দাম্ভিকতার সাথে সরকারী নির্দেশনা অমান্যকারী মায়ের কারনে বাল্য বিয়ের অভিশাপ থেকে রেহাই পেলোনা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১২ বছরের কিশোরী।
ঘটনাটি গত ৪ সেপ্টেম্বর রোববার শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিন ইউনিয়নের বেরনাইয়া গ্রামের তালুকদার বাড়িতে ঘটে।
জানা যায়, ওই বাড়ির হেলাল উদ্দীন তালুকদার ও লাভলী বেগমের কনিষ্ঠা কন্যা স্থানিয় বেরনাইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেনীতে অধ্যায়রত। যার ভর্তি রেজিস্টার অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১০ আগষ্ট-২০১০ এবং শিক্ষার্থী কোর্ড নং ৭১০২। ওই সুবাদে তার এখন পর্যন্ত বয়স- ১২ বছর ১ মাস ২ দিন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর রোববার পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার শ্রীয়াং গ্রামের রফিকুল ইসলাম টুটুলের পুত্র আবদুল্লাহ্ আল নোমানের সাথে ওই কিশোরীর পারিবারিক সম্মতিক্রমে চাঁদপুর নোটারী পাবলিক থেকে বিবাহের ঘোষণাপত্র সৃজিত হয়।
ওই থেকে কিশোরী ও নোমান স্বামী স্ত্রীর ন্যায় একই বসত গৃহে বসবাস করা কালে বাড়ি এবং এলাকার লোকজনের নজরে পড়ে। শুরু হয় লোকাল থানা পুলিশ, সাংবাদিক ও এলাকার নেতৃস্থানীয় লোকজনের এবিষয়ে জানার মোহরা। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কল্পে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে।
এব্যাপারে কিশোরীর পিতা হেলাল উদ্দীন দৈনিক বাংলার অধিকার কে বলেন, আমি আমার কন্যাকে বিয়ে দিয়েছি তাতে ওদের কি সমস্যা। আমি চোখে দেখিনা। আমার স্ত্রী লাভলী তার পরিচিত ছেলের কাছে বিয়ে দিয়েছে। আমার মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে। থানা পুলিশ ও সাংবাদিকেরা আমার মেয়েকে দেখে গেছে। তারা কিছু বলেনি। তাহলে আমার মেয়েকে নিয়ে অন্যান্যদের এত মাথা ব্যথা কিসের?
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এএসএম ইব্রাহীম খলিল স্কুলের প্যাডে কিশোরীর বয়স সংক্রান্ত প্রত্যয়ন দিয়েছেন- এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ওই বয়সটি ঠিক নয়। এছাড়া আমার মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। আমি পিতা হয়ে তাকে ফেলে দিতে পারিনা। তাই আমার হারানো মেয়েকে ঘরে তুলে নিয়েছি।
এলাকাবাসী বলেন, স্থানিয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, নেতৃস্থানীয় ও সরকারী নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে কিশোরীর মা লাভলী ছেলে এবং মেয়েকে চাঁদপুরে নিয়ে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহের ঘোষনাপত্র নিয়ে বাড়ি আসেন। বাড়ি এসে সবাইকে বিয়ে হয়েছে মর্মে জানাতে শুরু করেন। বাড়ির লোকজন কিশোরীর প্রকৃত বয়সটি জানে বিধায় চারদিকে কানাঘুষা শুরু হয়। স্থানিয় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ ও বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এসে আবার চলে গেলেন। কেন আসলেন আবার কেন চলে গেলেন তা আমরা বুঝতে পারিনি। আমাদের অনেকের ছেলে মেয়ে এই কিশোরীর সাথে খেলাধুলা করে বেড়ে উঠেছে। বয়সের হারে কিশোরী কিছুটা লম্বা হয়েছে কিন্তু তার বিয়ের বয়স হয়নি। তার বর্তমান বয়স ১২ বছর। সরকারী বিধিনিষেধ অমান্য ও প্রসাশনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এই বাল্য বিয়ে সম্পাদনে কিশোরীর মা এবং ঘটনায় জড়িত কিংবা ঘটনা ধামাচাপায় সহযোগিতা করা সকলকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির অনুরোধ জানান তারা।