|| ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
পটুয়াখালীর বাউফলে তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই দ্রুত সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা- জেলা সিভিল সার্জন-DBO-news
প্রকাশের তারিখঃ ২ জুন, ২০২৩
পটুয়াখালীর জেলার বাউফল উপজেলার সেই আলোচিত মরণফাঁদ খ্যাত নামক সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অবশেষে তদন্ত শেষ পর্যায়ে বলেছেন পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডাঃ এসএম কবির হাচান।
এবং তিনি আরও বলেছেন তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তদন্ত রিপোর্ট অচিরেই হাতে পেয়ে যাবো।
শুক্রবার (২রা জুন) বিকেলের দিকে প্রতিবেদক পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এসএম কবির হাচানকে ফোন দিয়ে সেবা ক্লিনিকের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি একথা বলেন।
উল্লেখ্য: উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাহাদুর বয়াতির স্ত্রী আখিনুরকে প্রসবজনিত কারনে গত রোববার (১৪ই মে) বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত নার্স নরমাল ডেলিভারী করার উদ্যোগ নেন। এরই মধ্যে এক দালাল ও হাসপাতালের নার্স আখিনুর ও তার স্বজনকে ভয় দেখিয়ে দ্রুত সেবা ক্লিনিকে নিয়ে সিজার করার নির্দেশ দেন। ওই দিন সন্ধ্যার পর সেবা ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারে ডা. সোলায়মান নামের এক চিকিৎসক আখিনুরের সিজার করে একটি কন্যা সন্তানের জম্ম দেন।
দীর্ঘক্ষণ পরেও আখিনুরের জ্ঞান ফিরে না আসায় অপারেশন থিয়েটারে থাকা টিম নিশ্চিত হন তার মৃত্যু হয়েছে। পরে তড়িঘড়ি করে সেবা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অখিনুরের লাশ উন্নত চিকিৎসার নামে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এরই ফাঁকে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গা ঢাকা দেন। পরে আখিনুরকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা স্বজনদের জানান অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে সেবা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ একদিন ক্লিনিক বন্ধ রাখার পর অলৌকিক ক্ষমতার বলে প্রশাসন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মঙ্গলবার (১৬ই মে) সকাল থেকে পুনরায় ব্যবসা করার জন্য খুলে বসলে উপজেলা প্রশাসন দুপুরের দিকে অভিযান চালিয়ে জরিমানা সহ অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলগালা করে দেন।
গত বুধবার (২৪শে মে) দুপুরের দিকে পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কর্তৃক ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম তদন্ত করতে এসে প্রথমে সেবা ক্লিনিকে সার্চ চালান। এসময় ডেট ওভার ৫টি ইনজেকশন সহ ফ্রিজে রাখা গরুর পচা মাংশ ও মাছ পাওয়া যায়। তদন্ত পরিচালনা ও তদন্তকারী প্রধান ছিলেন ডাক্তার কেননং।
ডাক্তার কেননং প্রতিবেদককে এসময় বলেন, পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কর্তৃক ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে আমাকে প্রধান করে পাঠানো হয়েছে। তাই দুপুরের দিকে এসে প্রথমেই ওই অভিযুক্ত সেবা ক্লিনিকে ঢুকে অপারেশনের কাজে লাগা ৫টি ইনজেকশন সহ একাধিক ঔষধ ডেট ওভার পাওয়া গেছে। এবং ফ্রিজে থাকা মাংস পচা পাওয়া গেছে।
পরে বাউফল হাসপাতালে এসে নিহত আখিনুর বেগম এর স্বামী শ্বশুর ও মা বাবা সহ তার পরিবারের লোকজনকে তদন্তের স্বার্থে এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ কে খবর পূর্বক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু অপারেশন করা ডাক্তার আসেননি। তদন্তের ওপর ভিত্তি করে সিভিল সার্জন স্যার সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.