|| ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়েতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ২১ আগস্ট, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। রবিবার (২১ আগস্ট) ক’ল’ঙ্কময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হা’ম’লার ১৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (২০ আগস্ট) দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নি’র্ম’মভাবে হ’ত্যার মধ্য দিয়ে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টেও গ্রেনেড হা’ম’লার ঘটনা ছিল তারই ধারাবাহিকতা। সেই ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বিরোধী চক্র এখনও নানাভাবে সোচ্চার আছে। ঐক্যবদ্ধভাবে এই অ’পশক্তির যে কোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট যখনই ক্ষমতায় এসেছে জ’ঙ্গি ও স’ন্ত্রা’সীদের ম’দত দিয়ে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর অ’পচেষ্টা করেছে। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে সারা দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। একের পর এক বো’মা হা’ম’লা, গ্রেনেড হা’ম’লা চালিয়ে জ’ঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা চালায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও জ’ঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হা’ম’লা চালায়। প্রকাশ্য দিবালোকে রাজনৈতিক সমাবেশে এ ধরনের নারকীয় হ’ত্যাযজ্ঞ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
সরকারপ্রধান বলেন, এ নারকীয় হা’ম’লা ও হ’ত্যাকা’ণ্ডের সঙ্গে জ’ড়ি’তদের গ্রে’প্তা’র করে বিচার করা ছিল সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো হ’ত্যাকারীদের রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। হা’ম’লাকারীদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। গুরুত্বপূর্ণ সব আলামতধ্বং,স করে। এ নৃ’শং’স হ’ত্যাকা’ণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে অ’পব্যবহার করে তারা ‘জজ মিয়া’ নাট’ক সাজায়। কিন্তু সত্য কখনও চাপা থাকেনি। পরবর্তীকালে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ত’দ’ন্তে বেরিয়ে আসে হাওয়া ভবন ও বিএনপি-জামায়াত জোটের অনেক কুশীলব এ হা’ম’লার সঙ্গে সরাসরি জ’ড়ি’ত।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হা’ম’লার রায় হয়। আ’দা’লত গ্রেনেড হা’ম’লার সঙ্গে জ’ড়ি’ত থাকার দায়ে বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃ’ত্যুদ’ণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে বিএনপির ভা’রপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে পলাতক তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যা’ব’জ্জীবন কারাদ’ণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ’ণ্ড হয়েছে ১১ আ’সা’মির।
তিনি বলেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আশা করি, সব আইনি বিধি-বিধান ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হা’ম’লা মা’ম’লায় রায় দ্রুত কার্যকর হবে। এ রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে দেশ থেকে হ’ত্যা, সন্ত্রাস ও জ’ঙ্গিবাদের চির অবসান হবে, জাতি ক’ল’ঙ্কমুক্ত হবে এবং বাংলাদেশ আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ-শান্তিপূর্ণ আবাসভূমিতে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ক’ল’ঙ্কময় ও নৃ’শং’স হ’ত্যাযজ্ঞের ভ’য়াল দিন। ২০০৪ সালের এ দিনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস ও জ’ঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে বর্বরতম গ্রেনেড হা’ম’লা চালানো হয়। এ হা’ম’লার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং মুক্তিযু’দ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করা, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করে হ’ত্যা, ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস, জ’ঙ্গিবাদ, দু’র্নী’তি ও দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করা।
তিনি বলেন, মহান আল্লাহর অশেষ রহমত ও জনগণের দোয়ায় আমি অল্পের জন্য প্রা’ণে বেঁচে যাই। আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রা’ণ নেতাকর্মীরা মানববর্ম তৈরি করে আমাকে রক্ষা করেন। তবে স’ন্ত্রা’সীদের গ্রেনেড হা’ম’লায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নি’হ’ত হন, আ’হত হন পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী। তাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। অনেকে দেহে স্পিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। ২১ আগস্টের বীভৎস হ’ত্যাকা’ন্ড বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ক’ল’ঙ্কময় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত থাকবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের সব অ’পচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে বাংলাদেশের জনগণ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পুনরায় বিপুল ভোটে বিজয়ী করে। ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিহিং’সার রাজনীতি বাদ দিয়ে দেশে মতো বিচার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সন্ত্রাস ও জ’ঙ্গিবাদ দমনে ‘জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে দেশে শান্তি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত সাড়ে ১৩ বছরে আম’রা প্রতিটি ক্ষেত্রে কাঙিক্ষত অগ্রগতি অর্জন করেছি। এ সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের ম’র্যাদা অর্জন করেছে। আম’রা আজ আত্মম’র্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মা’থা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। বাণীতে তিনি ২১ আগস্টের সব শহীদের আত্মা’র মাগফেরাত কা’মনা করেন এবং আ’হতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.