এবার যু’ক্তরাষ্ট্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমা’র (এস কে) সিনহার একটি তিনতলা বাড়ির সন্ধান পেয়েছে দুদক।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা যু’ক্তরাষ্ট্রে তিনতলা একটি বাড়ি কিনেছেন। ছোট ভাই অনন্ত কুমা’র সিনহাকে ব্যবহার করে তিনি বাড়ি কেনার অর্থ বাংলাদেশ থেকে আ’মেরিকায় পাচার করেছেন। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রও দুদকের হাতে এসেছে। তিনি বলেন, বিদেশে অর্থ পাচারের অ’ভিযোগে কানাডা, যু’ক্তরাষ্ট্র, দুবাই, সিংগাপুরসহ বিভিন্ন দেশে তার সম্পদের তথ্যের জন্য চিঠি দিয়েছেন অনুসন্ধান কর্মক’র্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান। চিঠির জবাবে যু’ক্তরাষ্ট্র থেকে এস কে সিনহার তিনতলা বাড়ি কেনার রেকর্ডপত্র পায় দুদক।
জানা যায়, এস কে সিনহার ছোট ভাই অনন্ত কুমা’র সিনহা আ’মেরিকায় একজন ডেন্টিস্ট হিসেবে কর্ম’রত। আ’মেরিকার একটি ব্যাংক থেকে ৩০ বছরের জন্য ১ লাখ ৮ হাজার ৭৫০ ডলার ঋণ নিয়ে ১ লাখ ৪৫ হাজার ডলার দিয়ে একটি বাড়ি কেনেন তিনি। ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার ক্যাশ দিয়ে আরেকটি বাড়ি কেনেন।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত নিউজার্সির প্যাটারসনে অবস্থিত ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে অনন্ত কুমা’র সিনহার অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়। এছাড়া ২০১৮ সালের ৫ মা’র্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ৬০ হাজার ১০ ডলার জমা হয়। এসব ডলার ইন্দোনেশিয়া ও কানাডার রয় গ্রুপের কাছ থেকে পাওয়া, যা প্রকৃতপক্ষে একটি সেল কোম্পানি।
অনন্ত কুমা’র সিনহা বড় ভাই সুরেন্দ্র কুমা’র সিনহাকে নিয়ে ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে যান, তখন তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান, আ’মেরিকার প্যাটারসন এলাকায় বাড়ি কেনার জন্য বন্ধুর কাছ থেকে তিনি ফান্ড পেয়েছেন। প্রকৃতপক্ষেই সুরেন্দ্র কুমা’র সিনহা বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অ’বৈ’ধ অর্থ অর্জন করে তা হুন্ডিসহ বিভিন্ন কায়দায় যু’ক্তরাষ্ট্রে পাচার করে তার ছোট ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে অর্থ ট্রান্সফার করেন। এ দিয়ে ১৭৯ জ্যাপার স্ট্রিট, প্যাটারসন নিউ জার্সি ০৭৫২২-তে ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার খরচ করে একটি বাড়ি কেনেন। সুতরাং বাড়িটি পরোক্ষভাবে সুরেন্দ্র কুমা’র সিনহারই।
সুরেন্দ্র কুমা’র সিনহা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় অ’বৈ’ধভাবে অর্থ উপার্জন করে ভোগ দখলে রেখে এবং অ’বৈ’ধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান গো’প’ন করে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার পাচার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারা ও ১৯৪৭ সনের দু’র্নী’তি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুদক তার বি’রু’দ্ধে অ’ভিযোগ আনছে বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মা’ম’লায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে চার বছর এবং সাত বছরের কারাদ’ণ্ড দিয়েছেন আ’দা’লত। এর মধ্যে ঋণ জালিয়াতির মা’ম’লায় চার বছর এবং অর্থ পাচারের মা’ম’লায় সাত বছরের কারাদ’ণ্ড দেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই ও ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বি’রু’দ্ধে মা’ম’লা ও অ’ভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট তাদের বি’রু’দ্ধে অ’ভিযোগ গঠন করেন আ’দা’লত।
তৎকালীন ফারমা’র্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের মা’ম’লায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমা’র সিনহাসহ ১১ জন আ’সা’মির আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।