|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
দৃষ্টিশক্তিহীন বৃদ্ধা আমেনা খাতুন সহ মানসিক ভারসাম্যহীন পায়ে শিকল বাঁধা দায়িত্ব নিলেন এমপি শিবলী সাদিক- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৭ মে, ২০২১
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার শিংড়া ইউপির সাতপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের স্ত্রী আমেনা খাতুন (৭৬)। বৃদ্ধা আমেনা খাতুন বয়সের ভারে দীর্ঘদিন আগে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। বৃদ্ধার এক ছেলে লুৎফর রহমান (৪৭) মানসিক ভারসাম্যহীন। সেই কারণে দুই পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয়।
শিকলে আবদ্ধ ছেলেকে নিয়ে অনাহারে জীবন কাটছিল দৃষ্টিহীন আমেনা বেগমের। অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন স্থানীয় এক ব্যক্তি।স্পর্শকাতর ভিডিওটি নজরে আসে স্থানীয় এমপি শিবলী সাদিকের। সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিহীন বৃদ্ধা আমেনা এবং তার মানসিক ভারসাম্যহীন সন্তানের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীকে বৃদ্ধার বাড়িতে পাঠান ও তাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এমপি শিবলী সাদিকের নির্দেশে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন এবং স্থানীয় সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার ছাপ্পু দৃষ্টিহীন বৃদ্ধা আমেনার বাড়িতে হাজির হয়ে এমপির পক্ষ থেকে বস্তাভর্তি চাল, ডাল, তেল ও মসলাসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী এবং মা-ছেলের পরিধানের জন্য বেশ কয়েকটি পোশাক প্রদান করেছেন। এছাড়াও বৃদ্ধা আমেনার হাতে নগদ অর্থ তুলে দেয় প্রতিনিধি দল।পাশাপশি ওই বৃদ্ধা এবং তার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন পরিবারটির সমস্ত দায়ভার সাংসদ শিবলী সাদিক বহন করবেন বলে আশ্বস্ত করেন ওসি আজিম উদ্দিন।
কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে দৃষ্টিহীন বৃদ্ধা আমেনা খাতুন বলেন, হামি অন্ধ। বেটাটাও পাগল। বেটাক শিকলে বান্দে থুছি। যাতে করে ওই হারা (হারিয়ে) না যায়। তবুও ছেলেটি বারা (বাহিরে) যায়। নিজ হাতে খোঁচা দিয়ে বেটাটার এক চোখ নষ্ট করে দিছু, যাতে বাড়ির বাহিরে যাবার না পারে। খেয়ে না খেয়ে মানুষের বাড়িত থাকা হামা হরে দিন যায়। হামার হরেও এমপি খাবার, কাপড়-চোপড় দিয়া পাঠাছে। আল্লাহ ওমাক যুগ যুগ বাঁচা থুক। বাড়ির ধারের চেয়ারম্যান-মেম্বর খোঁজ নেয়নি কিন্তু এমপি হামার খোঁজ নিছে।
দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সংদস্য শিবলী সাদিক বলেন, ভিডিওটি আমার নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি ওই বৃদ্ধার বাড়িতে লোক পাঠিয়েছি তার খোঁজ নেওয়ার জন্য। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন ওই পরিবারটির সমস্ত ব্যয়ভার আমি বহন করব। তাদের পুরো দায়িত্ব আমি আমার নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছি। আমার প্রতিনিধিরা মাসে দুইবার করে পরিবারটির খোঁজখবর নিবে এবং সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে।
এমপি আরও বলেন, ওই বৃদ্ধা মা এবং তার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের থাকার জায়গা নেই। তারা বারান্দাতে টিনের একটি চালার নিচে বসবাস করেন। আমি তাকে ঘর করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যকওিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.