চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র গার্মেন্টস শ্রমিকদের এটিএম কার্ড প্রতারণায় টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত একজন কে আত্মসাৎকৃত নগদ ১৫,০০০(পনের হাজার) টাকা সহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ১২এপ্রিল রাত অনুমান ৮টার সময় মোছাঃ বিলকিছ আক্তার(২২), জন্ম নিবন্ধন কার্ড ন-১৯৯৭১৯১৭২৮৭০২২০৫১, পিতা-আলী আক্কাস,সাং-৭৪ আতাকড়া, পোঃ রায় গোবিন্দপুর, উত্তরদা, কুমিল্লা, বর্তমানে-ব্যাংক কলোনী(আমির সাধু রোড)ইপিজেড,চট্টগ্রাম ।
আটক আসামি ইপিজেডের চৌধুরী মার্কেটের পাশে গ্রান্ড ব্রীজ ভবনের নিচ তলায় ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথে যায়। ঐসময় বুথের ভিতরে পূর্ব হতে উৎ পেতে থাকা জনৈকা মহিলা আসামী রেশমী বেগম প্রকাশ তুফান(৩৪), স্বামী-মোঃ ফারুক প্রকাশ রুবেল, পিতা-মৃত আবুল কাশেম, সাং- বড় বাজার(মোল্লাবাড়ী), থানা-বোরহান উদ্দিন, জেলা-ভোলা, বর্তমানে-ঈদগাহ বড় পুকুর থানা-পাহাড়তলী,চট্টগ্রাম(ভাসমান) দাঁড়ানো ছিল।
ঐসময় মহিলা ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের কার্ড ও পাসওয়ার্ড নাম্বার তাকে বলে দিলে সে টাকা উত্তোলন করে দিতে পারবে। জনৈক মহিলা বাদীনির নিকট থেকে কার্ড নিয়ে নিজে বুথের ভিতর কার্ডটি প্রবেশ করায়। তখন জনৈকা মহিলা তাহার কার্ডটি বুথের ভিতরে প্রবেশ করিয়া কোন টাকা উত্তোলন না করে কার্ডটি বুথ থেকে বের করে তাহাকে জানায় ইন্টারনেটের সমস্যার কারণে টাকা বের হচ্ছে না। জনৈকা মহিলা বাদীনিকে পুনরায় চেষ্টা করতে বলে একটি কার্ড হাতে দিয়ে বুথ থেকে চলে যায়। জনৈক মহিলা চলে যাওয়ার পর বাদীনি টাকা উত্তোলন করার জন্য পুনরায় বুথে কার্ডটি প্রবেশ করিয়ে তাহার ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড দিলে ভুল পাসওয়ার্ড বলে কার্ডটি লক হয়ে যায়। বাদীনি টাকা উত্তোলন করতে না পেরে বুথ থেকে বের হলে ঐদিন অনুমান ১০ মিনিট পর তাহার ব্যবহৃত মোবাইলে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক হতে টাকা উত্তোলনের তিনটি ম্যাসেজ আসে। উক্ত ম্যাসেজের মধ্যে ১ম ম্যাসেজে ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা, ২য় ম্যাসেজে ৪,০০০/-(চার হাজার) এবং ৩য় ম্যাসেজে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ইহাতে বাদীনির ধারণা হয় যে, সে চৌধুরী মার্কেটের পাশে গ্রান্ড ব্রীজ ভবনের নিচ তলায় ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথে টাকা উত্তোলন করার সময় তাহার পাশে থাকা জনৈকা মহিলা বাদীনির কার্ডের পাসওয়াড আয়ত্ব করে।বাদীনি মোবাইলে ম্যাসেজ পেয়ে কান্নাকাটি করে এবং ঘটনার বিষয়টি টহল পুলিশকে অবহিত করে। টহল পুলিশ উক্ত ঘটনার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার কথা বলেন।
বাদীনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ায় ঐদিন থানায় অভিযোগ করে নাই। পরের দিন অর্থাৎ ১৩/০৪/২০২৩ইং তারিখ বাদীনি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে গিয়ে তাহার কার্ড হতে টাকা উত্তোলন ও কার্ড লক হয়ে যাওয়ার বিষয়ে অবহিত করিলে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক হতে বাদীনিকে জানায় ,তাহার কার্ড ব্যবহার করে অত্র থানাধীন ২নং মাইলের মাথা ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে ১ম বারে ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা, ২য় বারে ৪,০০০/-(চার হাজার) এবং ৩য় বারে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকাসহ সর্বমোট ২৪,৫০০/-(চব্বিশ হাজার পাঁচশত) টাকা উত্তোলন করে।
গত ১৪/০৪/২০২৩ইং তারিখ বিবাদী পূর্বের ন্যায় অত্র থানাধীন চৌধুরী মার্কেটের পাশে গ্রান্ড ব্রীজ ভবনের নিচ তলায় ডাচ্ বাংলা ব্যাংক এটিএম বুথের পাশে সন্দেহজনকভাবে ঘুরাফেরাকরাকালে টহল পুলিশ তাকে সন্দেহ জনক ভাবে টহল পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আটকের সংবাদ পেয়ে থানায় এসে বিবাদীকে সনাক্ত করে এবং ধৃত বিবাদীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত ছিল মর্মে সত্যতা স্বীকার করে।
সে গার্মেন্টস কর্মীদের টার্গেট করে ইপিজেড-পতেংগা ও বন্দর এলাকায় বিভিন্ন এটিএম বুথের সামনে অপেক্ষায় থেকে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণার মাধ্যমে টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করে আসছে বলে জানায়।
বিবাদী ও তাহার সহযোগী অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন বিবাদী পরস্পর যোগসাজসে বাদীনির সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে বাদীনির সাথে প্রতারণামূলকভাবে তাহার কার্ডের পাসওয়ার্ড মুখস্থ করে তাহার কার্ড দিয়ে গত ১২/০৪/২০২৩ইং তারিখ রাত অনুমান ০৮.১০ ঘটিকায় অত্র থানাধীন ২নং মাইলের মাথা ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে ১ম বারে ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা, ২য় বারে ৪,০০০/-(চার হাজার) এবং ৩য় বারে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকাসহ সর্বমোট ২৪,৫০০/-(চব্বিশ হাজার পাঁচশত) টাকা উত্তোলন করিয়া আত্মসাৎ করেছে।
এই সংক্রান্তে ইপিজেড থানার মামলা নং-১১,তাং১৫/০৪/২০২৩ইং, ধারা-৪০৬/৪২০/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়েছে।ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল করিম। তিনি আরো জানান, এই সংক্রান্ত অন্যান্য অভিযুক্ত আসামিদের ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।