|| ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
রমজানে মতলব উত্তরে লেংটার মেলা নামক বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা বন্ধ চায় এলাকাবাসী
প্রকাশের তারিখঃ ২৩ মার্চ, ২০২৩
মোঃ আতাউর রহমান সরকার(মতলব)চাঁদপুর:
প্রতি বছরই চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বদরপুর (বেলতলী) গ্রামে শাহ্সূফী সোলেমান লেংটার মাজারে ৭ দিনব্যাপী ওরশ উপলক্ষে মেলার আয়োজন করে মাজার কমিটি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তেমনি প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিটি। মাজার কমিটির খাদেম মতিউর রহমান লাল মিয়াসহ আশপাশের লোকদের কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। পাগল ও নেশাখোররা আস্তানা গেড়ে বসেছে। চলছে চাঁদাবাজি, জুয়া, ছিনতাই, অশ্লীলতা,অবাধে মাদক বিক্রি ও সেবন। তাই এর প্রতিকার চায় সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লেংটার মেলা বন্ধের দাবি জানিয়েছে অনেকেই।
প্রতি বছর চৈত্র মাসের ১৭ তারিখের মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থানসহ পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে প্রতিদিন ১০/১২ লক্ষাধিক ভক্ত, আশেকান ও সাধারণ জনগণ আসা যাওয়া করেন। ওরশকে কেন্দ্র করে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে মেলায় বসেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভক্তদের আস্তানা। কেউ কেউ মাদক ও অশ্লীলতার মাঝে নিজেকে ডুবিয়ে রাখে।
সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, মাজারের আয়ের কোটি কোটি টাকা যায় কোথায়! জানা যায়, ৭ দিনের এ মেলায় আগত দোকান থেকে অনুপাতে ২ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। মাজারে মানতে দেয়া হচ্ছে গরু, ছাগল, নগদ অর্থ, আগরবাতি ও মোমবাতি। মাজারে প্রতিদিন উঠছে লাখ লাখ টাকা। সবমিলে এখানে বাণিজ্য হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা। এ টাকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। এ টাকায় অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনছেন। সারা বছর এ মাজারটি অর্থ পাওয়ার সেক্টরে পরিণত হয়েছে। এ টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ ও মামলা হয়েছে। মাজারের টাকা ভাগাভাগি করে খেয়ে ফেলা হয়। অনেকে বলেন, মাজার কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় যে তারা ভাগাভাগি করে খেয়ে ফেলবে। মাজারের অর্থ ও মাজারের উন্নয়ন বিষয়ে সরকারি নজরদারি প্রয়োজন এবং মাজারের সার্বিক ব্যবস্থাপনা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো এখানে হতে যাচ্ছে মাদক বিক্রি, সেবন ও অশ্লীলতা। মেলা শুরুর আগেই নেশাখোররা মাজারের চারপাশে ৫ শতাধিক আস্তানা গেড়ে বসেছে। জানা যায়, সকল প্রকার মাদকদ্রব্যই পাওয়া যায় এ মেলায়। নেশাখোরদের দেখলেই মনে হয় মেলা প্রাঙ্গণ। দেখলে মনে হয় যেনো নেশার স্বর্গরাজ্য । দলে দলে আস্তানা বেঁধে সেবন করছে মাদকদ্রব্য। মেলা প্রাঙ্গণের বাতাসে বইছে গাঁজার গন্ধ। পুলিশ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গেলেও মনে হয় অবস্থার প্রেক্ষিতে নিরুৎসাহিত।
রাস্তার বিভিন্ন স্থানে যানবাহন থামিয়ে করা হয় চাঁদাবাজি। সাদুল্লাপুর মোড় থেকে বেলতলি বেড়িবাঁধ পর্যন্ত ৩/৪ স্থানে যানবাহন থেকে টাকা তোলা হয়। মেলা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন ব্যানারে জুয়া খেলা হয়। এ ব্যাপারে মেলার সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সাথে কথা বল্লে তারা চাঁদাবাজি ও জুয়ার ব্যাপারটি অস্বীকার করেন।
মেলায় সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ও মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকলেও তা অপর্যাপ্ত।
তবে গত বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বন্ধের জন্য অভিযোগ পেয়ে উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় রমজানের প্রথম দিকেই মেলা বন্ধ ঘোষণা করেন। তাই এলাকাবাসীর দাবি যেহেতু এবার পুরু মেলাই রমজানে পড়েছে পবিত্র মাহে-রমজানের সম্মানে এবার ও এই বেহাপনা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.