|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বাউফলে আ:লীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষ, ওসি সহ আহত-২৫
প্রকাশের তারিখঃ ১৮ মার্চ, ২০২৩
পটুয়াখালী জেলা বাউফল উপজেলা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের আনন্দ র্যালীকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ ও পুলিশের ত্রিমুখী সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার, বাউফল থানার ওসি আল-মামুনসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে।শুক্রবার (১০ মার্চ) বাউফল হাই স্কুল মাঠ থেকে আনন্দ র্যালীটি শুরু হয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে পৌছলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার গ্রুপ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আসম ফিরোজ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ সংঘটিত হয়। এতে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ বাধে।ঘটনার পরে গুরুতর জখম অবস্থায় উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার কে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর ১০৩ তম জম্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্য উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আসম ফিরোজ ও দলের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার একই সময়ে একই স্থানে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেই দুদিন আগ থেকেই দু'গ্রুপের মধ্যে থমথমে বিরাজ করছিল। এবিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আল আমিন বলেন, দু'পক্ষের মধ্যেই উত্তেজনা বিরাজ ছিল। দু'পক্ষকেই শান্ত রাখার জন্য আমরা ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছি।
বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে লাঠি চার্জ করা হয়। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় বিশ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এতে আমি সহ পুলিশের আরও ৫-৬ জন সদস্য আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছেবসউফলে বঙ্গবন্ধুর ২০৩তম জন্ম বার্ষিকীর আনন্দ মিছিলে হামলা পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলায় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্ম বার্ষিক ও শিশু কিশোর দিবস উপলক্ষে ১৭.০৩.২৩ইং তারিখ রোজ শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার ও ৯ পুলিশসহ কমপক্ষে ২১ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।উপজেলা যুবলীগের নেতা অরিবিন্ধু জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি আনন্দ মিছিল আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় পুলিশ উপজেলা পরিষদের গেইটের সামনে বাধা দেয়। এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতি আসম ফিরোজ এমপির ভাইর ছেলে যুবলীগ সভাপতি ফয়সাল আহম্মেদ মনির মোল্লার নেতৃত্বে কয়েকশ নেতাকর্মী এসে তাদের উপর হামলা করে। এতে আবদুল মোতালেব হাওলাদারসহ তার অনুসারি গৌতম দাস, অমল চন্দ্র দাস, জাহিদ বক্স, রাজিব, জলিল, পলাশ, রাজা মিয়া, হাসান, বেল্লাল, রিপন, ইমরান গুরুত আহত হন।
এসময় পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ ৮-১০ রাউন্ট রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের ওসি আলম মামুন, এসআই মনিরুজ্জামান, এসআই হুমায়ন কবির, এসআই আবুল বশার, এস আই আবুল হাসান, এএসআই শাহিন, কনেস্টবল রাহাত, কনেস্টবল ইত্তি, কনেস্টবল রবিউল আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের হাতে, পেটে ও পায়ে গুরুতর জখম হয়েছে। তাকেসহ তার কয়েক অনুসারিকে উদ্ধার করে প্রথমে বাউফল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তাদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। শহরের থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এঘটায় শহরে প্রায় এক ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দুপুর ১২টার দিকে আসম ফিরোজ এমপির নেতৃত্বে একটি বিশাল আনন্দ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে। উল্লেখ, বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি আসম ফিরোজ এমপি, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল আলাদা আলাদা কর্মসূচীর ঘোষনা করেন।
এর মধ্যে আসম ফিরোজ এমপি ও আবদুল মোতালেব হাওলাদার একই স্থানে আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবনে কর্মসূচী ঘোষনা করে। এর পর থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।বাউফলের ইউএনও বলেন, ‘দুই পক্ষকেই সহ অবস্থানের অনুরোধ করা হয়েছিল। তারা আমাকে কথাও দিয়েছিলেন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবেন। কিন্তু তারা কথা রাখেননি। আমি হাতজোড় করে তাদেরকে অনুরোধ করেছি। তারা আমার কথা শুনেননি।’বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, ‘এ কর্মসূচীর নিরাপত্তা বিধানের জন্য শহরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন ছিল। ঘটনার সময় সংহিসতা মোকাবেলা করতে ৮-১০ রাউন্ট রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এসময় আমিসহ ৯ পুলিশ আহত হয়েছেন।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.