|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
ঘুষ,চাঁদা ও নিয়োগ বাণিজ্যে সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে অভিযোগ-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ৩ অক্টোবর, ২০২২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে অধিভুক্ত কলেজগুলোতে পরীক্ষার হল পরিদর্শনে গিয়ে ঘুষ গ্রহণ, বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
এসব অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তা এবং স্বয়ং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কয়েক জন কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের ১৩৬ জন কর্মকর্তার মধ্যে ১২৮ জন উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, যার মধ্যে রয়েছেন স্বয়ং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহলুল হক চৌধুরী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, নিজেকে উপাচার্যের কাছের লোক দাবি করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কর্মকর্তাদের তটস্থ করে রাখেন তৈয়ব আলী। এছাড়া ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্বে ছিলেন এমন পরিচয় ব্যবহার করেও অফিসের কর্মকর্তাদের তটস্থ করে রাখেন তিনি।
নার্সিং কলেজের অভিযোগ :তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কয়েকটি নার্সিং কলেজ। এর মধ্যে রয়েছে পটুয়াখালীর গাজী মুনিবুর রহমান নার্সিং কলেজ ও ডিডব্লিউএফ নার্সিং কলেজ। মুনিবুর রহমান নার্সিং কলেজের পরিচালক জাকির হোসেন অভিযোগ করেন, প্রতিবার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে খাওয়া ও যাতায়াত খরচ বাবদ অর্থ দাবি করেন তৈয়ব আলী, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবহির্ভূত। একই পরিমাণ ডিডব্লিউএফ নার্সিং কলেজ থেকেও নিয়েছেন। এছাড়া শোক দিবস উপলক্ষ্যে কাঙালি ভোজের নাম করেও অর্থ দাবির ইঙ্গিত করেন বলে অভিযোগ করেছেন কলেজটির চেয়ারম্যান।
নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগও উঠেছে তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. ফারুক হোসেনের কাছ থেকে স্থায়ী নিয়োগ বাবদ মোবাইল ফোন দাবি করেন তিনি। শুধু ফারুক হোসেন নন, তৈয়ব আলী প্রতিনিয়ত এমন নিয়োগ বাণিজ্য করে যাচ্ছেন বলে জানায় অফিসটির কয়েকজন কর্মকর্তা। অফিসে বিল জমা দেন অতিরিক্ত :শুধু চাঁদাবাজি কিংবা নিয়োগ বাণিজ্য নয়, দাপ্তরিক কাজেও তৈয়ব আলী লুকোচুরি করেন। কোনো কাজের জন্য ব্যয় হওয়া অর্থের চেয়ে বেশি অর্থ দেখান তিনি। সম্প্রতি এমন ঘটনায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস। নোটিশে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস থেকে ৬৪ হাজার গোপনীয় খাম এবং ১২ হাজার সভাপতির খাম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসের ৩১৪ নম্বর কক্ষে আনার জন্য ভ্যানভাড়া বাবদ (লেবার খরচসহ) ২ হাজার টাকার বিল উপস্থাপন করেন। কিন্তু তথ্য নিয়ে জানা যায়, ঐ কাজের জন্য ১ হাজার ৩৫০ টাকা খরচ হয়েছে। তৈয়ব আলী বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোনোটিই সত্য নয়। যেসব নার্সিং কলেজ থেকে অভিযোগ এসেছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেছে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার জন্য তাদের ওপর চাপ দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার কারণ একটাই। সেটি হলো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের অনেক অনিয়মের কথা তিনি অবহিত, যা প্রকাশ করলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সমস্যা হতে পারে। তৈয়ব আলীর পালটা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী। এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.