|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
নোয়াখালী সোনাইমুড়িতে নারীকে গলা কেটে হত্যার চার দিন পরে শাহাদাত গ্রেফতার-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ২০ জুন, ২০২২
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে এক নারীকে গলা, হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার ৪ দিন পর হত্যাকারী মোঃ শাহাদাত হোসেন জীবন (২৪) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামি উপজেলার পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক মোঃ শামছুল আলম দিলসাদের ছেলে। রোববার (১৯জুন) দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ শহীদুল ইসলাম।
এ সময় তিনি জানান, গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ি থেকে পরকিয়া প্রেমিক শাহাদাত হোসেন জীবন কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর তার তথ্যের ভিত্তিতে রোববার সকালে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রামের একটি সবজি ক্ষেত থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চুরি, মোবাইল এবং ওড়না উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী স্বীকারোক্তি দিয়েছে চলতি বছরের ২৯ মে তার সাথে ভিকটিম জান্নাতুল ফেরদাউস পাখি তালাকপ্রাপ্ত ঐ নারীর ফেইসবুক মেসেঞ্জারে পরিচয় হয়।
এরপর হতে দুইজনের মাঝে মাঝে কথা হয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে একবার দৈহিক সম্পর্ক হয় । পরবর্তীতে ভিকটিম আসামিকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে আসামি তাকে এড়িয়ে যায়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় । গত মঙ্গলবার (১৫ জুন) পরস্পর যোগাযোগ করে সোনাইমুড়ীর পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজী বাড়ির সংলগ্ন সবজি ক্ষেতের দক্ষিণ পাশে নির্জন স্থানে যায় ।
সেখানে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামি তার নিকটে থাকা ছোরা বের করে প্রথমে ভিকটিমের গলায় পোচ দেয় । এতে ভিকটিম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য আসামি ভিকটিমের গলায় উপর্যুপরি ধারালো ছোরা দিয়ে জবাই করে হাত ও পায়ের রগ গোলাকৃতিভাবে কেটে দেয় ।
জানা যায়, এ হত্যাকান্ডের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাইমুড়ী থানার উপপরিদর্শক শাহ আলম দেওটি ইউনিয়নের বাসিন্দা নুর নবী, স্বপন ও সেনবাগ উপজেলার মনির ও আবু সুফিয়ানকে আটক করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যাকারী শাহাদাত হোসেন জীবনের সাথে ঐ নারীর পরকিয়া প্রেমের তথ্য পাওয়া যায়। পরে জীবনের মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে তাকে আটক করা হয়। আটকের পর তার জবানবন্দির ভিত্তিতে আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে জান্নাতুল ফেরদাউস পাখি তাঁর বড় বোনের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাত ৮টার পর থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি। পরের দিন বুধবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি উঁচু সবজি ক্ষেত থেকে পাখির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাখির ভাই বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.