|| ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
ইউপি সচিবকে মারধরের অভিযোগ-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৮ নভেম্বর, ২০২২
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নব-যোগদানকৃত সচিবকে মারধর সহ গালিগালাজ করার অভিযোগ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা'র সমীক্ষে, ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম আজিজ উল্ল্যাহ'র বিরুদ্ধ একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ইউপি সচিব মো. হাবিবুর রহমান।
গত কাল দুপুরে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা'র নিকট এ অভিযোগ দাখিল করেন তিনি। এর আগে তিনি ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী মো. আনোয়ার হোসেনকে সাথে নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জেলা প্রশাসনের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান এর নিকট এ ঘটনা খুলে বলেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউপি সচিব মো. হাবিবুর রহমান গত ১৪ নভেম্বর সোমবার ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদে যোগাদান করেন।
যোগদানের দ্বিতীয় দিন ১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতে পরিষদের উদ্যোক্তা অবিলাস চন্দ্র ভৌমিক কয়েকটি জন্ম নিবন্ধন প্রিন্ট করে নব-যোগদানকৃত ইউপি সচিবকে বলেন, ওইসব জন্ম নিবন্ধনে স্বাক্ষর করে দেওয়ার জন্য।
এসময় ইউপি সচিব অনলাইনে চেক করে দেখেন ওইসব জন্ম নিবন্ধন করতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন এসব কাগজপত্র অনলাইনে নেই।
এমনকি সেবা গ্রহীতারাও প্রমানাদীর কোন হার্ট কপি দেখাতে পারেননি তিনি।
তাই তিনি ওইসব জন্ম নিবন্ধনে স্বাক্ষর না দিয়ে চেয়ারম্যান সাহেব আসলে তার সাথে আলাপ আলোচনা করে স্বাক্ষর করবেন বলে ওই উদ্যোক্তাকে জানান । একথা শুনার পর ওই উদ্যোক্তা ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করেন।
পরে ওই দিন বিকাল ৩ টার দিকে চেয়ারম্যান একজন দফেদারের মাধ্যমে ইউপি সচিবকে তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে উদ্যোক্তার দেওয়া জন্ম নিবন্ধনে কেন স্বাক্ষর দেয়নি এমন প্রশ্ন করলে ইউপি সচিব ঘটনা খুলে বলার সাথে সাথে উত্তেজিত হয়ে চেয়ারম্যান বলেন এগুলো আপনার দেখার প্রয়োজন নেই।
কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান তার চেয়ার থেকে উঠে ইউপি সচিবের শার্টের কলারে ধরে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও চর-থাপ্পর মারে এবং অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে বলেন, আমি যে কাগজই পাঠাইনা কেন চোখ বন্ধ করে স্বাক্ষর দিয়ে দিতে হবে ।
স্বাক্ষর করতে না পারলে কাল থেকে তুই আর ইউনিয়ন পরিষদে আইস না। একথা বলেই অফিসের ভিতর রড খুঁজতে খুঁজতে বলে তুই আমাকে আইন শিখাচ্ছিস? এসময় নব-যোগদানকৃত হিসাব সহকারী সহ এলাকার অসংখ্য লোক এঘটনা দেখেছেন। সচিবকে মারতে দেখে এলাকার অনেকই খুশী। চেয়ারম্যান সাহেবের কথায় অবৈধ পন্তায় তৈয়ারিকৃত জন্ম নিবন্ধনে স্বাক্ষর না দেওয়ায় এটা এলাকাবাসীর অনেকেরই প্রেস্টিজে লেগে গেছে। কেননা ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে জন্ম নিবন্ধন করে নিতে পারলেতো এলাকাসীরই সুবিধা হয়। তাই এলাকাবাসীও চেয়ারম্যানের পক্ষেই কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক এমন কথা ব্যক্ত করে নব-যোগদানকৃত ইউপি সচিব বলেন, ১৯৯২ সালের ১৮ জুলাই সর্বপ্রথম কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল ইউনিয়ন পরিষদে সচিব হিসেবে যোগদান করার পর চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি আদেশে বদলী হয়ে কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করেন তিনি। প্রায় ৩০ বছরের চাকুরির জীবনে তার সাথে এমন কোন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি এবং তার বিরুদ্ধে কেউ কোন প্রকার অভিযোগ তুলতে পারেনি। ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আজিজ উল্ল্যাহ'র অনৈতিক কর্মকান্ডে সারা না দেওয়ার এভাবে লাঞ্চিত হতে হয়েছেন তিনি। এ ঘটনার পর থেকে তিনি চেয়ারম্যানের ভয়ে আর ইউনিয়ন পরিষদে যাননি। তিনি এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
শুক্রুবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম আজিজ উল্ল্যাহ তার অফিসে বসে এব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি নব-যোগদানকৃত ইউপি সচিবকে মারধর ও চোখ বন্ধ করে যেকোন কাগজে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করার কথা অস্বীকার করে বলেন, নব-যোগদানকৃত ইউপি সচিব মো. হাবিবুর রহমান যোগদানের পূর্বেই ফোনে উদ্যোক্তার নিকট প্রতি জন্ম নিবন্ধন মারফত কিছু সুবিধা নেওয়া কথা জানান এবং যোগদানের দিন থেকেই বিভিন্ন জনের কাছে অতিরিক্ত টাকা চাইতে শুরু করেন বলে জানা যায়। এতে জনগণসহ ইউপি সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে একের পর এক ফোন করতে থাকে তাকে। এক পর্যায়ে জনসাধারণ ও ইউপি সদস্যরা সচিবকে মারধর করতে প্রস্তুতি নেয়। খবর পেয়ে আমি উপজেলা পরিষদ থেকে এসে বিষয়টি সমাধানের জন্য সচিবকে আমার রুমে ডেকে কথা বলি। সেখানে কোনো মারধরের মত ঘটনা ঘটেনি। বরং সরকারি ফি এর বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে সচিবকে আমি ব্যক্তিগত পকেট থেকে কিছু সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা বলি। তারপরও সচিব বার বার আমাকে বলেন আপনি বুঝবেন না। এক পর্যায়ে আমি থাকে এটা বলি যে, যেহেতু ভোটার তালিকা হালনাগাদ হচ্ছে এবং হালনাগাদের সময় মাত্র কয়দিন বাকি আছে সেহেতু ছোটখাটো খুটি নাটি বিষয় না ধরে এসব জন্ম নিবন্ধনে স্বাক্ষর করে দিতে। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় আমি তাকে বলি স্বাক্ষর দিতে না পারলে আপনি কাল থেকে অফিসে আসার দরকার নেই।
ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের মো. শাহজাহান মিয়ার ছেলে আবু কালাম (৩৫) বলেন, তার ফুফাতো ভাই স্বাধীন (১৮) ও চাচাতো ভাই মোশাররফ (১৮) দের নামে টিকা কার্ড দিয়ে এক সপ্তাহ আগে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা অভিলাস এর মাধ্যমে দুইটি জন্ম নিবন্ধন প্রিন্ট করে ১৫ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে নব যোগানকৃত সচিবের নিকট স্বাক্ষর আনতে যায়। এসময় ইউপি সচিব কম্পিউটারের মাধ্যমে জানতে পারেন জন্ম নিবন্ধন করতে যেসব কাগজপত্র লাগে ওইসব নামে অনলাইনে কোন কাগজ নেই। তাই আবু কালামের নিকট ৩০০ টাকা দাবী করেন। পরবর্তীতে টাকা ছাড়াই এক ইউপি সদস্যের কথায় জন্ম নিবন্ধনে স্বাক্ষর করে দেয় সচিব। তবে ৩০০ টাকা ঘুষ দাবী করার সময় কেউ উপস্থিত ছিলো কি না তা জানতে চাইলে আবু কালাম বলেন না।
ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা অভিলাষ চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ইউপি সচি
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.