|| ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
মেহেরপুরে গত ৩ দিনের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
মেহেরপুরে গত ৩ দিনের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত। ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। গম,আলু,টমেটোসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা।
গত বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি), আকাশে কালো মেঘ আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি বৃষ্টিপাত হয়েছে যা আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত টানা বর্ষনে সড়ক ও মাঠে ময়দানে পানি জমে গেছে। থেমে থেমে মেঘের গর্জনে জানিয়ে দিয়েছে বর্ষার আমেজ।
বৃষ্টির কারণে কাজে কর্মে বের হতে পারেননি কর্মজীবী ও দিনমজুর, নির্মান শ্রমিকরা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। পথেঘাটে যানবাহন ও লোকজনের চলাচলও ছিল খুবই কম। বিপাকে পড়েছে দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল রিকশা, অটোভ্যান, পাখি ভ্যান, আলগামনসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
অন্যদিকে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে আগাম গম চাষি, টমেটো চাষি ও আলু চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার হিন্দা গ্রামের আলু চাষি তৌহিদুর রহমান জানান, আড়াই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। বৃষ্টির পানি এখনও জমিতে জমে রয়েছে এর কারনে আলুতে পচন, স্পট ও ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ জানান, শীতের শেষে বসন্তে আগমনীতে হঠাৎ আষাঢ়ের বৃষ্টিতে দৈনন্দিন জীবনে নেমে এসেছে স্হবিরতা এবং এ বৃষ্টিতে আলু, টমেটো ও সরিষার ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে আশংকায় রয়েছেন।
গাংনী উপজেলার সাহারবাটী গ্রামের শমসের আলী জানান, মাঘের শেষে বৃষ্টির কারণে রাস্তায় রিকশা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাছাড়া যাত্রী সংখ্যাও নেই বললেই চলে। সকাল থেকে বসে থাকলেও রাস্তায় মানুষের চলাচল একেবারেই নেই।
গাংনী উপজেলার কাথুলী, সাহারবাটী, কাজিপুর, তেঁতুল বাড়িয়া ও শ্যামপুর ইউনিয়ন সরেজমিনে ঘুরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি পরিলক্ষিত হয়েছে। আগাম গম চাষিদের গম, সরিষা, ভুট্টা, টমেটো ও আলুসহ সবধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
গরিব পরিবারের অনেক বাড়ির টিনের চাল ও বেড়া উড়ে গেছে।
তেঁতুল বাড়িয়া গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান জানান, ৩ বিঘা জমিতে আগাম গমের আবাদ করেছি। গম দানাদার হওয়ার কারণে ঝড়ো বাতাসে তা মাটির সাথে নুইয়ে পড়েছে।
কাজীপুরের টমেটো চাষি ফয়সাল জানান, টমেটো জমিতে এখনও পানি জমে রয়েছে। এতে করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন। একই গ্রামের দিনমজুর রহমত মিয়া বলেন, আলুর জমিতে কাজে এসেছিলাম, পানি জমে থাকায় কাজ বন্ধ, তাই ফিরে যাচ্ছি।
মাইলমারী গ্রামের জনৈক চাষি জানান, গমের জমিতে প্রায় ৪০ ভাগ গম মাটিতে নুইয়ে পড়েছে।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, যেহেতু বৃষ্টি থেমে গেছে। শনিবার রাতে নতুন করে বৃষ্টি না হলে তেমন একটা ক্ষতি হনেনা। হালকা বাতাসে কিছু জমির ফসল মাটিতে নুইয়ে পড়েছে, রোদ বেরুলে তা আবার স্বাভাবিকভাবে পূনরায় দাঁড়িয়ে যাবে।
তবে কৃষকদের অনেকেই জানান, গত কয়েকদিনের শৈত্য প্রবাহ ও ৩ দিনের ঝড়ো হাওয়া এবং গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না।
এমতবস্থায় সরকারি ভাবে কিছুটা ক্ষতি পূরণে সহায়তা করা হয় তাহলে কৃষকরা আবারও কৃষি কাজে লেগে থাকবে এবং লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
এব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.