রমজান মাস, চলছে গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরম। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল-২০২১) গিয়েছিলাম যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের হানুয়ার বটতলা মোড়ের মুক্তি মুড়ির কারখানায়। সেখানে দেখলাম, কয়েকজন শ্রমিক মুড়ি তৈরির কাজ করছে। দু’জন কারিগর কড়াইতে করে গরম বালুর মধ্যে চাল দিয়ে মুড়ি ভাজায় ব্যস্ত।
কেই প্যাকেট ভরে ওজন দিচ্ছে, আবার কেউ ওজন দেওয়া মুড়ির প্যাকেটগুলো বস্তায় ভরছেন। এভাবেই ব্যস্তার মধ্যে চলছে রাজগঞ্জের হানুয়ার বটতলা মোড়ের মুক্তি মুড়ি কারখানার কাজ। এরই মধ্যে যতটুকু জানলাম—রমজান মাস উপলক্ষ্যে ব্যস্ততা বেড়েছে রাজগঞ্জের মুক্তি মুড়ি কারখানার শ্রমিকদের। এই মুক্তি মুড়ি স্থানীয় হাট-বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বাইরের কয়েকটি জেলা-উপজেলাও যাচ্ছে।
রাজগঞ্জে একটি মাত্র মুড়ির কারখানা রয়েছে। এ মিলে আধুনিক প্রযুক্তিতে হাতে ভাজা হয় মুড়ি। এজন্য হাট-বাজারে এ মুড়ির চাহিদাও বেশি। দামেও রয়েছে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। এ মুড়ির এক নামে ক্রেতারা বলেন- হানুয়ারের হাতে ভাজা মুড়ি। মুড়ি তৈরির কারিগর মো. আবু হুরাইরা ও মো. লিটন হোসেন জানান, তাদের কারখানায় শুধু চাল আর লবণ দিয়ে হাতে ভাজা হয় মুড়ি। এখানে কোনো প্রকার রাসায়নিক ব্যবহার হয় না। তাই স্থানীয় বাজারসহ এ মুড়ি দিন দিন মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
রাজগঞ্জ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী সুব্রত দত্ত জানান- হানুয়ারের হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা, অন্য মুড়ির থেকে বেশি। আর এখন রমজান মাস এ মুড়ি বিক্রি হয় বেশি। আমি যতটুকু জানি সেখানে চালে শুধু লবণ মিশিয়ে মুড়ি উৎপাদন করা হয়, তাই খেতেও সু-স্বাদু। মুক্তি মুড়ির কারখানার মালিক পক্ষের প্রতিনিধি মো. মফিজুর রহমান জানান- এখন চালের দাম, শ্রমিকের মুজুরি বেড়েগেছে। যে কারণে উৎপাদন খরচও বেড়েগেছে। তবে আমরা মুড়ির দাম বাড়ায়নি। আগের দামেই বাজারে মুড়ি বিক্রি করতেছি।
মুক্তি মুড়ির কারখানার মালিক পক্ষের আরেক প্রতিনিধি মাস্টার মো. আশরাফুজ্জানমান দৈনিক বাংলার অধিকার কে জানান- অনেক অসাধু ব্যবসায়ী অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মুড়ি ভাজে এবং বাজারজাত করে। আমরা আধুনিক প্রযুক্তিতে কড়াইতে করে মুড়ি ভাজি, এজন্য বাজারে আমাদের মুড়ির চাহিদা বেশি। আর এতে আমাদের খরচও বেশি হয়। স্থানীয় রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন চক্রবর্তী, মো. আশরাফুজ্জামান, মো. লিটন মিয়া, মো. লিয়াকত আলী বলেন- রাজগঞ্জে এই প্রথম হানুয়ার মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন যুবক মিলে একটি মুড়ির কারখানা গড়ে তোলেন। এই মুড়ির কারখানার নাম দেওয়া হয় মুক্তি মুড়ি কারখানা। এখানে আধুনিক প্রযুক্তিতে হাতের সাহায্যে কড়াইতে মুড়ি উৎপাদন করা হয়। এজন্য এ মুড়ি মানসম্মত।