|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
কচুয়ায় মৎস্য রেনু চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন তাপস সরকার- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ৩১ আগস্ট, ২০২১
১৫ বছর ধরে মৎস্য চাষের মাধ্যমে রেনু উৎপাদন করছেন চাঁদপুরের কচুয়ার নাহারা গ্রামের তাপস চন্দ্র সরকার। শুরুতে দেড় লক্ষ টাকার পূঁিজ নিয়ে দুটি বর্গা পুকুরের মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু করে এখন প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার মতো বিভিন্ন রেনুর নার্সিং প্রকল্প রয়েছে। বর্তমানে তাপস চন্দ্র সরকার প্রায় ৩০টি পুকুরে মাছ চাষ ও রেনু উৎপাদের মাধ্যমে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন। ভবিষ্যতে অন্যের জমিতে নয়, নিজের জমিতে পুকুর করে বৃহৎ আকারে মৎস্য হ্যাচারী করতে চায়।
সরেজমিনে জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা নাহারা গ্রামে ২০০৬ সালে বাবার মৎস্য হ্যাচারী প্রকল্পে দায়িত্ব শুরু করেন তাপস চন্দ্র সরকার। তার বাবা চিত্তরঞ্জন সরকার বিগত ৪০ বছর ধরে এ এলাকায় রেনু চাষ ও পোনা উৎপাদন করে ব্যবসা পরিচালনা করেন। চিত্তরঞ্জনের বয়স বেড়ে যাওয়ায় তার বাবার ব্যবসার কাজে হাল ধরেন ছেলে তাপস চন্দ্র সরকার।
তাপস চন্দ্র সরকার বলেন, এটা আমার বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা। বাবার হাত ধরে আমি এ ব্যবসায় সফলতার স্বপ্ন দেখছি। বর্তমানে আমার প্রায় ৩০টি পুকুর রয়েছে। প্রতিটি পুকুর এলাকার মহাজনদের কাছ থেকে সন মেয়াদে পুকুর নিয়ে মাছের রেনু উৎপাদন করে বিভিন্ন স্থানে পাইকার ও খুচরা খামারীদের কাছে বিক্রি করছি। পুকুর নিজের না হওয়ায় এবং বিভিন্ন ভাবে এনজিও সংস্থা থেকে ঋন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করায় ভালো ভাবে পোষাতে পারিনি। ভবিষ্যতে সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমিষের ঘাটতি পূরনে বৃহৎ আকারের মৎস্য হ্যাচারী প্রকল্প করতে চাই।
তাপস চন্দ্র সরকারের বাবা চিত্তরঞ্জন সরকার বলেন, এ এলাকায় একমাত্র আমরাই মৎস্য উৎপাদনের সাথে জড়িত রয়েছি। বিগত দিনে এ পেশায় জড়িত থাকায় প্রশাসন ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশিক্ষন গ্রহন ও পুরস্কার পেয়েছি। বয়সের কারনে এখন আর এ পেশায় কাজ করতে পারিনি। তবে ছেলের সফলতা দেখে ভালো লাগে। আমার ছেলের মৎস্য প্রকল্পের প্রায় ১৫/২০জন শ্রমিক রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা কর্মসংস্থান সুযোগ পাচ্ছে।
নবাবপুর থেকে আসা খামারী প্রফেসর মাহবুব এলাহী বলেন, আমার নিজ এলাকার পাশে নাহারা গ্রামে তাপস চন্দ্র সরকারের মৎস্য খামারে গুনগত ও ভালো মানের রেনু থাকায় আমি বেশ কয়েকবার তার কাছ থেকে বিভিন্ন দেশীয় ও কার্পজাতীয় পোনা ক্রয় করি।
এদিকে তাপস চন্দ্র সরকার কচুয়া উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলীয় দায়িত্ব গ্রহনের পাশাপাশি আমিষের চাহিদা মেটাতে করেছেন মৎস্য চাষ। বর্তমানে তিনি এলাকার বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন। মৎস্য খামারের পাশাপাশি পুকর পাড়ে নানান জাতের সবজি,ফল ও গাছের চারা রোপন করেছেন। তাতে সবজি কিংবা ফলের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তার এমন উদ্যোগ ও সফলতার গল্প যেন অবিস্মরনীয়।
এদিকে তাপস চন্দ্র সরকারের মৎস্য খামারের রেনু ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। রেনু পোনা মাছের গুনগত ভালো থাকায় প্রতিদিন ৮/৯জন ক্রেতা ও খামারীরা আসছেন পোনা কিনতে।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাসুদুল হাছান জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে।কোনো মৎস্য খামারী ঋন নিতে চাইলে ব্যাংকের মাধ্যমে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে। যারা বেকার যুবক রয়েছেন তারা বেকার না থেকে মৎস্য অফিসের পরামর্শ নিয়ে নিজেরাও বেকারত্ব দূরীকরন ও পাশাপাশি আমিষের চাহিদা মেটাতে নিজেরাও আত্মকর্মসংস্থান হওয়া করা সম্ভব ।
কচুয়া: কচুয়ার নাহারা গ্রামে সফল মৎস্য রেনু খামারী তাপস চন্দ্র সরকার।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.