যে কারণে ইচ্ছে থাকলেও পরিবর্তন করত পারছি না, তাই পরিবর্তন না করে প্রাক্কলোন বিল করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে একটু ত্রুটি হতে পারে।