মোঃ হামিদুল ইসলাম
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মধ্যবিত্ত পরিবারের এক গৃহবধূকে ইউপি চেয়ারম্যান আদমশুমারীর কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান স্পর্শ কাতর বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য কয়েক দফা বৈঠক করে ব্যর্থ হওয়ায় ঘটনার ১৮ দিন পর গতকাল সোমবার (২৭ জুন) ভূক্তভোগী ঐ নারী নিজে বাদী হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৪) খ ধারায় থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নে। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান (আতা) সম্প্রতি পরিচালিত আদমশুমারির কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য তার এলাকার জনৈক এক গৃহবধূকে বাসায় ডাকেন। গত ৯ জুন সকাল ৯ টার দিকে ঐ গৃহবধূ তার বাসায় গেলে বাসা ফাঁকা থাকার সুযোগে চেয়ারম্যান আতাউর রহমান তার উপর জোরপূর্বক পাশবিক নির্যাতনের চেষ্টা চালান। এসময় গৃহবধুটি তার সম্ভ্রম রক্ষায় চেয়ারম্যানের সাথে ধস্তাধস্তি করে ঘর থেকে বেরিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। এরপর একটি অটোরিক্সা যোগে গৃহবধূ বাড়ি ফেরার চেষ্টা করলে চেয়ারম্যান তাতেও বাধা দেন এবং বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এমনকি কাউকে ঘটনাটি জানালে তার আদমশুমারির কাজটি হবে না বলেও হুমকি দেন । পরবর্তীতে গৃহবধূ বাড়িতে ফিরে বিষয়টি স্বামীসহ কয়েক জনকে অবহিত করেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে উত্তেজনা কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির মাধ্যমে বিষয়টি ফয়সালার কয়েক দফা চেষ্টা করে ব্যর্থ হন ।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত শনিবার বিকালে উলিপুর পৌরসভায় উপজেলার সকল চেয়ারম্যান, থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য ও ভুক্তভোগী গৃহবধূ'র দায়িত্বশীল প্রতিনিধির উপস্থিতিতে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান তার দোষ স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে সবার সামনে অঙ্গীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এসময় গৃহবধুটির অভিভাবকদের সঙ্গে চেয়ারম্যানের কোলাকুলির মাধ্যমে স্পর্শ কাতর ঘটনাটির নিষ্পত্তি হয় বলে বৈঠকের নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেন।
অন্যদিকে বৈঠকের সিদ্ধান্ত ভুক্তভোগী গৃহবধূর মনঃপুত না হওয়ায় তিনি সোমবার নিজে বাদী হয়ে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পৌরসভার মেয়র মামুন সরকার মিঠু বলেন, ভুক্তভোগী গৃহবধূর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়েছে। এরপরেও মামলা কিভাবে হল আমার জানা নেই। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির জানান, মামলা হয়েছে তবে চেয়ারম্যানকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত অভিযুক্ত চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হয়নি বলে জানা গেছে।