|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
আলুর দর কমে যাওয়ায় লোকসানে কচুয়ার কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা -দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১১ অক্টোবর, ২০২১
হঠাৎ করে আলুর দর কমে যাওয়ায় লোকসানে চাঁদপুরের কচুয়ার কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা। বেশির ভাগ আলু অবিক্রিত থাকায় হিমাগার ভাড়া ও ঋনের ভার বাড়ছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। গত বছরে ব্যাপক লাভ হওয়ায় আলু মজুদ করেছিলেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। কচুয়ায় ৩টি হিমাগারে ৩লক্ষ ৯১ হাজার বস্তা মজুদ করা হয়েছে। তন্মেধ্যে ১লক্ষ ৩৫ হাজার বস্তা বাজারে আলু সরবরাহ করা হলেও মজুদ পড়ে আছে ২ লক্ষ ৫৬ হাজার বস্তা। বিক্রির মৌসুম শেষ হতে আর মাত্র দুই মাসের মতো বাকি। অথচ এ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৩০ শতাংশ আলু।
হিমাগার ভাড়াসহ প্রতি বস্তায় খরচ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এ মন্দা অবস্থা কাটাতে সরকারি উদ্যোগে আলু রফতানি এবং টিসিবি টিআর কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে বিক্রির দাবি কৃষক ও ব্যবসায়ীদের।
আলু চাষে কচুয়ার বিভিন্ন মাঠ উর্বর হওয়ায় আলুর ফলন ভালো হয়ে থাকে। গত কয়েক বছর আলুর ফলন ভালো হওয়ায় এবারো কচুয়ার ৩টি হিামাগারে অধিক লাভের স্বপ্ন নিয়ে আলু সংরক্ষন করেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বিশ^ব্যাপী করোনার থাবায় ও অন্যান্য কারনে কচুয়ায় এবার লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
কৃষক সাদেক আলী মিয়া,বিল্লাল হোসেনসহ একাধিক কৃষক জানান, গত বছর আলুর বাজার ভালো থাকায় এবছরে হিমাগারে আলু মজুদ করেছি। একদিকে হিমাগার দ্বিগুন ভাড়া অন্যদিকে আলুর দাম না থাকায় বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
আলু ব্যবসায়ী মোস্তাফা কামাল,আলমগীর হোসেন,বিল্লাল হোসেন সহ অনেক ব্যবসায়ী জানান,মোকামে চাহিদা কম থাকায় আলী বিক্রি করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে করোনায় বিভিন্ন খাবার রেস্তোরা,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আলুর চাহিদা দিনদিন কমে যাচ্ছে। তারা আরো বলেন, প্রতি কেজি আলু ১৮-২০ টাকা দরে হিমাগারে সংরক্ষন করেছি। বর্তমানে ৯-১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। তাও আবার গ্রাহক নেই। ফলে লক্ষ লক্ষ টাকার পুজিঁ হারিয়ে মাঠে বসার উপক্রম দেখা দিয়েছে।
মনার্ক কোল্ড স্টোরেজ লি. এর ব্যবস্থাপক কাজী মিজানুর রহমান বলেন, করোনার কারনে হিমাগারের থাকা আলুর ন্যায্য দাম নিয়ে বিপাকে রয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা । এদিকে হিমাগারের আওতায় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের আনুপাতিক হারে ঋন দেয়া হলেও ঋনের টাকা আদায় নিয়ে হিসসিমে আছি। হিমাগারে ২লক্ষ ৯৫ হাজার বস্তার মধ্যে এখনো ২লক্ষ বস্তা পড়ে আছে । বর্তমান করোনা অবস্থার কারনে আলু সরবরাহ হচ্ছে না।
একই কথা জানান গুলাবাহার হিমাগারের ব্যবস্থাপক জিএম জামাল হোসেন, তিনি বলেন ৯৬ হাজার বস্তার মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার বস্তা আলু হিমাগারে পড়ে আছে।
কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সোফায়েল হোসেন বলেন, গত বছর আলুর ফলন ভালো ও দাম ভালো ছিল। চলতি মৌসুমে ৩টি হিমাগারে ২০ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষিত করা হয়। আলুর দাম বাড়ানো হলে কৃষকরা লাভবান হবে। করোনার লকডাউনের কারনে হিমাগারের আলু বিক্রি কম হওয়ায় দাম কমেছে। তাছাড়া প্রতি কেজি আলু ৬-৭ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলেও জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
ছবি: কচুয়ার গুলবাহার হিমাগারে পড়ে আছে সংরক্ষিত আলু ।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.