যুক্তরাস্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ পরিবারের উদ্যোগে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি সেন্টারে ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, ১৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবস এবং ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।খবর বাপসনিঊজ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের অন্যতম উপদেষ্টা রমেশ চন্দ্র নাথ। অনুষ্ঠান সন্চালনায় ছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুমানা আখতার।
অতিথিবৃন্দের আসনগ্রহনের পর অসূস্থ্য আওয়ামী লীগ নেতা কায়কোবাদ খাঁনের সহধর্মিনী, সিরাজুল ইসলাম সরকার ও অন্যান্যদের জন্যে আশু রোগমুক্তি কামনা করা হয়। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান, একাত্তুরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বৈরাচারী জিয়া-এরশাদের বিরুদ্ধে গনঅভ্যূত্থান, পঁচাত্তরের পনরই আগস্ট, তেসরা নভেম্বরের জেলহত্যা, ২০০৪ এর একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এরপর জাতীয় সঙ্গীত ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিবস উপলক্ষে কেঁক কেটে জাতীয় শিশুদিবস উদযাপন করা হয়।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রন্জন কর ,সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মো: ফজলুর রহমান ,অধ্যাপক হোসনে আরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা উলফাৎ আলী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক প্রকৌ: মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ,আইনবিষয়ক সম্পাদক, এ্যাড. শাহ মো: বখতিয়ার জালাল উদ্দিন জলিল – সভাপতি শেখ হাসিনা মন্চ, আখতার হোসেন – আওয়ামী লীগ নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হাসান, এ্যাড. আলী আফজাল – আওয়ামী লীগ নেতা, খন্দকার জাহিদুল ইসলাম – সভাপতি নিউইয়র্ক স্টেট যুবলীগ, শহিদুল ইসলাম – সভাপতি নিউইয়র্ক স্টেট ছাত্রলীগ, রণী দেওয়ান- ছাত্রলীগ নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনির হোসেন, সেলিম ভূইয়া, ফাতিন শাহ প্রমুখ।
ড. প্রদীপ কর কার বক্তব্যে বলেন, আলেকজান্ডার দি গ্রেট যেমন বিশ্ব জয় করে নামের শেষে গ্রেট উপাধী পেয়েছিলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুও একটি শোষিত-বন্চিত জাতীকে মুক্তির স্বাদ দিয়েছিলেন তার সারা জীবনের ত্যাগ স্বীকার করে। সুতরাং তাকেও বঙ্গবন্ধু দি গ্রেট উপাধীতে ভূষিত করলে তার প্রাপ্য সন্মান প্রদর্শণ করা হয়।
অধ্যাপক হোসনে আরা তার বক্তব্যে অগ্নিঝরা মার্চের ঐতিহাসিক দিনসমূহের পাশাপাশি ৮ই মার্চ বিশ্ব নারী দিবসকেও আলোচনায় রাখার দাবী জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দুই লক্ষাধিক বিরাঙ্গনা নারীদেরকে তার কন্যাসম মর্যাদায় ৩২ নম্বরের বাড়ীর ঠিকানা ব্যাবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মো: ফজলুর রহমান বলেন, মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের তৎকালীন সরকার বর্বর পাকিস্তানী বাহিনীর গনহত্যাকে সমর্থন করে ডিসেম্বর মাসে ৭ম নৌবহর পাঠিয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেটো প্রয়োগের ফলে এবং ভারতের ইন্দিরা গান্ধীর সরকার সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ফলে মাত্র নয় মাসে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। অন্যথায় কত যুগ যুগ ধরে এ যুদ্ধ চলত এবং আরও কত প্রাণহানী ঘটত তার ইয়াত্তা নাই।
প্রকৌ: মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী তার বক্তব্যে বলেন, ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমগ্র পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানা শুরু করে। ৩রা মার্চের আহুত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ১ তারিখে স্থগিত ঘোষণা করার সাথ সাথে বিজয়ী বাঙালী জাতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সারাদেশে দাবানলের মত ফূঁসে ওঠে। শুরু হয় অসহোযোগ আন্দোলন। পূর্ব পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সকল কিছু পরিচালিত হতে থাকে। ভেঙে পড়ে সরকার ব্যাবস্থা। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দশ লক্ষাধীক মানুষের সামনে বাঙালীর একমাত্র বৈধ নেতা বঙ্গবন্ধু ঘোষনা করেন “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। গনতন্ত্রের সূতিকীগার যুক্তরাস্ট সরকার গনরায়ের প্রতি শ্রদ্ধা না জানিয়ে গনহত্যায় সমর্থন দেয় ও অস্ত্র সরবরাহ করে। আজ সেই যুক্তরাস্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ফ্রি ফেয়ার ক্রেডিবল ও অংশগ্রহনমূলক হওয়ার জন্যে প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশে ছুটে যায় ও বড় বড় লেকচার দেয়। সারা বিশ্বে অগনতান্ত্রীক সরকারকে মদত দেয়ার জন্যে যুক্তরাস্ট্র সর্বত্র আলোচিত ও ঘৃনিত।
পরে শিল্পী শাহরীণ সূলতানা, রুমানা আখতার, এ্যাড. আলী আফজাল সমবেত কন্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করে তবলা সংগত করেন বিলকিস বেগম। নৈশভোজের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষিত হয়।