|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
একটি কাল্পনিক প্রেম সংলাপ মোনালিসা প্রেম”
প্রকাশের তারিখঃ ৪ মে, ২০২২
আষ্টাদশ শতাব্দীতে বিশ্ববাসীকে তাঁক লাগিয়েছেন চিত্রশিল্পী লিওনার্দোদা ভিঞ্জি তাঁর মোনালিসা চিত্রকর্মের মাধ্যমে।
তিনি ইটালীর রেনোসাসে ১৪৫২ সালে পৃথিবীতে আসেন এবং ১৫১৯ সালে মৃত্যু বরণ করেন। ১৪৭৮ সালে তিনি তাঁর হাতের যাদুতে অংকিত করেছেন এক নারীর ছবি আর ওই ছবির নাম দিয়েছিলেন "মোনালিসা"।
তাঁর অংকিত ওই ছবি দেখে তৎকালীন দার্শনিক, প্রেমিক, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, অভিনেতাসহ বিভিন্ন শ্রেনীর চিন্তাশীল ব্যক্তিগন নিজ নিজ মননে নানান ধরনের ভাবনায় ডুবে গিয়েছিলেন। একেকজন একেক রকম ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন। তবে ওই সময় যদিও এখনকার মত পৃথিবীটা প্রেম বান্ধব ছিলোনা তবুও সবচাইতে বেশি ভেবেছেন প্রেমিকেরা। তাঁরা তাঁদের প্রিয়সীকে মোনালিসার সাথে তুলনা করতেন।
বিশেষ করে কবি, সাহিত্যিকগন মোনালিসার চোখ ও টানাটানা ঠোঁটের দু'পাশ বেঁয়ে যে অমলিন হাসি গলে পড়েছে তা নিয়ে রচনা করেছেন বহু সাহিত্য। যুগ যুগ ধরে চলছে গবেষণা। বেড়িয়ে আসছে নতুন নতুন রহস্য ঘেরা প্রেম কাহিনী। অনেক প্রেমিক মোনালিসার প্রেমেও পড়েছিলেন। তেমনি আজ তোমাকে আমার কাছে মোনালিসার মতই লাগছে। মোনালিসার মাথার চুল ঘন মেঘাচ্ছন্ন আকাশের মত আর বোশেখের গগনে উদিত সূর্য্যের ন্যায় তার মুখমণ্ডল। মেঘের আভার সাথে লুকোচুরি করে যেভাবে সূর্য্যের আলো জমিনে ঠাঁই নেয় আর তাতে যেভাবে প্রকৃতির রূপ হয় সৌন্দর্যময় ও নান্দনিক তেমনি যেন প্রেমিকার মনকে তাড়িত করে প্রেম জগতে। নতুন নতুন ভাবনায় প্রেম জগতকে সমৃদ্ধ করেছে মোনালিসার এই ছবি। তুমিও তাঁরই মত। আমাকে ভাবতে শিখিয়েছো। নিভু নিভু মনটাকে জাগাতে সহায়তা করেছো। জাগিয়েছো মরে যাওয়া মনটাকে। যা এই জীবনে প্রথম এবং শেষ। যে মনের গহীনে শুধু তুমি আর তুমি। দেহ আর মননে আষ্টেপৃষ্ঠে যে জায়গাটুকু দখল করেছো সেটা অতিতে কেউ পারেনি। তোমার পূর্বে আমি একপেশে ভাবনা নিয়েই পথ চলেছি। এখন যত ভাবনা তোমায় ঘিরে। যতদূরে থাকিনা কেন তোমার গায়ের গন্ধ আর ছন্দ তোলা কন্ঠ আমাকে মোহিত করে। এভাবে ভাবতে ভাবতে আর চলতে চলতে তুমি যেন হয়ে উঠেছো আমার জীবনের অপরিহার্য অংশ হিসেবে। যদি আমি ছায়া হতে পারতাম তবে তোমার দেহের সাথে সাথে চলতাম। যদি তোমার গায়ের জামা হতাম তাহলে গায়ের সাথে লেপটে থাকতাম। যদি তোমার মুখের হাসি হতাম তাহলে ওই ঠোঁট দুটোতে সারাক্ষণ বসে থাকতাম। যদি তোমার গালায় পড়া মালা হতাম তাহলে বুকের উপর জায়গা করে নিতাম। যদি তোমার বিছানার চাদর হতাম তাহলে তোমার নিচে পৃষ্ট হয়ে সুখ খুঁজে নিতাম। তোমায় পেয়ে জীবনে খুঁজে নিতাম হাজার সুখ আর শত শ্রমে সমৃদ্ধময় জীবনের ঠিকানা।
আর তোমার বিহনে একদা এভাবেই তোমায় তোমায় করে না পাওয়ার বেদনাকে বুকে জড়িয়ে নিজেকে নিঃশেষ করে দিক হারা এক পথিক।
আমার বিশ্বাসে আর নিঃশ্বাসে সদা-সর্বদা যে নামটি মানসপটে উদিত হয় তা শুধুই তুমি। অথচ কে তুমি? কেন এমন লাগছে?
তোমার বিহনে আমার অসহায়ত্ব আমাকে হততায় পরিনত করছে।
সব কিছু মিলে এই হৃদয়ে আর কোনো খালি জায়গা নেই। যেটুকু ছিলো সেটুকু তোমার নামে সাব-কবলা করেছি। যা আর ফিরিয়ে আনতে সম্ভব নয়। অবশেষে নিঃস্বতার এক দলিল নিয়ে নিজেকে পুড়িয়ে ছাঁই করতে পারবো তবুও তোমাকে দেয়া জায়গাটুকু ফেরত নিতে পরবোনা। ওগো সোনা----তোমাকে আমি ওই জমির মালকিন বানাতে চাই। যাতে তুমি করবে আবাদ। কারন আমিতো তোমাতে গলে মজে আছি। ফাগুন আসবে চলে যাবে। ফুল ফুটবে ঝরে যাবে। কিন্তু আমি চাই না সেটা হতে যেটা ফুল ও ফাগুন করেছে। আমি চাই সারাটা জীবন তোমার মাঝে নিজেকে কবর করে রাখতে। যে কবরে শুধু আমিই থাকবো আর কেউ নয়। কেননা, তোমার পূর্বে আমি কখনও নিজেকে চিনিনি। তুমিই আমার আমিকে চিনতে শিখিয়েছো। আমি তোমার কাছে আমৃত্যু কৃতজ্ঞতা ভরে নিজেকে সোপর্দ করলাম। ক্রন্দনরত হৃদকন্ঠ আর করজোড়ে তোমার প্রতি নিতান্ত অনুনয় আমাকে ছেড়ে যেওনা, ভুলে যেওনা। আমি যে তোমার ভেতরে মজে তোমাতেই হয়েছি দেওয়ানা। তুমি বিনে আমি নিস্প্রভ নিঃপ্রাণ। হয়তো নিঃশ্বাস থাকবে দেহের প্রয়োজনে কিন্তু মন মরে যাবে তোমার বিহনে---------
মোঃ হাসানুজ্জামান, শাহরাস্তি চাঁদপুর
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.