কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়া এবং সেটিকে কেন্দ্র করে সহিংসতার জের ধরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বেশ কয়েকটি মন্দিরে হামলা ও পুলিশের সাথে হামলাকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার রাতের সেই সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালেই তিনজন নিহত এবং দুজন গুরুতর আহত হবার কথা জানিয়েছিল পুলিশ। পরবর্তীতে আহতদের একজন হাসপাতালে মারা যান।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর মন্দির ভাংচুর ও আক্রমণ করার মতো ঘটনা ঘটে।
হাজীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মোমেনা আক্তার জানিয়েছেন, নিহতরা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে তারা পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন কিনা সেটি তিনি নিশ্চিত করেননি।
ঘটনার পর বুধবার রাত থেকে হাজীগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এর মধ্যে হাজীগঞ্জ পুজা মন্দির পাহারা দিতে এসে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট চাঁদপুর জেলা শাখার সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক সাহা নিহত হয়েছে। হামলাকারীরা ইটপাটকেলে সাতবছরের এজ শিশু মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি শিবু চন্দ্র দাস দৈনিক বাংলার অধিকার কে জানিয়েছেন আমরা এঘঠনা কখনোই আশা করিনি চাঁদপুরের মতো একটি জেলাতে আমি আশাবাদী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দূষিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট কেীন্দ্রয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পাদক সাগর চন্দ্র স্বপন।
রামপুর হিন্দুদের উপর হামলাকারীরা ইটপাটকেল ছুঁড়ে ও পূজা মন্দির গুলোর পতিমা ভাংচুরসহ বাড়ী ঘরে হামলার চেষ্টা রামপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাঁধা দিতে আহত হন। এদিকে ১নং রাজারগাঁও উওর ইউনিয়নের মুকুদসর গ্রামের পুজা মন্দির ভাংচুর করা হয়েছে
এছাড়া বুধবার রাতেই নোয়াখালীর হাতিয়া এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে মিছিল নিয়ে মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়া নিয়ে শহরে উত্তেজনা, মণ্ডপে হামলা
শারদীয় দুর্গাপূজার তারিখ নির্ধারিত হয় যেভাবে
বাংলাদেশ হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন দৈনিক বাংলার অধিকার কে জানান , পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
এর আগে বুধবার দিনের বেলা কুমিল্লার বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপে হামলা হয়।
ওই হামলার বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পূজামণ্ডপে কোরআন রাখার তথ্য তারা পেয়েছিলেন জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ এর মাধ্যমে এবং এ ঘটনার জের ধরে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে শহরে।
মিস্টার হাসান বলেন, ঘটনার পর আর কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য দিয়ে উস্কানি দেয়া হচ্ছে।
“আর কোথাও কোন হামলা বা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে ভুল তথ্য দিচ্ছেন। পরিস্থিতি এখন শান্তিপূর্ণ,” বিবিসি বাংলাকে বুধবার বিকেলে বলছিলেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনায় শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে এর আগে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আর পুলিশ বলছে, তারা সন্দেহভাজন অন্তত দশ জনকে আটক করেছে।
কুমিল্লা শহরের চিত্র।