মানুষের ৫টি মৌলিক চাহিদা মধ্যে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা অন্যতম। আর সেই চিকিৎসা সেবায় যদি একজন অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) যদি প্রতিনিয়ত ডাক্তারের হয়ে জরুরী বিভাগে (ইমাজেন্সিতে) সেলাইসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা প্রদান করে তাহলে কি রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা পাবে? বলছিলাম মীরসরাই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (মস্তাননগর হাসপাতালের) কথা। এক সময়ের জীর্ণশীর্ণ মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও বাড়েনি চিকিৎসা সেবার মান। যার কারণে রোগীদের বাধ্য হয়ে ছুটতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে।
১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত মীরসরাই উপজেলা। প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের বসবাসের চিকিৎসা সেবা জন্য একমাত্র আস্থা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতাল। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে ছুটতে হয় উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষকে।
মস্তাননগর হাসপাতালে জরুরী বিভাগে (ইমাজেন্সিতে) প্রতিনিয়ত রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করছেন অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) আবু নাসের। অফিস সহায়ক যদি এভাবে স্বাস্থ্যসেবা দেয় প্রাপ্য চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার মানুষ ।
সুত্রে জানা যায়, মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (মস্তাননগর হাসপাতালে) জরুরী বিভাগে (ইমারজেন্সিতে) প্রতিনিয়ত রোগীদের সেলাইসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) আবু নাসের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান, প্রতিনিয়ত আবু নাসের জরুরী বিভাগে (ইমারজেন্সিতে) রোগী দেখে থাকেন। রোগী কিংবা রোগীর স্বজন কিছু বললে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করার পাশাপাশি টাকা দাবী করেন।
ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরৎ এলাকা থেকে আসা শাহাদাত হোসেন নামে একজন অভিযোগ বলেন, সরকারী হাসপাতালে পিয়ন যখন ডাক্তার হয়ে সেলাই করে। রোগীদের যদি কোন ইনফেকশন হয় এই দায়ভার কে নিবে?
পিয়ন হয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার বিষয়ে আবু নাছের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে লোকবলের অভাব বিধায় আমি সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি। রোগীদের কাছে টাকা চাওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি কোন টাকা দাবী করি না, বলি খুশি করি যা দেন। আর আমার স্যারেরা আমাকে জরুরী বিভাগের (ইমাজেন্সিতে) কাজ করতে বলছে বিদায় আমি কাজ করি। কোন স্যার থাকতে বলছে জানতে চাইলে তিনি আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) থাকতে বলেছেন বলে তিনি জানান।
এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ নাছির উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমএলএসএস চিকিৎসা সেবা প্রদান অনুমোদন নেই। যদি করে থাকে আপনারা লিখিত অভিযোগ করেন আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো। আপনার অনুমোতি নিয়ে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।
এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিনকে রবিবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি এবং উনার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও উনার মোবাইলে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিয়ন হয়ে চিকিৎসা সেবা করার কোন নিয়ম নেই। চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট। আর যদি করে থাকে আমি ব্যবস্থা নিবো।