রাজারহাট উপজেলার দলিল নিবন্ধন সমিতির পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনের ঘটনা ঘটেছে।অনুসন্ধানে জানা যায় গত ১লা জানুয়ারী ২০২১ রাজারহাট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখকরা আনুষ্ঠানিক ভাবে কমিটি গঠন করেন।রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী কে প্রধান উপদেষ্টা করে আব্দুল হামিদ কে সভাপতি ও এরশাদুল ইসলাম কে সাধারণ সম্পাদক এবং নুরুল ইসলাম লালু কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।কমিটির কার্যকাল তিন বৎসর করা হলেও ৯ মাস যেতে না যেতেই অন্য একটি কমিটি করা হয়।স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির অনুসারীদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়িত্বশীল নেতা।
তিনি আরও বলেন সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের অনৈতিক দাবী না মানায় ও প্রতিবাদ করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে দলিল লেখক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক কে শোকজ করেন এবং অফিস সহকারী আয়শা সিদ্দিকা কে বাদী করে প্রতিহিংসার বশবতী হয়ে রাজারহাট থানায় নুরুল হক লালু কে অভিযুক্ত করে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে সাধারণ ডায়েরি করেন।এরই প্রতিবাদে গত ২৩শে জুন বুধবার দলিল লেখক সমিতি একদিন কলম বিরতি পালন করেন এবং সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী কে সাব- রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন।এতে সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীব ক্ষিপ্ত হয়ে চিহ্নিত জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত লোকদের দিয়ে ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ২১সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে দেন।যদিও সেদিন তিনি অফিসে ছিলেন না তথাপিও তার পূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন তার আজ্ঞাবহ নতুন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা জামায়াত নেতা মুহাম্মদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জামায়াতের মদদপুষ্ট মুহাম্মদ আব্দুর রফিক।সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের ভয়ে সাধারণ দলিল লেখকরা মুখ খোলার সাহস পাননা।তার আজ্ঞাবহ লোকজন দিয়ে যখন যা নির্দেশ দেন তা পালন করতে হয় অন্যান্য সাধারণ দলিল লেখকদের।কেউ তার হুকুম না মানলে দলিল লেখকের লাইসেন্স বাতিল সহ মামলায় ফাসানোর হুমকি দেন তার লোকজন।নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক বলেন সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের ভয়ে আমরা কিছু বলতে পারিনা।তিনি ঘুষ বানিজ্যের জন্য আগের কমিটি বাদ দিয়ে তার পছন্দের কিছু লোক দিয়ে নতুন কমিটি করেছেন।যে কমিটিতে চিহ্নিত জামায়াতে রাজনীতি করা ও হত্যা ও ধর্ষণ মামলার আসামি রয়েছে।এহেন ন্যাক্কারজনক কাজের প্রতিবাদ করার সাহস আমাদের নেই কারণ সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের হাত অনেক লম্বা।
এবিষয়ে নব নির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আগের কমিটির একটু তো সমস্যা ছিলো তাই প্রধান উপদেষ্টারা মিলে পরামর্শ করে নতুন কমিটি করা হয়েছে।সাংবাদিকের এক প্রশ্নে জামায়াতে রাজনীতি সঙ্গে জড়িত এবং হত্যা মামলা ও ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেদক কে অফিসে এসে বসে আলোচনার কথা বলে ফোন কেটে দেন।
এবিষয়ে রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী বলেন সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীব একজন উগ্র প্রকৃতির মানুষ।এনি রাজারহাটে আসার পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ শুনতে শুনতে আমি বিরক্ত হয়ে গেছি।দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকে আমাকে তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন। আমি রায়হান হাবীব কে ঘুষ ও অনিয়ম না করতে সতর্ক করি কিন্তু তাতে উল্টো আমার উপর নাখোশ হয়ে তিনি নাকি অন্য একটি কমিটি করে দিয়েছেন লোকমুখে শুনেছি।