|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
কুড়িগ্রামে সাড়ে তিন দশক পর অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী মই খেলা
প্রকাশের তারিখঃ ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩
কৃষকের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে ষাড়ের মই দৌড় প্রতিযোগিতা। কিন্তু নানা কারণে এ খেলাটি দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে শুকনো মওসুমে কুড়িগ্রামে ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী মই খেলা।
হাজার হাজার বয়স্ক, যুবক শিশু-কিশোরসহ অনেকেই উপস্থিত হন ষাড়ের মই দৌড় দেখার জন্য। তবে আগের মতো এখন আর এ খেলা অনুষ্ঠিত হয় না। খেলাটি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু হারিয়ে যেতে বসলেও এ খেলার জনপ্রিয়তা এখনও কমেনি।
[video width="640" height="368" mp4="https://dainikbanglarodhikar.com/wp-content/uploads/2023/01/received_729390381835686-1.mp4"][/video]
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ খেলাকে অনেকেই এখনও দেখেই নি। নতুন করে এ খেলা দেখে তারা খুব আনন্দ পেয়ে থাকে। যে এলাকায়ই ষাড়ের মই দৌড় খেলা অনুষ্ঠিত হয় সেখানেই উৎসবের আমেজ বয়ে যায়। একটি মইয়ে ৪টি ষাড় গরু থাকে।আর এরকম তিনটি করে মই দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। অনেক সময় নির্ধারিত দাগের বাইরে চলে যায় ষাড়ের মই। এতে আউট ধরা হয় ওই মইকে।
এখানে থাকে দুই জন মইয়াল। আরো থাকে ৩ জন ধরাল। রেফারীর বাঁশি ফুকানোর সাথে সাথেই মইগুলোর ষাড়েরা দৌড়ানো শুরু করে। যে মই বিজয়ী হয় তখন তারা মেতে উঠে আনন্দে। আর চারদিকে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার নারী, পুরুষ, শিশুর উল্লাস ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে। এ খেলা দেখাতে পেরে ময়ালরাও অনেক খুশি। ময়াল, ধরাল ও ষাড়ের মালিকরা বাপদাদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চালিয়ে যাচ্ছেন এ খেলা।
গ্রামবাংলার ষাড়ের দৌড় খেলা হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে জানান দিতে কুড়িগ্রাম জেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের সকল জনতার মাঠি ও মানুষের নেতা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর মালেক মাস্টার এ খেলার আয়োজন করেছে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ও মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঘোগাদহ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড সোনালীর কোটি এলাকার জামে মসজিদের সামনে খোলা মাঠে এ খেলার আয়োজন করা হয় এ খেলার। জামালপুর, জেলার সরিষাবাড়ী, শেরপুর, শ্রীবদি, দয়ারপার, গুডেইঘাট, ঘাগড়ার চর, শানন্দ্য বাড়ি, ঝগড়ার চর, এসব জায়গা থেকে মোট ৬ টি দল খেলায় অংশ গ্রহণ করেন।
দুই পর্বের খেলায় প্রথম স্থানে হাবু ব্যাপারীর দল, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন মোজাহারুল ইসলামের দল এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করে রতন ব্যাপারীর দল। মই খেলায় বিজয়ীদেয় জন্য প্রথম পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় একটি গরু। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার দেওয়া হয় একটি করে খাসি। আর চতুর্থ স্থান অধিকারীকে দেওয়া হয় প্রাইজ মানি। খেলা শেষে সন্ধ্যার আগেই বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
এ খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু চেয়াম্যান উপজেলা পরিষদ,কুড়িগ্রাম সদর ও সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কুড়িগ্রাম জেলা শাখা
বিশেষ অতিথি আলহাজ্ব মোঃ মোস্তাফিজার রহমান সাজু সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কুড়িগ্রাম জেলা শাখা।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলহাজ্ব মোঃ সাইদুর রহমান চেয়ারম্যান ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ কুড়িগ্রাম সদর। আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল গফুর চেয়ারম্যান যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ। আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল বাতেন সরকার । জনাবা মোছা: শিউলি বেগম সংরক্ষিত মহিলা সদস্য জেলা পরিষদ কুড়িগ্রাম। মোঃ মিনহাজুল ইসলাম আইয়ুব সদস্য জেলা পরিষদ কুড়িগ্রাম। জনাব মোঃ শফিরার রহমান ছত্তার বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ঘোগাদহ।
সহযোগিতায় জনাব মোঃ আব্দুল আউয়াল লিয়ন সদস্য ওল্ড ঢাকা ইয়ুথ ফোরাম ও সভাপতি এন সি টি নুনখায়া আয়োজক কমিটির সভাপতি জনাব মোঃ আব্দুল মালেক (চেয়ারম্যান ৪ নং ঘোগাদাহ ইউনিয়ন) জানান, এখেলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমরা প্রতি বছরই আয়োজন করবো এখেলা। গ্রাম বাংলার এতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় এ খেলা যেন হারিয়ে না যায় এ দাবি কৃষকসহ সবার।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.