|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
চট্টগ্রামের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি জিতেন কান্তি গুহকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ৩০ এপ্রিল, ২০২২
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি জিতেন কান্তি গুহকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তাঁর জামাও খুলে নেওয়া হয়।
আজ শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ইফতার অনুষ্ঠানের আগে পূর্ব হাইদগাঁও গাউছিয়া কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই আওয়ামী লীগ নেতা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি। মারধরের ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার গাউছিয়া কমিউনিটি সেন্টারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শুরুর আগে জিতেন কান্তি গুহকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন দলের প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী তাঁকে দেখতে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য শহীদুল ইসলাম দৈনিক বাংলার অধিকার কে বলেন, বিকেলে ইফতার অনুষ্ঠান শুরুর আগে বেলা তিনটার দিকে হঠাৎ হাইদগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান বি এম জসিমের নেতৃত্বে একদল লোক এসে প্রথমে আহ্বায়ক মাহফুজুল হককে খোঁজাখুঁজি করে গালিগালাজ শুরু করেন। হঠাৎ তাঁরা অতর্কিত জিতেন কান্তি গুহকে ধরে মারধর শুরু করেন। এমনকি তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
এসময় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চমেকে নিয়ে যান। তিনি আরও বলেন, এর আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাহফুজুল হক ইফতার অনুষ্ঠানের ব্যানারে ভুল থাকার কথা বলে ব্যানারটি খুলে নিয়ে যান।
মারধরের ঘটনায় ইফতার অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। সেখানে সামশুল হক চৌধুরীর প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল। বিশেষ অতিথি হিসেবে জিতেন কান্তি গুহের নাম ছিল ব্যানারে। তবে ব্যানারে ইউপি চেয়ারম্যান বি এম জসিমের নাম ছিল না।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান বি এম জসিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে জিতেন কান্তি গুহের ওপর এলাকার কিছু লোকজন ক্ষুব্ধ। হামলা কারীদের অভিযোগ মানুষ তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিল না। আজ অনুষ্ঠানে পেয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায় কিছু ক্ষুব্ধ লোকজন। আমি হইহুল্লোড় শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করি।’
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, অনুষ্ঠানের ব্যানারে ইউপি চেয়ারম্যান বি এম জসিমের নাম নাকি দেয়নি। এতে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে জিতেন কান্তি গুহের ওপর হামলা চালিয়েছেন। তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার ছবি পেয়েছি। জিতেন কান্তি গুহকে চমেকে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের নিজেদের মধ্যকার বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। মাহফুজুল হক-শহীদুল আলম ও ইউপি চেয়ারম্যান বি এম জসিমের নেতৃত্বে আলাদা পক্ষ রয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদের চট্রগ্রাম জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আগামী কাল শনিবার দুপুর ২.৩০ টায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খিসটান ঐক্য জোটের অভিযোগ এটি একটি পরিচালক পরিকল্পিত ঘটনা।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.