|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
মীরসরাইয়ে প্রবাসী স্বামীকে পরিকল্পিত হত্যার জবানবন্দি দিয়েছে স্ত্রী
প্রকাশের তারিখঃ ২৪ মার্চ, ২০২৩
মীরসরাইয়ে পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রবাস ফেরত স্বামী এমদাদুল হককে (৪৮) পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ঘাতক স্ত্রী নারগিস মোস্তারি (৪০)। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জিহান সানজিদার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন নারগিস ও ভাড়াটে খুনী আইয়ুব নবী। নিহত এমদাদুল হক উপজেলার ১৫ নং ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়াহেদপুর গ্রামের ফরাজি বাড়ির মৃ-ত মনছুর আহম্মদের পুত্র।
এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত এমদাদের ছোট ভাই কামলা পাশা বাদী হয়ে বুধবার রাতে নারগিস মোস্তারি (৪০) ও আইয়ুব নবীকে (২২) আসামী করে মিরসরাই থানায় একটি হ-ত্যা মামলা (নং ১৩) দায়ের করেন। নারগিস সাহেরখালী ইউনিয়নের মধ্যম সাহেরখালী গ্রামের আলা মিয়া চৌধুরী বাড়ির আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে। আইয়ুব নবী একই বাড়ির নিজাম উদ্দিনের ছেলে। সে পেশায় দিনমজুর।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দীতে এমদাদের স্ত্রী নারগিস জানান, ২০০৪ সালে এমদাদের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী প্রবাসে থাকতেন। প্রবাসে থাকাকালীন ঠিকমতো টাকা পয়সা দিতো না, অনেক কষ্ট দিতো। এরমধ্যে তাদের দুইটি সন্তারে জন্ম হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে স্বামী একেবারে দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পরও ঠিকভাবে টাকা পয়সা খরচ করতো না। এনিয়ে আমার স্বামীর সাথে প্রায়ই ঝগড়া হতো। তার আচরণে আমি অতিষ্ঠ হয়ে মে-রে ফেলার মনস্থির করেছি। এরপর বিষয়টি আমাদের বাড়ির কাজের লোক আইয়ুব নবীকে বলি। সে প্রথমে রাজি না হলেও পরে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে আমার স্বামীকে খু-ন করতে রাজি হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার ৩ দিন আগে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি ওয়াহেদপুরে চলে আসি। আসার সময় সাহেরখালী ভোরের বাজারের একটি ফার্মেসী থেকে ঘুমের ঔষধ ক্রয় করে সাথে নিয়ে আসি। আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২১ মার্চ) আছরের পর রান্না করা সেমাইয়ের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে দিই। সেমাই খেয়ে আমার স্বামী অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর আইয়ুব নবীকে ফোন করে বাড়িতে আসতে বলি। সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে সে আমার ঘরে আসে। তখন আমার স্বামীর জ্ঞান ফিরে আসে। তখন তাকে বলি ডাক্তার এসেছে, তোমাকে চিকিৎসা করতে। এরপর আমি এক হাত চেপে ধরি, আইয়ুব নবী আরেক হাতে জিআই তার পেছিয়ে মাল্টিফ্লাগ থেকে সংযোগ দিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মৃ-ত্যু নিশ্চিত করে। এরপর মাল্টিফ্লাগ পাশের পুকুরে ফেলে দিয়েছি।
জবানবন্দীতে নারগিস আরো বলেন, মারা যাওয়ার পর আমার স্বামীর মানিব্যাগ থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে আইয়ুব নবীকে ভাড়ার জন্য দিই। এরপর রাতে সে চলে যায়। পরবর্তীতে রাত ২ টায় আমার দেবর কামাল পাশাকে ফোন করে তার ভাই বিদ্যুৎপৃষ্টে মারা গেছে বলে বিষয়টি জানাই।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.