আকাশ সরকার,রাজশাহী ব্যুরো:
ফলোআপ
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম ও দুর্গাপুর থানার ওসি খুরশীদা বানু কনা কে বদলি করা হয়েছে। ওসি খাইরুল ইসলাম গোদাগাড়ী থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় পাঁচজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে একজন মাদক বহনকারীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন অবস্থায় ওসি খাইরুলের বদলির আদেশ হলো।
রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন মঙ্গলবার ওসি খাইরুল ইসলামের বদলির আদেশে স্বাক্ষর করেন। তাকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। আর খলিলুর রহমান নামে একজন পুলিশ পরিদর্শককে গোদাগাড়ী থানার ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। বুধবার তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
অপরদিকে দুর্গাপুর থানার ওসি খুরশীদা বানু কনাকে রাজশাহী পুলিশ অফিসে যোগদান করতে বলা হয়েছে। উল্লেখ থাকে যে ওসি খুরশীদা বানু কনা দুর্গাপুর থানায় থাকা কালিন সময়ে মাদক সহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে জোর ভুমিকা রেখেছিলেন। থানার ছোট খাট অভিযোগ তিনি থানাতেই মিমাংসা করে সাধারন মানুষের মাঝে অতি প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।
ওসি খলিলুর রহমান এর আগে কিশোরগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি রাজশাহী বদলি হয়ে আসেন। এরপর জেলা পুলিশেই সংযুক্ত ছিলেন। এরই মধ্যে তাকে রাজশাহীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই থানায় পাঠানো হলো। এ থানায় ওসি খাইরুল যোগ দিয়েছিলেন এক বছর আগে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম তার বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার ওসি খাইরুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে। বুধবার তিনি নতুন ওসিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন।দুই একদিনের মধ্যেই দুর্গাপুর থানায় নতুন ওসি হিসেবে যোগ দিবেন পুঠিয়া থানার ওসি তদন্ত হাসমত আলি।
প্রসঙ্গত, রফিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক ব্যক্তির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে পুলিশের পাঁচজন সদস্যের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। খুনের অভিযোগ পাঁচজনের মধ্যে তিনজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) এবং দুইজন কনস্টেবল। আট মাস আগে গোদাগাড়ীর পদ্মার চর থেকে রফিকুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় পুলিশের এই পাঁচ সদস্য গোদাগাড়ী থানায় কর্মরত ছিলেন। আর থানার ওসির দায়িত্বে ছিলেন সদ্য বদলি হওয়া পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম।
রফিকুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ইসাহাক আলী ইসা নামের এক মাদক কারবারি সম্প্রতি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, রফিকুল তার হেরোইন আনছিলেন। কিন্তু এই হেরোইনসহ রফিকুলকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশের সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু এই অভিযানে গিয়ে পুলিশের পাঁচজন সদস্য রফিকুলকে হত্যা করেন এবং ৪০০ গ্রাম হেরোইন উধাও করেদেন।
ইসার এমন স্বীকারোক্তির পর পিবিআই আরও গুরুত্ব দিয়ে মামলাটির তদন্ত করছে বলেও জানা গেছে। রাজশাহী জেলা পুলিশের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সেই বিষয়টি আলাদা করে তদন্ত করে দেখছে পুলিশের উপর মহল। তবে পূর্বে এই গোদাগাড়ী থানার ওসি খাইরুলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠে তার পরেও বহাল ছিলেন এই বিতর্কিত ওসি। রাজশাহী জেলার নবাগত পুলিশ সুপার এবি এম মাসুদ হোসেন যোগদান করেই এই ওসির রদবদলের বিষয়টি বাস্তবায়ন করেছেন। ওসি খাইরুল ইসলাম কে গোগাগাড়ী থেকে রদবদল করায় জেলা পুলিশ সুপার কে সাধুবাদ জানিয়েছেন গোদাগাড়ী অঞ্চলের মানুষ।