|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
ঢাকা জেলার ধামরাইয়ের চাঞ্চল্যকর আমিনুর হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী শিবলু ও রাসেলকে গ্রেফতার করেছে র্যাব–দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ২৭ আগস্ট, ২০২২
ঢাকা জেলার ধামরাইয়ের চাঞ্চল্যকর আমিনুর হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী শিবলু ও রাসেলকে গ্রেফতার করেছে র্যাব
১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ক্লুলেস হত্যা কান্ডের রহস্য উন্মোচনপূর্বক হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। গত ১৭ আগস্ট ২০২২ ইং তারিখ দুপুর ০১.০০ ঘটিকার সময় ঢাকা জেলার ধামরাই থানাধীন নান্নার উপজেলার কান্দাকাউলি এলাকার পশ্চিম পাশের ধানক্ষেতে একটি রক্তাক্ত কাটা জখমসহ অজ্ঞাত যুবকের লাশ দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর মাধ্যমে স্থানীয় থানা-পুলিশ উক্ত লাশ উদ্ধার করলে দেখা যায়, নিহতের ডান পায়ের নিচে মাংস নেই এবং হাড় বেড়িয়ে গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তৎক্ষণাৎ লাশটির বিস্তারিত পরিচয় না পাওয়া গেলেও এলাকাবাসী ও স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় জানা যায় যে, নিহত আমিরুল ইসলাম সাভারের গেন্ডা টিয়াবাড়ি এলাকার ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে। পরবর্তীতে এসংক্রান্তে ভিকটিম আমিনুর ইসলাম এর মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় যার ফলশ্রুতিতে র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ আগস্ট ২০২২ তারিখ বিকাল ০৫.৩০ ঘটিকায় র্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত আমিনুর হত্যা মামলার নিম্নোক্ত মূল পরিকল্পনাকারী ও তার সহযোগী’কে সাভার মডেল থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়ঃ
ক। শিপলু (২০), জেলা- ঢাকা।
খ। রাসেল (১৬), জেলা- সিরাজগঞ্জ।
৩। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা উক্ত হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। গ্রেফতারকৃত আসামী শিপলুর বাবা মারা যাওয়ার পর আসামীর অনুমতি ছাড়াই তার মা ভিকটিমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। প্রাথমিকভাবে আসামী তা মেনে না নিলেও পরবর্তীতে সময়ের সাথে সাথে তা মেনে নিতে থাকে। কিন্তু ভিকটিম মাদকসেবী হওয়ায় আসামীর সাথে তাদের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এছাড়াও তর্কবিতর্কের বিভিন্ন সময়ে আসামী শিপলু ভিকটিমকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যেতো। পরবর্তীতে গত ১৬ আগস্ট ২০২২ দুপুর ০২.০০ ঘটিকায় ভিকটিম বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, ভিকটিম আমিরুলকে তার স্ত্রী শিল্পী বেগম সাভার থেকে ডেকে ধামরাইয়ের নান্নার ইউনিয়নের রোহিঙ্গা মার্কেট এলাকায় নিয়ে যায় এবং সেখানে জোরপূর্বক তালাক নামায় স্বাক্ষর নেয়। এরপর আমিরুল কৌশলে সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে একটি ভ্যানে উঠে রওনা হয়, কিন্তু পথিমধ্যে আসামী শিপলু, তার আপন ভাইদ্বয় এবং অন্য গ্রেফতারকৃত আসামী রাসেলের সহযোগীতায় পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম আমিনুর’কে ছুরি দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুড়ি ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
৪। গ্রেফতারকৃত আসামী’কে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য ধামরাই থানায় হন্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও উক্ত হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেফতাররের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই ধরনের নৃশংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে র্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.