কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরীতে ১৭ জানুয়ারি সোমবার পৃথক দু'টি দুর্ঘটনায় ২ শিশু নিহত হয়েছে।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় নাগেশ্বরী থানার অন্তর্গত এ.এন ব্রিকস ইটভাটায় মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরের চাপায় পিষ্ট হয়ে মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়েছে তিন বছর বয়সী ইমরান হোসেন সাদিক নামের এক শিশুর। সোমবার, ১৭ জানুয়ারি নাগেশ্বরী থানার অন্তর্গত নেওয়াশী ইউনিয়নের গাগলা বাজার সংলগ্ন বলদীটারী মাষ্টার পাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইট তৈরীর এই সময়ে প্রত্যেকটি ইট ভাটায় প্রতিনিয়ত বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে অসংখ্য ট্রাক্টর মাটি পরিবহন করে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে, গ্রামের ছোট ছোট শিশু কিশোরেরা এসব গাড়ি দেখলে পিছে পিছে দৌড়ানো গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করে, যা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হলেও তাদের মাথায় সেসব কাজ করে না, শিশু ইমরানও তার মায়ের কাছে বায়না ধরে অন্যান্য শিশুদের সাথে এসব গাড়িতে উঠবে, তার মা অসাবধানতাবশত শিশুর ইচ্ছাপূরণে দু'বার সে গাড়িতে তুলে দেন এবং যাতায়াত শেষে নামিয়ে নেন, কিন্তু তৃতীয়বার ইটভাটায় উঁচু স্থানে উঠতে গেলে শিশু ইমরান উপর থেকে পড়ে যায় ও চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে নাগেশ্বরী সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উভয়পক্ষের সমঝোতায় শিশুটির লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যদিও ট্রাক্টর, ট্রলি বা মাটি পরিবহনের কাজে এসব স্থানীয় পর্যায়ে নির্মিত গাড়িগুলোর ড্রাইভারেরা গাড়ি চালানো ও এ বিষয়ে যথেষ্ট পরিপক্ক ও পারদর্শী নন তারপরেও জীবনের তাগিদে প্রয়োজনে হাতে তুলে নেন গুরুদায়িত্ব। ফলে খেয়ালে বে-খেয়ালে ঘটছে এমন নানান দুর্ঘটনা। একই উপজেলায় অন্য একটি দুর্ঘটনায় অটোরিকশা চালাতে গিয়ে অটো থেকে পড়ে গিয়ে শিশু রাকিব (৩) নিহত হয়। ঘটনা সুত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভিতরবন্দের দোয়ানী পাড়া সড়কে মনের অজান্তেই অটোচালক চাবিসহ অটোরিকশা রেখে বাড়িতে খেতে যায়। পাশেই ২ জন সহপাঠীকে নিয়ে খেলছিল শিশু রাকিব(৩) । সে ওই এলাকার শহিদুল ইসলামের পুত্র। খেলার সময় তারা অটোরিকশায় উঠে চাবি দেখে তা দিয়ে অটো স্টার্ট করে চালানোর চেষ্টা করলে অটোরিকশাটি এলোমেলোভাবে চলতে শুরু করে। এসময় সেটি কিছু দূর গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে রাকিবসহ সহপাঠীরা ছিটকে নিচে পড়ে গেলে অটোরিকশার চাপায় ঘটনাস্থলেই রাকিবের মৃত্যু হয়। ঘটনাটির তদন্তে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে জানা যায় শিশুটির বাবা শহিদুল ইসলাম সিরাজগঞ্জে থাকায় এই ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাগেশ্বরী সদর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র মন্ডল দুটি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,যেহেতু একটা বিষয় সেখানেই মীমাংসিত এবং থানায় শিশুটির পরিবার কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি । অন্য শিশু রাকিবের বাবা টাঙ্গাইলে থাকেন, সেখান থেকে আসলে পরিবারের সাথে আলোচনা করে যে সিদ্ধান্ত নিবে তার উপর ভিত্তি করে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।