|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বাঘায় গর্ভবতী মায়েদের আস্থার ঠিকানা মুঞ্জু হাসপাতালে-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ৫ নভেম্বর, ২০২২
তন্ময় দেবনাথ রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি ।
মানসম্মত সেবা, কম খরচ ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশের জন্য গর্ভবতী মায়েদের আস্থার ঠিকানায় পরিণত হয়েছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত মুঞ্জু হাসপাতাল। মুঞ্জু হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, সেবার মান ভাল বলেই এখানে তারা আসেন। হাসপাতাল কর্মীদের সেবাদানের মানসিকতায় তারা অত্যান্ত খুশি।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার স্বামীর থেকে জানাযায়, এখানে সেবার মান অনেক ভাল। এ কারণে অন্যকোথাও না গিয়ে সরাসরি এখানে আসেন তারা । ভালো চিকিৎসা পাওয়ার পাশাপাশি এখানকার ডাক্তার নার্স সবাই খুব আন্তরিক। তাছাড়া এখানকার খরচ অন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোর তুলনায় অনেক কম।
এই হাসপাতালের আরও এক ডেলিভারীর রোগী বলেন, আমরা এখানে ৩ দিন হলো এসেছি। কিন্তু মনেই হয়না হাসপাতালে আছি। পরিবারের মতোই সবাই আন্তরিক। খরচও অনেক কম। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে খুশি।
রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুঞ্জু হাসপাতাল বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য পরিচিত। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা এই হাসপাতালকে খুবই পছন্দ করে। তার অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে নারীবান্ধব একটা পরিবেশ। এখানে মহিলা চিকিৎসক ও নার্স দ্বারা সব কিছু পরীক্ষা করাসহ বাচ্চা ভুমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত সমস্ত কিছু মহিলাদের দ্বারাই পরিচালিত। তাদের দক্ষকর্মী দ্বারা সেবাটা দেয়া হয়। এখানে ২৪ ঘন্টা কনসালটেন্ট চিকিৎসক রয়েছে। এখানে ডেলিভারী যে ইউনিট রয়েছে সেটাও দক্ষ কর্মীদের দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
এছাড়াও মুঞ্জু হাসপাতালে নরমাল ডেভিরীর জন্য গর্ভবতী মায়েদের উৎসাহ দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ তাদের এই হাসপাতালটা বাণিজ্যিক হিসেবে পরিচালিত নয়, সেবায় মূল লক্ষ্য। আরেকটা বিষয় হচ্ছে তারা এখানে গর্ভবতী মা আসলেই যে সিজার করাবে এমনটা না, বরং নরমাল ডেলিভারী করাতে উৎসাহিত করে। অন্যান্য হাসপাতাল যেখানে সিজারে বেশি গুরুত্ব দেয়। রোগীদের ধারণা যে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মানেই অপারেশন করে বাচ্চা হওয়া। কিন্তু এখানে আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করা হয় নরমাল ডেলিভারী করানোর। পাশাপাশি মুঞ্জু হাসপাতালে স্বল্পমূল্যে এই সেবাটা দেয়া হয়ে থাকে। ধারাবাহিক সেবা যেমন চেক আপ থেকে শুরু করে ডেলিভারী হওয়া পর্যন্ত, ডেলিভারীর পরবর্তী চেক আপ, ট্রিটমেন্ট এই ধারাবাহিক সমস্ত সেবা এক সঙ্গে নেয়ার ব্যবস্থা মুঞ্জু হাসপাতালে রয়েছে।
মহিলা কর্মীদ্বারা স্বল্পমূল্যে যে গুণগত মানের সেবাটা দেয়া হয়ে থাকে সেটা নেয়ার জন্যই মায়েরা এখানে আসে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হয় । একজন গর্ভবতী মা কতবার চেকআপে আসবে সেটা দূরের রোগিদের মোবাইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। এই সেবাটা অন্য কোথাও নেই । দেখা যায় এ কারণে তারা প্রতিমাসেই সেবা নিতে আসে। ডাক্তারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে কথা বলার সুযোগ পায় এর পাশাপাশি তাদেরকে কাউন্সেলিং করা হয় বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সবচেয়ে কম খরচে গুণগত সেবা দিয়ে থাকে মুঞ্জু হাসপাতাল। মহিলা ও শিশু সেবায় মুঞ্জু হাসপাতালের ব্যাপক পরিচিতি। তবে এখানে মহিলা, পুরুষ ও শিশু সবারই মানসম্মত সেবা দেয়া হয়ে থাকে। মুঞ্জু হাসপাতাল নারী ও শিশু বান্ধব হাসপাতাল এটা এক বাক্যে বলা যায়।
এছাড়াও আমাদের বাঘা সহ আশে পাশের অসহায় দুঃস্থ সাধারণ মানুষ অনেক খরচের ভয়ে সিজার করাতে যারা ভয় পায় তাদের জন্য মুঞ্জু হাসপাতাল দিচ্ছে দারুণ সুযোগ! যেমন বর্তমানে রেজিষ্ট্রেশন এর মাধ্যমে নরমাল ডেলিভারি ফ্রী আর মাত্র ২৯০০ টাকায় সিজার করানো হচ্ছে, রেজিষ্ট্রেশন খরচ ২০০ টাকা আর যদি ফেসবুক গ্রুপ যেমনঃ মঞ্জু ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল, আমাদের বাঘা, বাঘা উপজেলার সকল ব্লাড নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনের সদস্যদের রেজিষ্ট্রেশন খরচ ফ্রী।
হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমার বলেন, আমি প্রতিনিয়ত অনুভব করি মানুষের আর্তনাদ, আহাজারি। জরুরী প্রয়োজনে কাছের মানুষকে পাশে পাই না, বর্তমানে সবার অর্থনৈতিক অবস্থার কথা চিন্তা করে আমি আমার এলাকার মানুষের পাশে দাড়াতে চাই, কারণ এমন এক সময় অতিক্রম করছি আমরা যেখানে প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্য উদ্ধমুখী। সাধারণ দিন মজুর থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত গরীব অসহায় পরিবারের কথা চিন্তা করে এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, আর যতদিন বেঁচে থাকবো সব সময় আমার এলাকার মানুষের পাশে থাকতে চাই, ভালো কাজ বেশি বেশি করতে চাই জীবন তো একটাই মরতে হবে সবাই কে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.