কৃষি বৈচিত্র্যে ভরপুর চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা। খাদ্যশস্য উৎপাদনে অন্যতম একটি উপজেলা। মেঘনা ধনাগোদা সেচপ্রকল্পের আওতায় মোট জমির পরিমাণ ১৭০০০ হেক্টর ও চরঅঞ্চলে ১৩৯০ হেক্টর সহ নীট ফসলী জমি ১৮,৩৯০ হেক্টর। এর মধ্যে এক ফসলী জমি ৪৪২৯ হেক্টর, দুই ফসলী জমি ১০৭০২ হেক্টর তিন ফসলী জমি১৭০০ হেক্টর। এই উপজেলাকে কৃষিক্ষেত্রে সমৃদ্ধ ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সালাউদ্দিন। তিনি বিসিএস (কৃষি) ক্যাডারের ২৯ ব্যাচের একজন চৌকশ অফিসার। গত ৫ ই জুন ২০১৭ খ্রি. তারিখে উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই কৃষি বিভাগের কার্যক্রমকে কৃষকদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়াসহ আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণে দৃশ্যমান কাজের তাগিদে, কখনো অফিসে,কখনো ফসলের মাঠে আবার কখনো ছোটাছুটি করছেন বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে। কৃষকদের ন্যায্য মুল্যে সার নিশ্চিত করনে কখনো চালাচ্ছেন মনিটরিং কার্যক্রম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষকদের কাছে উচ্চমূল্যের ফসল চাষ ও এর সম্প্রসারণে দলগতভাবে কাজ করছেন ওই কৃষি অফিসার। কৃষিক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অর্জনসমূহ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চলমান কার্যক্রম সমূহ বাস্তবায়নে সম্পূর্ণভাবে সচেষ্ট রয়েছেন। শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি, সাথী ও আন্তঃমিশ্র ফসল চাষ, কন্দাল ফসলের চাষ, ফুল চাষ, মসলা জাতীয় ফসলের চাষ, মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভার্মি কম্পোস্ট, ট্রাাইকো কম্পোস্ট এর ব্যবহার, তিল চাষ, ডাল জাতীয় শস্যের সম্প্রসারণ, তেল জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, মৌচাষ, নতুন ফসল পেরিলা, সূর্যমুখী,তরমুজ এর সম্প্রসারণ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে কৃষকদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নসহ নানা ধরনের জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। দায়িত্ব নেয়ার পর বিগত কয়েকটি ফলদ বৃক্ষমেলা করেছেন যা উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি কর্তৃক প্রশংসিত হয়। ২০২২ মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে উপজেলা পরিষদ চত্তরে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মেলায় তার নেতৃত্বে কৃষি বিভাগ কৃষি ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা তথ্যসহ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন। ২০২১-২২ অর্থ বছরে অত্র উপজেলার গজরা ইউনিয়নে সমালয়ে ধান চাষে সফলতা অর্জন করেন। মাননীয় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর ড.শামসুল আলম তার কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ওই কর্মকর্তার নেতৃত্ব, গুন ও বিচক্ষণতায় উপজেলার ব্লক পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা,স্থানীয় শিক্ষিত কৃষি উদ্যোক্তাগণের সমন্বয়ে মতলবের কৃষি পরিবারকে সকলের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রায়শই দেখা যায়,ওই কর্মকর্তার নেতৃত্বে কৃষি বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ কৃষকদের স্বার্থে, কৃষির উন্নয়নের স্বার্থে ফসলের মাঠে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন ও মতলবের ভাবমূর্তিকে উজ্জল করে রাখার কাজ করে যাচ্ছেন।
ওই অফিসার সম্পর্কে তরুণ শিক্ষিত “কৃষি উদ্যোক্তা পরিষদ মতলব উত্তর উপজেলা,চাঁদপুর” এর সদস্য শরীফুল ইসলাম,জাহিদ হাসান মিঠু,হোসাইন আল মামুন,কাউসার, রিয়াদ হোসেন,শিপু,হেলাল সিকদার,সোহেল সরকার,হাসান দেওয়ান,কাইয়ুম সরকার,হাবিব উল্যাহ,আরিফ সরকার,ও মতলব উত্তর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আঃ লতিফমিয়াজী বলেন, আমাদের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একজন মানবিক মানুষ। তিনি সর্বদা আমাদের কল্যাণের জন্য কাজ করছেন। শুধু দিন নয় এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বক্ষণিক আমাদের সেবা করে যাচ্ছেন। ওই কর্মকর্তা একজন কৃষকবান্ধব কর্মকর্তা।
চাঁদপুরের অন্যান্য উপজেলার চেয়ে মতলব উত্তর উপজেলায় সার, প্রণোদনা, পুনর্বাসন তুলনামূলক কম বরাদ্দ প্রদান করা হতো। কিন্তু উপজেলা কৃষি অফিসার এই উপজেলায় যোগদান করার পর পূর্বের তুলনায় এই বরাদ্দের পরিমাণ অন্যান্য উপজেলার তুলনায় আনুপাতিক হারে বৃদ্ধির জন্য সবসময় সচেষ্ট ছিলেন এবং এই প্রণোদনা ও পুনর্বাসন যেন প্রকৃত কৃষকেরা পাই সেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও মতলব উত্তর নতুন নতুন ফসল অন্তর্ভুক্ত করণ এবং এই উপজেলার ফসলের রপ্তানি বৃদ্ধি ও দেশের বিভিন্ন উপজেলার সবজি সহ অন্যান্য ফল এর মার্কেটিং তৈরিতে সাহায্য করেছেন। মতলব উত্তর উপজেলার উৎপাদিত ধানের দাম সঠিক পাওয়ার জন্য উপজেলা খাদ্যগুদামে কৃষকদের উন্মুক্ত ভাবে ধান বিক্রয় নিশ্চিতকরণে তাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এছাড়া খামার যান্ত্রিকীকরণে কৃষকদের মাঝে ভর্তুকিতে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ, মিনি গার্ডেন টিলার, ফুট পাম্প স্প্রেয়ার বিতরণ করেছেন। চরের কৃষিতে এনেছেন বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এক সময়ের অনাবাদি চর এখন শস্য ভান্ডারে পরিণত হয়েছে। সকল ধরনের ফসল চাষ হচ্ছে বোরো চরে। সারি সারি সবজি ও বিভিন্ন আন্তঃফসল চাষ চরের কৃষিকে দিয়েছে বহুরূপিতা।
এই কৃষি অফিসার বলেন, যদি এই উপজেলায় আরো কিছুদিন থাকা সম্ভব হয় তাহলে উপজেলার কৃষি শুধু চাঁদপুর নয় পুরো বাংলাদেশের কৃষির জন্য অনুকরণীয় হবে, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। তিনি আরো বলেন, এই উপজেলার কৃষকরা অনেক অগ্রগামী এবং নতুন ফসল চাষে যথেষ্ট আগ্রহী তাই এই উপজেলার কৃষি খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আমার অফিসের সবাই একটা টিমওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করি। এছাড়া কৃষি উদ্যোক্তা পরিষদ মতলব উত্তরের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তারা ও বেশ আগ্রহী ও আমাদের কাজ সম্প্রসারণের জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করছেন। যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে তা দ্রুত বাস্তবায়নে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কৃষি সম্প্রসারণ অফিসারসহ মাঠ পর্যায়ে সকল ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ নিরলসভাবে কৃষকের পাশে থেকে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন।