আজ সোমবার (৩০ আগস্ট), শুভ জন্মাষ্টমী। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি।
ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে দুষ্টের দমন শিষ্টের শিষ্টের পালন এবং ধর্ম রক্ষার লক্ষ্যে মহাবতার ভগবান রূপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সেই উপলক্ষ্যে প্রতিবছর শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথিতে পালন করা হয় জন্মাষ্টমী।
প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমি তিথিতে মহাবতার শ্রীকৃষ্ণ ধরাধামে আবির্ভূত হন। অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় সাধুজনের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কংশের কারাগারে জন্ম নেন তিনি। শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনে তিনি ব্রতী ছিলেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ তাই ভগবানের আসনে অধিষ্ঠিত। তিনি সত্য পথে অগ্রসর হতেন।
ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার হয়ে শ্রীকৃষ্ণ জন্ম নিয়েছিলেন মাতা দেবকীর গর্ভে। তাই, হিন্দু-ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে এইদিন গোপাল পুজোর আয়োজন করা হয়।
এদিকে দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান এবার মন্দিরাঙ্গনে সীমাবদ্ধ থাকবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী কোথাও জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা, মিছিল ও সমাবেশ হবে না।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির প্রাঙ্গণে কৃষ্ণপূজাসহ অন্য আচার-বিধি পালন করা হবে। সারাদেশে বিভিন্ন মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে গীতাযজ্ঞ, কীর্তন, আরতি, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনাসভা।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। পৃথক বাণীতে হিন্দু সম্প্রদায়সহ দেশবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এদিন বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলো বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করবে।
মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী উৎসবে সোমবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৮টায় গীতাযজ্ঞ, দুপুর ২টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা, আড়াইটায় আলোচনাসভা এবং রাতে কৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি এবং ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
এ ছাড়া রাজধানীর রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম, রাজারবাগের বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দির, স্বামী ভোলানন্দ গিরি আশ্রম, প্রভু জগদ্বন্ধু মহাপ্রকাশ মঠ, ঠাঁটারীবাজার শিবমন্দির, রাধামাধব জিও দেব বিগ্রহ মন্দির, রাধাগোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দির, শিব মন্দির, রামসীতা মন্দির, মাধব গৌড়ীয় মঠসহ বিভিন্ন মন্দির, পূজামণ্ডপ ও ধর্মীয় সংগঠন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে।