ইউনিয়ন পরিষদের পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ১৬ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এর মধ্যে সর্বনিম্ন ৪২ ভোট পেয়েছেন ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর ফলসী ইউনিয়নের নিমাইচাঁদ মণ্ডল। তিনি তিনটি কেন্দ্রে একটি করে ভোট পান।
তথ্য ও বিশ্লেষণ করে আওয়ামী লীগদলীয় নৌকা প্রতীকের ১৬ প্রার্থীর জামানত হারানোর তথ্য পাওয়া গেছে।
ফলসী ইউনিয়নে মোট ভোটার ১০ হাজার ৪২৬। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে আট হাজার ৪৪৪। এর মধ্যে চার হাজারের বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বজলুর রহমান। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চার হাজারের কাছাকাছি ভোট পান।
ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর জামানতের পরিমাণ পাঁচ হাজার টাকা। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুকূলে ট্রেজারি চালান অথবা কোনো তফসিলি ব্যাংকের পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে এই টাকা জমা দিতে হয়। প্রার্থী সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে প্রদত্ত ভোটের অষ্টমাংশ অর্থাৎ আট ভাগের এক ভাগেরও কম পেলে তাঁর ওই জামানত বাতিল হয়ে যায়। তখন ওই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা হয়। নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাঁরা থাকেন, তাঁদের এই জামানত বাতিল হয় না।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, পঞ্চম ধাপের নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল অনুসারে এবার নৌকা প্রতীকের বেশ কিছু প্রার্থী মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকতে পারেননি। অর্ধেকের বেশি ইউপিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা হেরে গেছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, এ ধাপের ৭০৭টি ইউপির মধ্যে বেসরকারি ফল ঘোষণা হয়েছে—এমন ৬৯২টি ইউপির মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জিতেছেন ৩৪১টিতে। তবে কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও শিবচরের ৪৭টি ইউপিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহ এড়াতে কোনো প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক দেয়নি। ফলে এসব ইউপিতে জয়-পরাজয়ের কৃতিত্ব বা দায় দলের ওপর বর্তায়নি।
১৬ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন/
প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন অনুসারে, ঝিনাইদহের নিমাইচাঁদ মণ্ডল ছাড়াও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের মধ্যে নীলফামারীর ডোমারের ভোগডাবুড়ী ইউপির হাফিজুর রহমান (৫৪২), কেতকীবাড়ী ইউপির রবিউল ইসলাম স্বাধীন (১৮৮),
গাইবান্ধার সাঘাটার মুক্তিনগরে আরশাদ আজিজ (এক হাজার ২০০), ফুলছড়ির উদাখালীতে আসাদুজ্জামান বাদশা (৪৪০), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের নারায়ণপুরে শহিদুল ইসলাম (২৭৮), কুষ্টিয়া সদরের বটতৈল ইউপিতে মোমিন মণ্ডল (১১৪), আলমপুরে আব্দুল হান্নান (১৭৭), হাটশ-হরিপুরে সম্পা মাহমুদ (২৩২), পাবনার ফরিদপুরের বি-নগরে আজাহার আলী সরকার (৭৬৭), টাঙ্গাইলের বাসাইলে কাঞ্চনপুর ইউপিতে রাকিব খান শহীদ (৮৫১), সাভারের কাউন্দিয়ায় মেশের আলী (৮৫৮), নরসিংদীর শিবপুরের বাঘাবতে মোহাম্মদ জহিরুল হক (এক হাজার ৩৪৮), বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার চামরুল ইউপিতে আজম হোসেন (এক হাজার ৮৭৯), হবিগঞ্জের মাধবপুরের নোয়াপাড়ায় মোজাহিদ বিন ইসলাম (এক হাজার ২৫৪) এবং বাঘাসুরা ইউপির এখলাস মিয়া (এক হাজার ৮৬৯) ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।