|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
রুশোর কাছে বাংলাদেশের হার-DBO-News
প্রকাশের তারিখঃ ২৯ অক্টোবর, ২০২২
রাইলি রুশো আগে থেকেই বাংলাদেশী বোলারদের ব্যাপারে ভালভাবে জানেন। তার ৫৬ বলে করা ১০৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের কাছেই তাই হেরে গেছে বাংলাদেশ। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের গ্যালারিতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে হওয়া ম্যাচে নিজেদের পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েও ১০৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে ২০৫ রান তোলে, বাংলাদেশ ১৬.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় ১০১ রানে।
রুশো একাই যেখানে ১০৯ রান করেছেন, বাংলাদেশের ১১ ব্যাটার মিলিয়ে করেছেন ১০১! আর তাই রুশোর দানবীয় ও বিস্ফোরক ইনিংসের কাছেই যেন হেরেছে বাংলাদেশ। নিজেদের টি২০ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হারের পর অধিনায়ক সাকিবও বলেছেন সেটিই। ৬ বছর ৪ মাস দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে খেলেননি, সেই সময়ে উমপমহাদেশে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) খেলেছেন রুশো। সেটাই তার বাংলাদেশের স্পিন খেলার ক্ষেত্রে হয়েছে সহায়ক। নিজেদের চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় হতাশ সাকিব আক্ষেপের সঙ্গে জানিয়েছেন উন্নতির বিষয়ে আর কিছু বলতে চান না তিনি।
এবার বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছে বাংলাদেশের জন্য স্বপ্নের মতো। প্রথম ম্যাচে হল্যান্ডকে ৯ রানে হারিয়ে দেয় প্রথমবার সরাসরি সুপার টুয়েলভ পর্বে খেলতে নামা বাংলাদেশ। হোবার্টে পাওয়া সেই জয়ে দারুণ উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ম্যাচে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে দুর্দান্ত কিছু ঘটানোর অপেক্ষায় ছিল। কারণ এই ম্যাচে বেশি চাপের মধ্যে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কারণ প্রথম ম্যাচে তারা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বৃষ্টির কারণে খেলতেই পারেনি।
ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় ১ পয়েন্ট হারিয়েছে তারা। এই কারণে জিততে মরিয়া ছিল তারা। তাছাড়া চলমান বিশ্বকাপে বৃষ্টির দাপট থাকায় এবং ম্যাচের ফলাফলে ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনার উদ্ভব হওয়াতে রানরেটের বিষয়টি মাথায় রেখেই খেলতে হবে প্রোটিয়াদের। এমন চাপের ম্যাচে রুশো, ডেভিড মিলার ও কুইন্টন ডি ককদের বিধ্বংসী মেজাজের কোনো ইনিংস দেখার আশায় ছিল প্রোটিয়ারা। আর বাংলাদেশ দল দারুণ উজ্জীবিত প্রথম ম্যাচে জেতার পর।
সিডনিতে প্রচুর বাংলাদেশী থাকায় আরও আত্মবিশ্বাসী সাকিবরা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাফল্য পাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে নামেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রুশো খেলেন বিশ্বকাপে সেরা ইনিংস। ৫৬ বলে ৭ চার, ৮ ছয়ে তিনি ক্যারিয়ারসেরা ১০৯ রান করেন। এটি বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।
গত বিশ্বকাপে শারজাহতে ভ্যান ডার ডুসের অপরাজিত ৯৪ রান করেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তিনি ককের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১৬৮ রানের বিশাল জুটি গড়েন। আর এতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় প্রোটিয়ারা। কক ৩৮ বলে ৭ চার, ৩ ছয়ে করেন ৬৩।
১৬ ওভারে ২ উইকেটে ১৮০ রান তোলা প্রোটিয়ারা পরের দিকে বাংলাদেশী বোলারদের দৃঢ়তায় শেষ ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান তুলতে পেরেছে ৩ উইকেট হারিয়ে। অর্থাৎ ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশী বোলাররা। কারণ প্রথম ২ ওভারে ২৪ রান দেওয়া হাসান ১৮তম ওভারে ৫ এবং শেষ ওভারে ৭ রান দিয়েছেন। সাকিবও ১৯তম ওভারে এসে মাত্র ৪ রান দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাকিবও ম্যাচশেষে বলেন, ‘যদি বোলিং ডিপার্টমেন্টের কথা বলি আমরা যেভাবে করতে চেয়েছিলাম সেভাবে হয়নি। আসলে এরকম পরিস্থিতি হলে ঘুরে দাঁড়ানো খুব একটা সুযোগ থাকে না। আমরাও প্রস্তুত ছিলাম না। প্রথম ওভারে উইকেট পাওয়ার পর ১৪ ওভার কোনো উইকেট পাইনি। এখান থেকেই আমরা খেলা থেকে পিছিয়ে গেছি।
তবে পরে বোলাররা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সেটা অবশ্যই দারুণ।’ ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৫ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপে এটি কোন দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এর আগে ২০১৬ বিশ্বকাপে কলকাতায় পাকিস্তান করে ৫ উইকেটে ২০১। তাসকিন ৩ ওভারে ৪৬, হাসান ৪ ওভারে ৩৬ ও আফিফ ১ ওভারে ১১ রান দিয়ে ১টি করে এবং সাকিব ৩ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন।
মিরাজ দিয়েছেন ৩ ওভারে ৩২। রুশো সাকিবের ১ ওভারে ২১, তাসকিনের ২ ওভারে ২১ ও ২৩ এবং মেহেদি হাসান মিরাজের ১ ওভারে ১৬ রান নিয়েছেন। অর্থাৎ স্পিনার কিংবা পেসার কেউ রেহাই পায়নি তার তা-ব থেকে। এ বিষয়ে রুশো বলেন, ‘উপমহাদেশে আমি অনেক ম্যাচ খেলেছি, সেটাই আমাকে স্পিনের বিপক্ষে ভালো করতে সহায়ক হয়েছে।’ আর সাকিব তার ইনিংস নিয়ে বলেন, ‘সে অনেকদিন পর দেশের হয়ে খেলেছে তাই অনেক ক্ষুধার্ত ছিল।’
তার ক্ষুধার কাছে এত বড় লক্ষ্য বাংলাদেশের সামনে দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু ২১ বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশ ১০১ রানে গুটিয়ে যায়। রুশোর চেয়েও ৮ রান কম করেছেন বাংলাদেশের ১১ ব্যাটার। অথচ সৌম্য সরকার টানা দুই ছয় হাঁকিয়ে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন। তিনি ৬ বলে ১৫ রানে সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পরে শুধু লিটন ৩৪ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ৩১ রান করেছেন। এ দুটিই বাংলাদেশের ইনিংসে সেরা।
বাংলাদেশী পেসারদের মধ্যে মুস্তাফিজুর রহমান দারুণ উন্নতি দেখিয়ে ৪ ওভারে ২৫ রান দেন। অথচ সিডনিতে তাপমাত্রা, পরিবেশ এবং গ্যালারিতে নিজেদের পক্ষে দর্শক পেয়ে একেবারে নিজ মাঠের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ দল। উইকেটও ছিল স্পিনারদের জন্য সহায়ক। কিন্তু মুস্তাফিজ ব্যতীত বাংলাদেশের বাকি পেসার কিংবা স্পিনার সবাই তুলোধুনো হয়েছেন।
কিন্তু প্রোটিয়া পেসার এবং স্পিনাররা হয়েছেন সফল। দুই স্পিনার কেশব মহরাজ ৪ ওভারে ২৪ রানে ১টি ও তাবরেজ শামসি ৪ ওভারে ২০ রানে ৩টি এবং পেসার এনরিখ নরকিয়া ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ৩.৩ ওভারে ১০ রানে ৪ উইকেট নেন। সাকিব যদিও এলবিডব্লিউ ছিলেন না, রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন এবং রুশো ৮৮ রানে ডিপ থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে হাসানের কাছে বেঁচে গেছেন।
এই ভুলগুলোর খেসারত টি২০তে সবচেয়ে বড় পরাজয়ের লজ্জা এনে দিয়েছে বাংলাদেশকে। এর আগে ২০০৮ সালে করাচিতে পাকিস্তানের কাছে ১০২ রানে হারে বাংলাদেশ। আর বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় পরাজয় ২০১৬ সালে কলকাতায় নিউজিল্যান্ডের কাছে ৭৫ রানে। তাই বড় লজ্জা পেতে হয়েছে। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আমাদের এই জায়গাগুলোতে উন্নতি করতে হবে। যদিও বারবার এই উন্নতি করার কথা বলতে আমারও ভালো লাগে না। টি২০ ম্যাচই আসলে এমন।’ সিডনির উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল। তাই হতাশ সাকিব বলেন,
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.