|| ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
আজ চিত্রনায়ক মুন্নার জন্মদিন
প্রকাশের তারিখঃ ২৫ মার্চ, ২০২৩
সিনেমার কথা উঠতেই সংকটের কথা চলে আসে সবার আগে। এ বাজারে স্বস্তির নিঃশ্বাস কেউ-ই ফেলতে পারছেন না। লগ্নি উঠিয়ে আনার মতো প্রেক্ষাগৃহও নাই, ফলে কোটি টাকা বাজেটের সিনেমার নির্মাণ মানে জেনেশুনে টাকা জলে ফেলা। তবে সিনেমার নির্মাণ যে শেষ কথা নয়, পাশাপাশি এটা যে পূঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় বাজারজাতকরণের একটা বিষয় থাকে সেটা সূক্ষ্মভাবে জানিয়ে নিজের উন্নতির গ্রাফটা অনেক উঁচুতে নিয়ে গেলেন চিত্রনায়ক মুন্না।
শাকিব খানের যে গ্রহণযোগ্যতা সেটা ব্যক্তিগত পাপাচারের কারণে এখন অনেকটাই তলানিতে। ফলে একক নায়ক হিসেবে মুন্না নিজেকে নিয়ে চড়া গলায় কিছু বললে মেনে নিতেই হয়।
যে চ্যালেঞ্জ ‘ভাগ্য’ সিনেমা মুক্তির আগে দিয়েছিলেন ‘শাকিবের পর আমার দর্শক বেশি’। শিরোনামটি নিয়ে তখন বেশ হইচই পড়লে আরো কৌশলী হয়ে ছবিটি নিয়ে দর্শকের কাছে যাবার পথে হাঁটেন। তিনি ভাগ্য দিয়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির ভাগ্য বদলে দেবার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। সে কথার প্রতিফলনও দেখা গেছে ‘ভাগ্য’ স্টেশনগুলোতে। প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের বক্তব্য ‘পরাণ’ ও হাওয়া’র পর ‘ভাগ্য’ আমাদের মুখের হাসি ফুটিয়েছে। টানা তিন সপ্তাহ এ ধারা স্বস্তি এনেছিলো। নায়ক ও পরিচালক মুন্না লগ্নিকৃত অর্থ মুনাফাসহ ঘরে তুলেছেন। আজ ২৫ মার্চ এই অভিনেতার জন্মদিন। ইন্ডাস্ট্রির জন্য পয়োমন্ত এমন নায়কের জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
এরআগে এই অভিনেতা ‘ধূসর কুয়াশা’-তে অভিনয় করেছিলেন। তার কো-আর্টিস্ট ছিলেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। নবাগত হিসেবে কিছুটা এলোমেলো হলেও ‘ভাগ্য’ নির্মাণ এবং বাজারজাত দুটোতেই নতুনত্বের পরিচয় দিয়েছেন। প্রেক্ষৃগৃহ মালিকরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তার ভাষায়- সিনেমা বাজারজাতকরণে কৌশলী না হলে বানিয়ে ডিস্ট্রিবিউটরের দরজায় ঘুরতে হবে। তাই মার্কেটিং পলিসি গুরুত্বপূর্ণ।
এক প্রশ্নের জবাবে এই অভিনেতা জানিয়েছেন- সংকটে তারকা অভিনেতাদের পাশে থাকতে হয়। আমার সুবিধা হচ্ছে আমি বিরাট তারকা নই, তাই চাপও নেই। তবে দায় আছে। সে দায় আমার নির্দিষ্ট ভক্তদের জন্য। আর সে কারণেই ঝুঁকি জেনেও ‘ভাগ্য’ মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
এদিকে সংকটকালে সিনেমা মুক্তি দিয়ে লগ্নি ফেরতের কারণে ইন্ডাস্ট্রি তাকে দেখছেন ‘বন্ধুজন’ হিসেবে। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন সংকটে সিনেমা মুক্তির ঝুঁকি নিচ্ছেন তারাই সময়ের স্টার। কারণ প্রেক্ষাগৃহ বাঁচাতে হবে, নইলে মাধ্যমটি ভিনদেশী সংস্কৃতির আজ্ঞাবহ হয়ে যাবে। সেদিক বিবেচনায় সংকটের বাজারে ‘তারকা’ হয়ে উঠেছেন চিত্রনায়ক মুন্না। তথাকথিত তারকাদের আড়ালে সুঁচারুভাবে নিজের কাজে মনোযোগী এক চলচ্চিত্র যোদ্ধা। সম্প্রতি এক সাকসেস পার্টিতে ঘোষণা দিলেন নতুন সিনেমার। চিত্রনাট্যের কাজও চলমান। নাম ‘সুখ’। তবে এবার নিপুণের বাইরে অন্যকারো সঙ্গে দেখা যাবে-এমনটাই জানিয়েছেন মুন্না।
তারকা’খ্যাতি না থাকলেও কেন তার সিনেমা দর্শক দেখেন এমন প্রশ্নের খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা গেছে- সংকটের মাঝে কোনো তারকা অভিনেতা বা বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলো তাদের সিনেমা ছাড়তে যেখানে ভয় পাচ্ছিলেন সেখানে দর্শকের প্রতি পূর্ণ আস্থা নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির ভাগ্য বদলাতে ঝুঁকি নেন ‘ভাগ্য’ মুক্তিতে। দর্শকও তার প্রতিদান দেন দু-হাত ভরে। ফলে বহুদিন পর হলে সিটি বাজতেও দেখা গেছে!! আর এটাই সিনেমা, যেখানে সাধারণ কাউকে তারকা বানিয়ে দেন দর্শক।
মুন্না সে জায়গাটি দখল করে চলচ্চিত্রের বন্ধু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ব্যাপারটা জুলিয়াস সিজারের সেই বিখ্যাত বাণীর মতো- ‘এলাম দেখলাম জয় করলাম’ এমন। ইন্ডাস্ট্রিতে তার অবস্থান তারকাদের তুল্য না হলেও সংকটে পণ্য বাজারজাত করার কৌশল তাকে করেছে নিরাপদ।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.