|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নির্মিত হয়নি ব্রিজ-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের গোদারিয়া বাজার সংলগ্ন স্থানে বালছ নদীর উপর ব্রিজ না থাকায় দুই ইউনিয়নের ১৫ টি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা স্থানীয়দের অর্থায়নে নির্মিত বাঁশের সাঁকো। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও নির্মাণ হয়নি এখানে একটি ব্রিজ। ফলে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুকি নিয়ে নদী পার হতে হয় গ্রামবাসীদের। এতে প্রায়ই নদীতে পড়ে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনাও ঘটছে। প্রতিদিন কাকৈরগড়া ও বাকলজোড়া ইউনিয়নের গোদারিয়া, নাগপুর, গোপালপুর, বিলাশপুর, গোফিনাথপুর, সাংসা, গুজিরকোনা গ্রাম সহ প্রায় ১৫টি গ্রামের লোকজন এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করে। সাঁকো দিয়ে কোনো রকমে হেঁটে পারাপার সম্ভব হলেও যানবাহন চলাচল করা একেবারেই কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত খাদ্যশস্য, কৃষিপণ্য সহ বিভিন্ন কাঁচামাল বাজারজাতকরণে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাঁকো না থাকায় শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসা বানিজ্য সহ বিভিন্ন দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। নদীর দু’পাড়ে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুকি নিয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। ফলে জরুরি অনেক সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এই এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়রা সাঁকো নির্মানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। গোদারিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ মিয়া বলেন, জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগে আমাদের প্রতিশ্র“তি দিয়ে যায় সাঁকো নির্মাণ করা হবে। কিন্তু নির্বাচনের পর আর কেউ আমাদের খোঁজ-খবর রাখেনা। আমরা অনেক দিন ধরে বালছ নদীর উপর একটি সাঁকোর স্বপ্ন দেখছি কিন্তু আমদের স্বপ্ন আজই পর্যন্ত বাস্তবে পরিনত হল না।
নাগপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজ মিয়া বলেন, সরকার দেশের কত জায়গায় কত উন্নয়ন করছে। কিন্তু আমাদের এলাকায় এই সাঁকোটি নির্মাণ আর হলো না। আমরা আর কতদিন কষ্ট করবো এই ব্রিজটির জন্য। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই আমাদের এই ব্রিজটি নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য। গোফিনাথপুরের কৃষক আজিম খাঁ বলেন, একটি সাঁকোর অভাবে আমাদের জমি থেকে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে খুব কষ্ট হয়। ফলে বাধ্য হয়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে কৃষিপণ্য নিতে দ্বিগুণ খরচ হয়। এতে আমরা উৎপাদিত পণ্যের নায্যামূল্যে থেকে বঞ্চিত হই। সরকারের কাছে দাবী আমাদের মত গরীব অসহায়দের কথা চিন্তা করে একটা সাঁকো নির্মাণ করেন বালচ নদীতে।
শিক্ষার্থী এনামুল বলেন, বাঁশের সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে ভয় করে তারপরও যেতে হয়। ব্রিজটি খুব ঝূঁকিপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী আমাদের পড়ালেখার কথা চিন্তা করে সাঁকোট যেনো করে দেই। কাকৈরগড়া ইউপি চেয়ারম্যান বাচ্চু তালুকদার বলেন, এই ব্রীজটি অত্যান্ত জনগুরুত্বপূর্ণ একটি ব্রীজ। এই ব্রীজটি দিয়ে দুই ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ আসা যাওয়া করে।
এখানে পাকা ব্রীজ না থাকায় মানুষ অনেক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বিশেষ করে শিশু, শিক্ষার্থী ও নারীরা বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমরা বিভিন্ন মহলের সাথে যোগাযোগ করেছি ব্রীজটি নির্মাণের ব্যাপারে। দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান বলেন, বালছ নদীতে সাঁকো নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.