|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
স্কুল খুললেও দেখা হয়নি বান্ধবীদের ক্লাসে- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
স্কুল খুললেও দেখা মিলেনি বান্ধবীদের, ৮ বান্ধবীর সবার বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে। নবম শ্রেণিতে ছাত্রীদের মধ্যে একা হয়ে গেছে নার্গিস আক্তার। গতকাল কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারডোব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তোলা। দেড় বছর পর খুলেছে স্কুল। তাই অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের মতো নার্গিস আক্তারও গতকাল রবিবার স্কুলে আসে। হাসিমুখেই ক্লাসে ঢোকে। কিন্তু মুহূর্তেই তার সেই মুখের হাসি উবে যায়। উল্টো স্বপ্নভঙ্গের ভয় চেপে ধরে। কারণ ক্লাসের ৯ জন মেয়ের মধ্যে আটজনই বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। বাকি আছে শুধু সে।
নার্গিস কুড়িগ্রাম সদরের ধরলা নদীসংলগ্ন চর সারডোবের ‘সারডোব উচ্চ বিদ্যালয়’-এর নবম শ্রেণির ছাত্রী। গতকাল দুপুরে কথা হয় তার সঙ্গে। এ সময় হতাশার সুরে নার্গিস বলে, ‘আমার ক্লাসের নুর বানু, নাজমা, স্বপ্না, মৌসুমী, আশামনি, হেলেনা, চম্পা ও আরফিনার বিয়ে হয়েছে। আমার ইচ্ছা কলেজে পড়ার। জানি না ইচ্ছা পূরণ হবে কি না...।’
স্কুল সূত্রে জানা যায়, নবম শ্রেণির ৩৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন মেয়ে। তাদের মধ্যে আটজনই পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে এ বছর শ্বশুরবাড়ি চলে গেছে। গতকাল ৯ ছাত্র ও এক ছাত্রী উপস্থিত ছিল। একই অবস্থা দশম শ্রেণির। ১৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজন ছাত্রী। কিন্তু জেসমিন ছাড়া সবারই বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে। আরো জানা যায়, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীর সংখ্যা ৭৯ জন। কিন্তু তাদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির একজন, সপ্তম শ্রেণির দুজন, অষ্টম শ্রেণির চারজন, নবম শ্রেণির আটজন ও দশম শ্রেণির তিনজনকে গোপনে বাল্যবিয়ে দিয়েছে পরিবার।
স্কুলটির শিক্ষক ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা পারভীন বলেন, ‘চরের অভিভাবকরা মেয়ে একটু বড় হলেই আপদ মনে করে দ্রুত বিয়ে দেন। অনেক বুঝিয়েও কাজ হচ্ছে না। করোনাকালে ঠিকমতো খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয়নি। এই সুযোগে ব্যাপক হারে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
প্রধান শিক্ষক ফয়জার রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে স্কুল বন্ধ ছিল। ছাত্রদের অনেকেই কাজের সন্ধানে দেশের বিভিন্ন স্থানে গেছে। আর ছাত্রীদের অনেকেই বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার সময় বিষয়টি নজরে আসে। (গতকাল) রবিবার স্কুলের প্রথম দিনে ২২৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬০ জন উপস্থিত ছিল।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুল আলম বলেন, ‘করোনাকালে কত শতাংশ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.