|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
ঘোড়া দিয়ে হালচাষ
প্রকাশের তারিখঃ ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩
ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন ফারুক হোসেন। সম্প্রতি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলহরি মাঠে
ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন ফারুক হোসেন। সম্প্রতি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলহরি মাঠে।
সংসারের খরচ জোগাতে ঋণ করে একটি ঘোড়া কেনেন ফারুক হোসেন। এরপর ঘোড়ার গাড়ি তৈরি করে মালামাল পরিবহন শুরু করেন। দুই বছর ধরে এভাবে সংসার চালাচ্ছিলেন তিনি। এবার চলনবিলজুড়ে বোরো ধানের আবাদ শুরু হওয়ায় কদর বেড়েছে হালচাষিদের। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেই ঘোড়া দিয়ে হালচাষ শুরু করেছেন ফারুক হোসেন। এভাবে লাভবান হচ্ছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বিলহরিবাড়ী গ্রামে ফারুক হোসেনের বাড়ি। স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে সংসার তাঁর।
এবারই প্রথম ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন জানিয়ে ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা না থাকায় ঘোড়ার গাড়িতে মালামাল পরিবহন করে সংসার ও ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছিলেন। এবার ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে সংসার খরচের পরও সঞ্চয় করতে পারছেন।
প্রতি বিঘা ৩০০ টাকা চুক্তিতে বোরো খেতে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করেন ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, এভাবে দিনে ছয়-সাত বিঘা জমি চাষ দিয়ে থাকেন। ঘোড়ার খাদ্য বাবদ খরচ হয় ৩০০ টাকা। সব খরচ বাদ দিনে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা লাভ থাকে। বছরের অন্য সময়ে ঘোড়ার গাড়িতে মালামাল বহন করে এত টাকা আয় করা সম্ভব হতো না।
ঘোড়া দিয়ে হালচাষের আয়–ব্যয় সম্পর্কে ফারুক হোসেন বলেন, দেড় মাস হয়েছে হালচাষ করছেন। তাঁর ছেলে উচ্চমাধ্যমিকে এবং মেয়ে ফারজানা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের পড়াশোনা, যাতায়াত ও সংসারের অন্যান্য খরচে গত এক মাসে তাঁর ব্যয় হয়েছে ২২ হাজার টাকা। এই সময়ে হালচাষ করে আয় হয়েছে ৪২ হাজার টাকা। ফলে সঞ্চয় করতে পেরেছেন ২০ হাজার টাকা।
কৃষক ফারুক হোসেন আরও বলেন, ঘোড়া শক্তিশালী প্রাণী হওয়ায় কাঁধে জোয়াল দিয়ে পেছনে দাঁড়িয়ে থাকলেও দ্রুত এগিয়ে চলে, হাঁপিয়ে যায় না। এ কারণে অল্প সময়ে বেশি পরিমাণ জমি চাষ করা যায়।
গরুর চেয়ে ঘোড়া দিয়ে হালচাষে বেশি লাভবান হওয়া যায় জানিয়ে স্থানীয় কৃষক আবদুল হান্নান, আসকান আলী ও জয়নাল আবেদীন বলেন, জমি গভীরভাবে খনন করা হয়, মই দেওয়ার সময় জমির উঁচু-নিচু জায়গাগুলো ভালোভাবে সমান হয়। এতে জমিতে পানি ধরে রাখা সহজ হয়। এক দিনেই প্রায় চার বিঘা পর্যন্ত জমিতে চাষ দেওয়া সম্ভব হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, যান্ত্রিকতার কারণে এখন গরু দিয়ে হালচাষের প্রবণতা কমেছে। তবে ঘোড়া দিয়ে হালচাষের ঘটনাটি এই প্রথম ঘটেছে
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.