|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
গরম হচ্ছে রাজনীতির মাঠ, আলীগ-বিএনপি উত্তেজনা-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ-বিএনপি উত্তেজ’নায় গরম হয়ে উঠছে রাজনীতির মাঠ। মালরামারি-সংঘর্ষের পাশাপাশি বাগ্যুদ্ধে লিপ্ত দেশের শীর্ষ দুই দলের নেতারা।
পনেরো বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে বিরোধী দল বিএনপি। নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি দেখাতে এ বছরের শুরু থেকেই সভা-সমাবেশ করছে তারা। মাঠের রাজনীতিতে এগিয়ে থাকতে সক্রিয় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও। বিএনপিকে মাঠ ছেড়ে দেবে না বলে জানিয়েছে তারা।
রাজনীতির মাঠে এখন উত্তাপ
দেশের রাজনীতির মাঠে যে উ’ত্তা’প চলছে, তার শুরু মাসখানেক আগে ভোলায় বিএনপির একটি মিছিল থেকে। গেল ৩ আগস্টের ওই মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়ে এক ছাত্রদল নেতাসহ দুজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দেশের বড় দুই দল পরস্পরকে দোষারোপ করছে।এর মাসখানেক পর বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর)। এদিনের কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনা ও সিরাজগঞ্জে পু’লিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে শাওন প্রধান নামে এক তরুণ নিহত হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী ২০২৩ সালের শেষ দিকে দ্বাদশ নির্বাচন হওয়ার কথা। ভোটের সময় ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসছে। আর মাঠ দখলে রাখতে তৎপর বিএনপি-আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে রাজনৈতিক অঙ্গনেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন জেলায় দেখা দিয়েছে সংঘাত।সময় সংবাদকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন বলেন, সরকারই সংঘাত সৃষ্টি করছে। জনগণের দাবি আদায়ে বিএনপি শান্তিপূর্ণ আ’ন্দোলন করছে। জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে বিএনপি মাঠে নেমেছে। কিন্তু বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছে সরকার।
এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, বিএনপির আন্দোলন জনগণের জন্য। কাজেই জনগণের অধিকার আছে বিএনপির দাবির প্রতি সমর্থন দেয়া। কিন্তু সরকার তাতে বাধা দিচ্ছে। এতে সরকারের কী লাভ, তা সরকারের বোঝা উচিত।তিনি আরও বলেন, সরকার বাধা দিলেও গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি জনগণের হয়ে কথা বলবেই। বিএনপি কোনো বাধা মানবে না। সরকারের দায়িত্ব অনেক বেশি। বিরোধী দলকে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করতে দেয়া উচিত সরকারের। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ করছে না সরকার।
এদিকে বিএনপি আগাগোড়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কা’মাল হোসেন। সময় সংবাদকে তিনি বলেন, নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সময় মানুষের সামনে মিথ্যা তথ্য হাজির করছে বিএনপি।২০১৩ সালে যখন যু’দ্ধাপরাধীদের বিচার হয়, তখন পেট্রোলবোমা ও গানপাউডার দিয়ে ৪০৯ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছিল তারা। ২০১৪ সালে ২০০ জনকে তারা হত্যা করেছে। আর ২০১৫ সালে ১৩১ জন সাধারণ মানুষকে গানপাউডার দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে বিএনপি। বিএনপি আজ কীসের জন্য আ’ন্দোলন করছে?
বিএনপি রাজনৈতিক শক্তি দেখাতে চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগও মাঠে নেমে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) এমন দাবিই করেছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আমরা মাঠেই থাকব। মাঠ থেকেই বিএনপি-জামায়াতের সব নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র ও হিংসার জবাব দেব।’
সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভে দুদলের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি যখনই রাজপথে আসে, তখনই আন্দোলন জমাতে, দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ও সংবাদমাধ্যমে কাভা’রেজ পেতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, যাতে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। পুলিশকে আপনি আক্রান্ত করবেন, পুলিশ নিজেকে রক্ষা করবে না? অবশ্যই করবে।’আর রাজপথেই সবকিছু মোকাবিলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। সরকার হটাতে এবারের আন্দোলনই শেষ লড়াই বলে তারা নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.