কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় ওই হাজতিকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহার ও পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৩১ মে) বিকাল সাড়ে ৩ টায় এরশাদ কে ১৫১ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে (১ জুন) বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ।
নিহত হাজতির নাম একরামুল হোসেন এরশাদ (২৪)। তিনি ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারীয়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে। এলাকায় তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। তার নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন এলাকাবাসী বলেন, এরশাদ একজন মাদক ব্যবসায়ী, মাদকের সম্রাট, এমন কি সে ইয়াবা, হেরোইনসহ সকল প্রকার মাদক সেবনও করতো।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, হাজতি আসামির নামে ৭ টি মাদক মামলা রয়েছে। এরশাদ মাদক নিয়ে এসে পাইকারী ও খুচরা ২ ভাবেই বিক্রি করতো এলাকাবাসী এমন টিও জানায় প্রতিদিন তার বাড়িতে মাদক সেবন ও মাদক ক্রয়ের জন্য শত শত লোকের যাতায়াত থাকে। গোপন সুত্রে জানা যায়, প্রশাসন কে অবজারভেশন করার জন্য তার বাড়িতে ১ টি ওয়াস টাওয়ারও তৈরি করে রেখেছে। সে মারা যাওয়ায় কিছু টা হলেও এলাকায় মাদককারবারি কমে আসবে বলে এমনটা দাবি এলাকাবাসীর।
অপরদিকে মাদক ব্যবসায়ীর একটি গ্রুপ ভুরুঙ্গামারী থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানকে বাঁধাগ্রস্ত করতে পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীরা এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার, মিথ্যা মামলা করার ভয় দেখিয়ে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সুনাম নষ্ট করবে এই মর্মে বলাবলি করে আসছে।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউ পি সদস্য রিপন মিয়া জানান, গত ৬ মাস আগে ডাঃ জানিয়েছে এরশাদ নেশা করতে করতে তার ভিতরের অনেক অংশই নষ্ট হয়ে গেছে তাই হয়তো ৬ মাসের বেশি না বাঁচার সম্ভাবনা রয়েছে। হয়তো বা তার মৃত্যুর কারন এটি হতে পারে এমন টি ধারনা সকলের মনে।
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, এরশাদকে আটকের সময় সে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করে পড়ে গিয়ে আঘাত পায়। এজন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এবং আমরা জেনেছি সে অতিরিক্ত মাত্রায় নেশা করতো আর এই অতিরিক্ত নেশা করার কারনে ৬ মাস আগে অসুস্থ হয়ে পরেছিল। শুনেছি ডাঃ তখনই তাকে ৬ মাস সময় বেঁধে দিয়েছিল। তার মৃত্যুর কারন এমনটিও হতে পারে। পরে তাকে ১৫১ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জেলার আবু ছায়েম বলেন, ওই আসামিকে হাসপাতালের কাগজসহ কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। শনিবার দুপুরে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।