|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশের তারিখঃ ১৪ মে, ২০২২
গ্রীষ্মকাল মানেই হচ্ছে নানা জাতের ও নানা স্বাদের রসালো ফলের সমাহারের কাল। সেই সব ফলের সমাহারের মধ্যে অন্যতম আকর্ষন হচ্ছে নওগাঁর সুমিষ্ট ও সুস্বাদু আম। বর্তমানে দেশে আম উৎপাদনে দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে সীমান্তবর্তি বরেন্দ্র জেলা নওগাঁ। চলতি বছরেও জেলার ১১টি উপজেলায় নতুন করে বিস্তৃতি লাভ করছে নানা জাতের ও স্বাদের আমের বাগান। পুরো দেশসহ বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছে নওগাঁর সুস্বাদু নানা জাতের আম। আগামী ২৫মে থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নওগাঁসহ দেশের বাজারে আসছে চলতি মৌসুমের নওগাঁর বাগান গুলোর আম।
নওগাঁ জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর বিভিন্ন বাগানে উৎপাদিত ৮ জাতের আম সংগ্রহের সময় নির্ধারন করেছে। আগামী ২৫মে গুটি/স্থানীয় জাতের আম প্রথম সংগ্রহ করার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে নওগাঁর আম সংগ্রহ অভিযান। এরপর ৩০মে গোপালভোগ আম, ৫ জুন খিরসাপাত/হিমসাগর আম, ৮ জুন নাগ ফজলী আম, ১২ জুন ল্যাংড়া/হাঁড়িভাঙ্গা আম, ২২ জুন ফজলী আম আর আমের ভোক্তাসহ বাজারে সাড়া ফেলানো আমরুপালী জাতের আম ২৫ জুন এবং সর্বশেষ ১০ জুলাই আশ্বিনা/বারী-৪/ গৌড়মতি আম বাজারে আসছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ জানান, জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে বাণিজ্যিক ভাবে আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত হচ্ছে পোরশা, সাপাহার, ধামইরহাট ও পত্নীতলা উপজেলা। তবে দিন দিন আম চাষ লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য উপজেলাতেও বাণিজ্যিক ভাবে প্রতি বছর নতুন নতুন আমের বাগান বিস্তার লাভ করছে। চলতি মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ২৯ হাজার ৪শত ৯০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে আম চাষ হয়েছে। গত বছর ছিলো ২৫ হাজার ৮ শত ৫০ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে চলতি বছর নতুন করে ৩ হাজার ৬ শত ৪০ হেক্টর জমিতে আম চাষ বেশি হয়েছে। তাই বলা যেতে পারে প্রতি বছরই যে ভাবে নওগাঁয় আমের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সরকারি ভাবে নওগাঁর জন্য “আমের রাজধানীর খেতাব” পাওয়া বর্তমানে সময়ের দাবী।
তিনি আরো জানান যে, বর্তমান আবহাওয়া আমের অনুকুলে রয়েছে। এই আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত বিরাজ করলে চলতি মৌসুমে জেলার আমচাষীরা আমের বাম্পার ফলন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক ভাবেও লাভবান হতে পারবেন। এছাড়া বিষমুক্ত ভাবে আম উৎপাদন ও বাজারজাত করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার আমচাষীদের সবসময় পরামর্শ ও সার্বিক ভাবে সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে এবং শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখা হবে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান পিএএ বলেন, ঐতিহাসিক নিদর্শনের পাশাপাশি নওগাঁর আরেকটি ব্র্যান্ডিং হচ্ছে আম। জেলার আমচাষীরা যেন সঠিক সময়ে পরিপক্ক আম সংগ্রহ শেষে বাজারজাত করে বেশি লাভবান হতে পারেন সেই বিষয়টি বিবেচনা করে প্রতি বছরের মতো চলতি বছরও নওগাঁর আম বাগান থেকে আম সংগ্রহ করার সঠিক সময় নির্ধারন করা হয়েছে। পাশাপাশি আমচাষীরা যেন সঠিক ভাবে তাদের বাগানের আমগুলো স্থানীয় বাজারে বাজারজাত করতে পারেন সেই বিষয়ে সকল প্রদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্ব স্ব উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আমি আশাবাদি আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছর নওগাঁয় সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে আম বেচা-কেনা করতে পারবেন।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.