তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম ও বগুড়া পাড়ার হাজার হাজার মানুষ। চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার কাচাপাকা বসত বাড়ী তিস্তার আগ্রাসী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। পাচটি মসজিদ সহ বগুড়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তিস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।তিস্তার তীর হতে ৫০মিটার দূরে চর গতিয়াসাম কমিউনিটি ক্লিনিক ও ১৫০মিটার দূরে গতিয়াসাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকির মুখে রয়েছে।ভাঙনে দিশেহারা এলাকাবাসী কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পায়নি।অবশেষে এলাকাবাসী নিজস্ব অর্থ দিয়ে তিস্তার ভাঙন প্রতিরোধ করতে বাশ ও গাছ দিয়ে বান্ডাল নির্মাণ করছেন। এলাকাবাসীর উদ্যোগে গত দশ দিনে হাড়িচাদা করে অর্থ সংগ্রহ করে ইতিমধ্যে পাচটি বান্ডাল নির্মাণ করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী ছাড়া আমাদের খোজ খবর নিতে কুড়িগ্রামের কোন জনপ্রতিনিধি ও সরকারের দায়িত্বশীল কেউয়ে আসেনি। ভুক্তভোগী সাবেক চেয়ারম্যান মোন্নাফ সরকারের ছেলে মন্তাজ উদ্দিন বলেন, গত তিন মাসে প্রায় তিন হাজার কাচাপাকা বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে, কম করে হলেও ১২শ থেকে ১৫শ একর আবাদি জমি তিস্তা নদীতে গর্ভে চলে গেছে। আমরা কারও কোন সহযোগীতা পাইনি। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী চাদা তুলে বাশ ও গাছ দিয়ে বান্ডাল নির্মাণ করছি। এমদাদুল হক(৬৫)বলেন আমার জীবনদ্দশয় এমন ভাঙন দেখি নাই।সরকারীভাবে নদী ভাঙন প্রতিরোধে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে জিও ব্যাগ চেয়েও পাইনি।অবশেষে নিজেরাই বান্ডাল দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি। স্বেচ্ছাসেবক মমিনুল ইসলাম বলেন তিস্তা নদীর এবারের ভাঙন দুঃস্বপ্নের মত লাগছে। এমন ভাঙন আমি আগে দেখিনি। আমি সরকারের কাছে জোর দাবী জানাই যত দ্রুত সম্ভব জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা হউক। উল্লেখ কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড গত দুমাস আগে বগুড়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রক্ষা করতে কয়েক হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলালেও শেষ রক্ষা হয়নি। বর্তমান বিদ্যালয়ের স্থান টি কিনার থেকে ৫০০মিটার দূরে রয়েছে।
এবিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ডি হাসান মাহমুদ বলেন গত ১৫ই জুলাই তিন কিলোমিটার তিস্তার পূর্ব তীর সংরক্ষনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করি কিন্তু এখনো আবেদন পাশ হয়নি,পাশ হলে কাজ করা হবে।
রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী বলেন, আমি গত বুধবার ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে এসেছি ইতিমধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। আমি তাকে অনুরোধ করেছি তিস্তার ভাঙন প্রতিরোধে যেন স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নেন।