হাইমচর উপজেলার ৪নং নীলকমল ইউনিয়নের ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের মাঝি কান্দি এলাকার মাটি মুন্সিগঞ্জের একটি ব্রিকফিল্ডে বিক্রি করে যাচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান সউদ আল নাসের এর নেতৃত্বে স্থানীয় কতিপয় মাটিখেকো চক্র।
একদিকে নদী ভাঙ্গন তার উপর নদীর তীরবর্তী এলাকার মাটি কেটে নেয়ার ঘটনায় ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী।
দিনে রাতে একাধিক ভেকু মেশিনে মাটি কেট জাহাজে নেয়ার ফলে নীলকমল ইউনিয়নের মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ড । মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে সোমবার ঘটনাস্থলে যান, উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি (নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট) আব্দুল্লাহ আল মামুন। সহকারি কমিশনার ভুমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে তারা পালিয়ে যায় মাটি খেকো চক্র।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট চলে আসার পর এই চক্র পুনরায় রবিবার রাতের আধারে ৪ টি ভেকু মেশিনে মাটি কাটা আরম্ভ করে সংবাদ পেয়ে সাবেক চেয়ারম্যান রতন হাজীর নেতৃত্বে এলাকাবাসী ধাওয়া দেয়। হাইমচর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩ টি ইউনিয়ন নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ৩টি ইউনিয়ন কাগজে কলমে থাকলেও ঐ তিনটি ইউনিয়নের বেশির ভাগই এখন নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। নীলকমল ইউনিয়নে যে টুকু জায়গা রয়েছে সেটুকুতেও কুনজর পড়েছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সউদ আল নাসের এর নেতৃত্বে কতিপয় মাটি খেকু সদস্যদের।
এই চক্র ৩/৪ দিন ধরে দিনে ও রাতে ৪টি বেকু দিয়ে কয়েকটি জাহাজে করে প্রতিদিনই( জাহাজ প্রতি ৫০ হাজার টাকায়) মাটি বিক্রি করছে । যার ফলে মানচিত্র থেকে বিলীনের পথে রয়েছে নীলকমল ইউনিয়ন। অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষনাকৃত এ মধ্যচরের মাটি কেটে মানচিত্র থেকে মুছেফেলার মত জগন্যতম কাজ করছে এ মাটি খেকু চক্রটি। এ মাটি কাটার সাথে জড়িত স্থানীয় ফারুক মোল্লা ও রনি বেপারী, যারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সউদ আল নাসেরের একান্ত লোক। যার কারনে ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেনা স্থানীয় লোকজন।
নাম বলতে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এলাকার ফসলী জমি জোর করে কেটে নিয়ে যাচ্ছে চেয়ারম্যান সউদের লোক ফারুক মোল্লা ও রনি বেপারীর নেতৃত্বে আরও কয়েকজন লোক। তারা ৪টি বেকু দিয়ে মাটি কেটে জাহাজে করে নিয়ে মুন্সিগঞ্জে মাটি বিক্রি করছে। ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বাচ্ছু সরকার জানান, আমার পাশের ওয়ার্ডের মাঝি কান্দি গ্রামের মাটি অন্যত্র বিক্রি করার কারনে গ্রামটি বিলুপ্তির পথে। যা অত্যান্ত দুঃখজনক বিষয়। কে বা কারা এ মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে মুন্সিগঞ্জে বিক্রি করছে এটা সকলেরই জানা। তবে গ্রামটি রক্ষার স্বার্থে এ মাটি কাটা বন্ধ করা প্রয়োজন। ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রতন জানান, আমার ওয়ার্ডে মাটি কাটার সংবাদ পেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি স্যার এবং বাহেররচর ফাঁড়ি থানাকে অবহিত করেছি।
আজ এসিল্যান্ড এসে দৌড়িয়ে দিয়েছে। স্যার আসার সংবাদ পেয়ে সব কিছু নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। নীল কমল ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান রতন হাজী জানান এলকার মাটি বিক্রি করে খাচ্ছে একটা চক্র খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রশাসন অবগত করছি, প্রশাসনের তৎপরতায় বন্ধ হলেও রাতে আবার শুরু করেছে এলাকাবাসী কে সাথে নিয়ে বাধা দিয়ে তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছি, কারা জড়িত এ বিষয়ে তিনি বলেন আমি কারো নাম বলবো না, তবে দেশের ও এলাকার চিহ্নিত শত্রুরাই জড়িত, এদেরকে এলকার সবাই চিনে, আমার এই অন্যায় কাজ করতে দিব না, প্রতিরোধ হবে।
চরের মাটি বিক্রি সিন্ডিকেট প্রধান হিসেবে অভিযুক্ত ৪ নীলকমল ইউপি চেয়ারম্যান সউদ আল নাসের সাংবাদিকদের বলেন, এ ইউনিয়নের কিছু লোক তাদের জমির মাটি রাজ রাজেস্বর ইউপি সদস্য রনি গাজীর মাধ্যমে বিক্রি করেছে। কেউ যদি তার জমির মাটি বিক্রি করে আমরা কি করতে পারি। ফারুক মোল্লা ও রনি বেপারীর বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অভিযুক্ত ফারুক মোল্লা বলেন, আমরা ৪/৫ দিন মাটি কেটেছি। আজ এসিল্যান্ড এসে নিষেধ করেছেন। তাই আমরা আর মাটি কাটবো না। এ বালু খেকুদের হাত থেকে নীলকমল ইউনিয়নকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে বালু খেকুদেরকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান এলাকাবাসী।