|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
পাকিস্তানপন্থী রাজাকার রাজনৈতিক সঙ্গীরা ক্ষমতায় আসতে পারবেনা-হাসানুল হক ইনু এমপি- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির উদ্যোগে আজ ১৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি,সহ-সভাপতি মীর হোসাইন আখতার,ফজলুর রহমান বাবুল,শফি উদ্দিন মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, মোখলেছুর রহমান মুক্তাদির, শওকত রায়হান, মোহাম্মদ মোহসীন, মীর্জ মোঃ আনোয়ারুল হক, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সাধারণ সম্পাদক এড.মুহিবুর রহমান মিহির, ঢাকা মহানগর পূর্ব জাসদের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান,ঢাকা মহানগর পশ্চিম জাসদের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল, জাতীয় যুব জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম সুমন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ন-মা) কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমূখ।
বীরমুক্তি যোদ্ধা জননেতা হাসানুল হক ইনু ও সাবেক তথ্য মন্ত্রী সভাপতির ভাষণে হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন,মুক্তিযুদ্ধে বিজয় বাঙালি জাতির ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম গৌরব ও অহংকারের বিষয়। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি প্রমাণ করেছে পৃথিবীর কোনো শক্তিই বাঙালি জাতিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি,পারবেও না।৩০ লক্ষ শহীদের আত্মবলিদান,দুই লক্ষ নারীর সম্ভ্রম, কোটি কোটি মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অতীতের সকল বিভ্রান্তি,বির্তক,অমীসাংসিত বিষয়ের চূড়ান্ত মীমাংসা,ফয়সালা,সমাধান করেছিল।মুক্তিযুদ্ধে মীমাংসিত ফয়সালা সমাধানের ভিত্তিতেই ১৯৭২ সালের সংবিধান রচিত হয়েছিল।তিনি আরও বলেন, জাতির দুর্ভাগ্য স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি মুক্তিযুদ্ধে মীমাংসিত বিষয়সমূহ ও সংবিধানকে অস্বীকার করে রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করছে।সামরিক শাসক জিয়ার চাপিয়ে দেয়া রাজনৈতিক দল বিএনপিই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি,স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি,পাকিস্তানপন্থীর মূল ধারক,বাহক,দূর্গ।জনাব ইনু বলেন,বিএনপি-জামাতের ক্ষমতা পুনর্দখলের আন্দোলন আসলে গোলাম আযমে ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলন’। বিএনপির ১০ দফা সংবিধান,আইন,আদালতের কবর দিয়ে অসাংবিধানিক অস্বাভাবিক জঙলি সরকার আনা এবং সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক যুদ্ধাপরাধ,জঙ্গবাদী সন্ত্রাস,দূর্নীতি অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের পক্ষাবলম্বনের কালো দলিল।তিনি বলেন,১০ দফা দিয়ে বিএনপি আবারও প্রমাণ করলো যে,তারা দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে ফেলে দিয়ে অসাংবিধানিক অস্বাভাবিক জঙলি সরকার আনার ষড়যন্ত্রের রাজনীতির পথই আঁকড়ে ধরে আছে।তাদের আসল উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গীবাদী সন্ত্রাস ও দূর্নীতির বিচার বন্ধ করা। সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসী,দূর্নীতিবাজদের মুক্ত করা। বিএনপি সংবিধান,আইন,আদালত কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করে না।হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন,দেশে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কোনোভাবে আলেম, ওলেমা,ইসলামী চিন্তাবিদ,ইসলাম ধর্ম প্রচারক বন্দি নাই।যুদ্ধাপরাধ ও জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে প্রকাশ্য আদালতে সাজাপ্রাপ্ত এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সে সাজা নিশ্চিত হয়ে যারা বন্দি আছে তারা কেউই প্রকৃত আলেম,ওলামা,ইসালামি চিন্তাবিদ, ইসলাম ধর্ম প্রচারক নয়।তারা ধর্মের অপব্যবকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা,কর্মী।কোনো যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসী,রাজনৈতিক নেতা ধর্মের মনগড়া ব্যাখা বা অপব্যাখ্যা দিয়ে ওয়াজ করলেই আলেম বা নিরপাধী হয়ে যায় না।দেশের কেউই আইন আদালতে উর্ধে না,মসজিদের ইমাম বা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক নেতাও আইন আদালতে উর্ধে না।দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সুনির্দিষ্ট রায়ের পর বিচারবিভাগকে সম্পৃক্ত করে পুরাতন ধাচের তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার কোনোই সুযোগ নাই। তারপরও পুরাতন ধাচের তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা,আরপিও বাতিল করার দাবি তুলে বিএনপি সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করিতে সংঘাত-সংঘর্ষের মাধ্যমে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে জলঘোলা করার পথে যাবারই ইংগিত দিয়েছে। বিএনপির ক্ষমতা পুনর্দখলের আন্দোলনের ১০ দফায় চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলা করে জাতীয় অর্থনীতি সচল রাখা,মানুষের আয় ও জীবিকা রক্ষাসহ জনজীবনে স্বস্তি বজায় রাখার কোনো প্রস্তাব নাই। বিএনপির সময় দফায় দফায় বিদ্যুৎ,জ্বালানি, গ্যাস,পানির দাম অযোক্তিকভাবে বাড়িয়েছিল। বিএনপি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতেও পারেনি,সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়াতে পারেনি।বিএনপির আমলেই রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক চালু এবং পরিচালক নিয়োগ শুরু হয়।দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত বিএনপির চালু করা দুষ্ট চক্রের অশুভ প্রভাব থেকে এখনও মুক্ত হতে পারছে না।বিএনপি যতবার ক্ষমতায় ছিল ততবারই বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডকে ইনডেমনিটি দিয়েছে।বিএনপির আমলে বিচার বিভাগ,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীগুলিকে হাওয়া ভবনের অধিনস্থ করা হয়েছল।বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নিজদের তোলা দাবি যে ভুলে যায়,তার প্রমান হলো জিয়া,খালেদা জিয়া,খালেদা-জিয়া,ইয়াজউদ্দিন সরকার ক্ষমতায় থাকা কালে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করেনি।বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় থাকা কালে ২০০৬ সালে আইসিটি আইন করেছিল।
দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে ফেলে দিয়ে অসাংবিধানিক অস্বাভাবিক জঙলি সরকার আনা,যুদ্ধাপরাধ-জঙ্গীবাদী সন্ত্রাস-দূর্নীতির অপরাধের বিচার বন্ধ,সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী-জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসী-দূর্নীতিবাজদের মুক্ত করা এবং সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করার জন্য বিএনপি-জামাত ও এদের রাজনৈতিক পার্টনারদের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি সম্পর্কে সজাগ থাকা এবং বাংলাদেশ বিরোধী এই ষড়যন্ত্রের রাজনীতি মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য জাসদ ও ১৪ দলসহ দেশপ্রেমিক,গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক সকলকে একএিত থাকতে হবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.